কিয়েভ: সপ্তাহ পার করেও থামেনি যুদ্ধ, বরং পরমাণু হামলা(Nuclear Attack)-র হুঁশিয়ারিও দিতে শুরু করেছে রাশিয়া (Russia)। এই পরিস্থিতিতেই বৃহস্পতিবার ফের একবার মুখোমুখি আলোচনায় বসল ইউক্রেন-রাশিয়া(Ukraine-Russia)। পোলিশ-বেলারুশ সীমান্তে আয়োজিত ওই বৈঠকে ইউক্রেনের তরফে সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য ‘মানবিক করিডোরে’র প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার তরফেও বলা হয়েছে সমঝোতায় যত দেরী করে ইউক্রেন, ততই মস্কোর দাবির তালিকা লম্বা হতে থাকবে। এহেন বিরূপ পরিস্থিতির সমাধানের জন্য সোজাসুজি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন(Vladimir Putin)-র সঙ্গেই কথা বলতে চাইলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি(Volodymyr Zelenskyy)। তাঁর মতো, মুখোমুখি পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসলেই এই সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজে পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার বৈঠকের পরই প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কির দফতরের প্রধান মিখাইল পোডোলিয়াক টুইট করে বলেন, “দ্বিতীয় দফার সমঝোতা বৈঠক শেষ হল। দুঃখজনকভাবে ইউক্রেন যে ফলাফল আশা করেছিল, তা এখনও পাওয়া যায়নি। কেবলমাত্র মানবিক করিডর দখলের শর্তে রাজি হয়েছে রাশিয়া।”
এদিকে, বৈঠকের দিনই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁর সঙ্গে কথা বলেন রুস প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর সঙ্গে কথা বলেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন ম্যাক্রঁ। তাঁর দাবি, “এই হামলা কিছুই নয়, এখনও খারাপ দিন দেখা বাকি। পুতিন গোটা ইউক্রেনকেই দখল করে নিতে চায়।”
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি বলেন, “যদি রাশিয়ার বাহিনীর হাতে ইউক্রেন চলে যায়, তবে বাল্টিক দেশগুলিই পরবর্তী নিশানা হতে পারে। এই যুদ্ধ থামানোর একমাত্র উপায় হল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা।”
জ়েলেনস্কি বলেন, “আমার সঙ্গে সমঝোতার আলোচনায় বসুন, আমি আপনাকে কামড়াব না, আপনার এত ভয় কীসের?”
রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে জানানো হয়েছে, সপ্তাহব্যাপী রাশিয়া ইউক্রেনের উপরে যে হামলা চালাচ্ছে, তাতে ইতিমধ্যেই ২২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনীয়, রাশিয়ান মিলিয়ে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। সামরিক অভিযানে কমপক্ষে ৫০০ সেনারও মৃত্যু হয়েছে। যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেনের তরফে করা ক্ষয়ক্ষতির দাবি রাষ্ট্রসঙ্ঘের তুলনায় অনেকটাই আলাদা।
এদিকে, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরোভ জানিয়েছেন এই আলোচনার মাধ্যমেই ইউক্রেনের সমস্যার কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে। তাঁর দাবি, ক্রেমলিন ইউক্রেন ও ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গেও নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করতে রাজি।
আলোচনা চললেও, ইউক্রেনের বাস্তব চিত্রটা অনেকটাই আলাদা। বুধবারই রাশিয়ৈর তরফে জানানো হয়েছিল, তারা খেরসন দখল করে নিয়েছে। মারিউপোলেও গতকাল ইউক্রেন ও রাশিয়ার সেনার মধ্যে লাগাতার সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। লিভিভে রুশ সেনা যাতে ঢুকতে না পারে, তার জন্য ধাতব জিনিসপত্র দিয়ে প্রধান সড়কগুলি আটকে দেওয়া হয়েছে।