ঘড়িতে ঠিক ১১ টা ৫৯! ২০ বছরের ইতিহাস পিছনে ফেলে উড়ল শেষ বিমান
বায়ুসেনা বিমানে কাবুল ছাড়ল মার্কিন বাহিনী। তবে এখনও রয়ে গিয়েছেন বহু আমেরিকান।
কাবুল: ৯/১১ বদলে দিয়েছিল অনেক কিছুই। জঙ্গিদের নিরাপদ স্বর্গ ভেঙেচুরে দিতে আফগানিস্তানে তালিবানদের সরাতে এসেছিল মার্কিন সেনাবাহিনী। মাঝে ২০ বছরের ইতিহাস। তালিবান ক্ষমতাচ্যূত হয়। সেনাবাহিনীকে হামলার শিকার হতে হয় বহুবার। গত কয়েক বছরে বিপুল অস্ত্র দিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলেছে। অবশেষে সেই ২০ বছরের ইতিহাসকে পিছনে ফেলে কাবুল বিমানবন্দর ছাড়ল আমেরিকার শেষ বিমান। সোমবার অর্থাৎ ৩০ অগস্ট রাত ১২ টা বাজতে যখন ১ মিনিট বাকি, তখন কাবুলের মাটি ছেড়ে উড়ে যায় সেই বিমান। পেন্টাগনের তরফে থেকে ২০ বছরের যুদ্ধের ইতি ঘোষণা করা হল রাতেই।
আজ ৩১ অগস্ট উদ্ধারকাজ শেষ করার ডেডলাইন ছিল মার্কিন সেনার কাছে। সেই মতো পেন্টাগনের তরফে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি ঘোষণা করেন, ‘আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানোর কাজ শেষ হল ও আমেরিকানদের উদ্ধারকাজও শেষ হল।’ যদিও বহু আমেরিকানকে এখনও আফগানিস্তান থেকে ফেরানো যায়নি বলে জানা গিয়েছে।
মার্কিন এয়ার ফোর্সের সি-১৭ গ্লোবমাস্টারে এ দিন বিমানবন্দর ছাড়ে মার্কিন সেনা। বিমানে ছিল সেনাবাহিনীর সদস্যরা, কমান্ডাররা। এ ছাড়া ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রস উইলসন। একসঞব কাউলের যে দূতাবাসে কয়েক’শ কর্মী কাজ করতেন, সেই দূতাবাস সম্পূর্ণ বন্ধ করে আমেরিকায় উড়ে গেলেন তিনি। গত কয়েকদিনে তালিবান কাবুল দখল করার পর থেকেই উদ্ধারকাজ জারি রেখেছিল মার্কিন সেনা। অন্তত ১ লক্ষ ২৩ হাজার মানুষকে উদ্ধার করেছে তারা। গতকাল, রাতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বিমানটি বিমানবন্দর ছাড়ে। কারণ, গত কয়েকদিনের পর পর দু’টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে কাবুল বিমানবন্দরে। একটি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন মার্কিন সেনা।
শুক্রবারই উদ্ধারকার্যে ইতি টেনেছে ফ্রান্স, জার্মানি। শনিবার রাতেই ব্রিটেনের শেষ উদ্ধারকারী বিমানও উড়ান নেয় হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। প্রস্তুতি নিচ্ছে তালিবানও।প্রস্তুতি নিচ্ছে তালিবানও। তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশজুড়ে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও একবার সরকার দখল হয়ে গেলে সমস্ত সমস্যাই দূর হয়ে যাবে।
৩১ অগস্ট উদ্ধারকাজের শেষ দিন হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুধু আমেরিকান নয়, বহু আফগান যারা মার্কিন সেনার জন্য কাজ করেছিল, তাদেরও উদ্ধার করা হয়েছে। জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানান, যারা আফগানিস্তান ছাড়তে চেয়েছিল, তাদের অনেকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে কাবুল বিমানবন্দর ছাড়ার সময় সেখানে আর কেউ বাকি ছিলেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেছেন, জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থাকলেও তালিবান সহযোগিতা করেছে। সূত্রের খবর, কাবুল থেকে ওই শেষ বিমান রওনা হওয়া পর কাবুল জুড়ে বন্দুকের আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে। আরও পড়ুন: তালিবানকে স্বীকৃতি না দিলে দ্বিতীয় ৯/১১-র জন্য তৈরি থাকতে হবে! বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের