Ulas Family: চার’পায়ে’ হাঁটে এই পরিবারের চার বোন এক ভাই, হতবাক বিজ্ঞানীরা! দেখুন ভিডিয়ো

Turkey's Ulas family: কোনও আধুনিক পূর্ণ বয়স্ক মানুষ চারপায়ে হাঁটে বললে, প্রাথমিকভাবে বিশ্বাস নাই হতে পারে। কিন্তু, এটাই সত্যি। জন্ম থেকেই চার পায়ে হাঁটে তুরস্কের উলাস পরিবারের চার বোন এবং এক ভাই।

Ulas Family: চার'পায়ে' হাঁটে এই পরিবারের চার বোন এক ভাই, হতবাক বিজ্ঞানীরা! দেখুন ভিডিয়ো
চারপায়ে হাঁটেন তুরস্কের উলাস পরিবারের সদস্যরাImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 30, 2023 | 7:56 PM

ইস্তানবুল: ‘বিবর্তন’ শব্দটি বলতেই একটি অতি পরিচিত ছবি আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে – আজানুলম্বিত ঝুঁকে হাঁটা বনমানুষ থেকে ক্রমে মাথা উঁচু করে দু’পায়ে হেঁটে এগিয়ে চলেছে আধুনিক মানুষ। বস্তুত, এই দুই পায়ে হাঁটাই পৃথিবীর বাকি প্রাণীদের থেকে আলাদা করে দিয়েছে আধুনিক মানুষকে। কাজেই বর্তমান সময়ের কোনও আধুনিক পূর্ণ বয়স্ক মানুষ চারপায়ে হাঁটে বললে, প্রাথমিকভাবে বিশ্বাস নাই হতে পারে। কিন্তু, এটাই সত্যি। জন্ম থেকেই চার পায়ে হাঁটে তুরস্কের উলাস পরিবারের চার বোন এবং এক ভাই। তাদের পরিবারের আরও এক সদস্যও চারপায়ে হাঁটতেন, কিন্তু, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কেন এই পরিবারের সদস্যরা চারপায়ে হাঁটেন? এই প্রশ্ন নিয়ে ধাঁধায় বিজ্ঞানী মহল।

২০০৬ সালের বিবিসি সংস্থার এক তথ্যচিত্রে, তুরস্কের এই অদ্ভুত পরিবারের কথা প্রথম জানা গিয়েছিল। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এক তথ্যচিত্রেও উলাস পরিবারের সদস্যদের এই অস্বাভাবিক আচরণ নথিভুক্ত করা হয়েছে। দুই তথ্যচিত্রেই উলাস পরিবারের সদস্যদের হাতের তালু ব্যবহার করে হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। বানররা যেমন, হাতে ভর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে, সেই রকম নয়। উলাস পরিবারের সদস্যরা, হাত ও পা ব্যবহার করে যে কোনও চতুষ্পদ প্রাণীর মতো করে হাঁটে। ঠিক কেন তারা এইভাবে হাঁটে, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।

বিবর্তনের উল্টো পথে হাঁটছেন উলাস পরিবারের সদস্যরা

গবেষকরা দেখেছেন উলাস পরিবারের চারপায়ে হাঁটা ব্যক্তিদের ‘সেরিবেলামের’ আকার বেশ ছোট। তবে, সেরিবেলামের আকার অনেকেরই ছোট হয়। তাঁদের সকলের মধ্যে চতুষ্পদ প্রাণীদের মতো বৈশিষ্ট্য দেখা যায় না। এছাড়া, লিভারপুল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চারপায়ে হাঁটা এই ব্যক্তিদের কঙ্কালের বৈশিষ্ট্যগুলি সাধারণ মানুষের মতো নয়। বরং, অনেকটাই মিল রয়েছে বনমানুষের কঙ্কালের সঙ্গে। তুরস্কের একদল বিজ্ঞানী তাঁদের গবেষণাপত্রে দাবি করেছিলেন, এই ক্ষেত্রে সম্ভবত বিপরীত-বিবর্তন ঘটেছে। তার জন্যই ৩০ লক্ষ বছরের বিবর্তনের জিনগত পরিবর্তন ঘটেছে।

তবে, তুরস্কের বিজ্ঞানীদের এই তত্ত্ব একেবরেই মানতে নারাজ ‘লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের’ বিবর্তনবাদী মনোবিজ্ঞানী নিকোলাস হামফ্রে। তিনি এই তত্ত্বকে ‘অত্যন্ত অপমানজনক’ এবং ‘বৈজ্ঞানিক দিক থেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভাষা এবং আরও বেশ কিছু বৈশিষ্ট, প্রাণীজগতের অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদা করেছে আধুনিক মানুষকে। তবে, সবথেকে বড় ফারাকটা হল মানুষের দুই পায়ে হাঁটা। উলাস পরিবারের সদস্যরা সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছে। তিনি বলছেন, আধুনিক মানুষ যে ফের চারপায়ে হাঁটার অবস্থায় ফিরে যেতে পারে, তা আমি আশাই করিনি।” তবে, কীভাবে বনমানুষ থেকে আধুনিক মানুষের উদ্ভব হয়েছিল, সেই রহস্যের সমাধানে সহায়ক হতে পারে এই পরিবার। এমনটাই মনে করছে বৈজ্ঞানিক মহল। বনমানুষ এবং আধুনিক মানুষের মধ্যে তারা ‘মিসিং লিঙ্ক’-এর মতো বলে মনে করছেন তাঁরা।

নিকোলাস হামফ্রে বলেছেন, “একটা সময় ছিল, যখন আমরা শিম্পাঞ্জির মতো ঝুঁকে হাঁটতাম না। কিন্তু, গাছ থেকে নেমে এসেছিলাম। তখনও আমরা দুই পায়ে হাঁটতাম না। সম্পূর্ণ দ্বিপদ প্রাণী হয়ে ওঠার মধ্যে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। আমার মতে, মানব বিবর্তনের সেই সময়ের সঙ্গে এই পরিবারের সদস্যদের অত্যন্ত মিল রয়েছে। তাঁদের নিয়ে গবেষণা করে, আমাদের পূর্বপুরুষরা কেন চার পায়ে হাঁটা ছেড়ে দুই পায়ের প্রাণীতে পরিণত হয়েছিল, তা বোঝা যেতে পারে।”