Israel Hamas War: কোথায় পালাবে গাজাবাসী? ইজরায়েলের বাতলে দেওয়া ‘নিরাপদ পথে’ই বিস্ফোরণ, দেখুন
রবিবার গাজাবাসীকে পালানোর পথ বাতলে দিল তেল আবিবই। গাজা ভূখণ্ডের ঠিক মাঝখান দিয়ে যাওয়া, এই রাস্তাটিকে তারা 'পাথ টু সেফটি', অর্থাৎ নিরাপদ এলাকায় যাওয়ার পথ বলে জানিয়েছে। তবে, শনিবার ওই রাস্তাতেই প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের একটি কনভয়ে হামলা হয়েছে। কাজেই রাস্তাটি কতটা নিরাপদ, তাই নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
গাজা সিটি: বাঁচতে চাইলে ছাড়তে হবে ঘর-বাড়ি। শুক্রবারই গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছিল ইজরায়েল। ২২ লক্ষ গাজাবাসীর অর্ধেককেই গাজার দক্ষিণাংশে সরে যেতে বলা হয়েছে। রবিবার, এসেছে আরও কঠোর নির্দেশ। সরে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৩ ঘণ্টা। তারপরই স্থলপথে গাজায় অভিযান চালাতে পারে ইজরায়েলি বাহিনী, এমনই আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু, কোথায় পালাবেন গাজাবাসী? উত্তর এবং পূর্ব দিক ঘিরে রেখেছে ইজরায়েল। সীমান্ত পার হওয়ার অনুমতি নেই। বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক ইজরায়েলি বাহিনী, কামান, সাজোঁয়া গাড়ি। নির্দেশ এলেই স্থলপথে হামলা চালাতে তৈরি তারা। দক্ষিণ দিকে রাফাহ সীমান্তও বন্ধ করে রেখেছে মিশর। পূর্বের ভূমধ্য সাগরে এমনিতেই ইজরায়েলি নজরদারি থাকে। এখন আবার যুক্ত হয়েছে দু-দুটি মার্কিন রণতরী। এই অবস্থায়, রবিবার গাজাবাসীকে পালানোর পথ বাতলে দিল তেল আবিবই।
Residents of Gaza City and northern Gaza, in the past days, we’ve urged you to relocate to the southern area for your safety. We want to inform you that the IDF will not carry out any operations along this route from 10 AM to 1 PM. During this window, please take the opportunity… pic.twitter.com/JUkcGOg0yv
— Israel Defense Forces (@IDF) October 15, 2023
এদিন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজার একটি মানচিত্র প্রকাশ করে জানিয়েছে, সালাহ আল-দিন স্ট্রিট নামে রাস্তা দিয়ে দক্ষিণে পালিয়ে যেতে পারে উত্তর গাজার বাসিন্দারা। গাজা ভূখণ্ডের ঠিক মাঝখান দিয়ে যাওয়া, এই রাস্তাটিকে তারা ‘পাথ টু সেফটি’, অর্থাৎ নিরাপদ এলাকায় যাওয়ার পথ বলে জানিয়েছে। তবে, মাত্র ৩ ঘণ্টাই ওই রাস্তা নিরাপদ থাকবে। ইজরায়েলি বাহিনী বলেছে, স্থানীয় সময় রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ওই রাস্তায় কোনও অভিযান চালাবে না তারা। এই যুদ্ধবিরতির সুযোগে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের, দক্ষিণ চলে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু, সত্যিই কি ওই রাস্তা নিরাপদ? প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রবিবারই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি ভয়ঙ্কর ভিডিয়ো ফুটেজ। সেই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ইজরায়েলি বাহিনীর স্থল আক্রমণের ভয়ে গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণে পালাচ্ছে অসামরিক প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের একটি কনভয়। মাঝপথে সেই কনভয়টিতেই বিস্ফোরণ ঘটছে।
“Palestinian channels claim that this is the documentation of the IDF’s attack on the evacuee convoy to the south yesterday.” Credit: Abu Ali Express
The explosion appears to be a roadside bomb. No projectile can be seen in the video. https://t.co/rc3NEXJgaz pic.twitter.com/9AaS5e6yvo
— Aaron Poris (@a_poris) October 14, 2023
ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করা যায়নি। যুদ্ধের বাজারে সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক ভুয়ো ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়ছে। তবে, এই ভিডিয়ো যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। সূত্রের খবর, প্যালেস্টিনীয় নাগরিকদের কনভয়ে হামলাটি হয়েছে সালাহ আল-দিন স্ট্রিটেই। ভিডিয়ো ক্লিপটিতে আরবি ভাষায় লেখা একটি ক্যাপশনও রয়েছে। তার বঙ্গানুবাদ করলে দাঁড়ায়, ‘দখলদার বাহিনী অসামরিক নাগরিকদের দেশত্যাগ করতে বলেছে। তারা যখন অন্যত্র চলে যেতে চাইছে, সেই সময় সরাসরি তাদের নিশানা করা হচ্ছে।’ টিভি নাইন বাংলার পক্ষ থেকে এই বিস্ফোরণের কারণ বা উদ্দেশ্য জানা যায়নি। এই হামলা ইজরায়েল বাহিনী করেছে, না হামাস বাহিনীই গাজাবাসীকে ঘর ছাড়তে বাধা দিচ্ছে, তাও স্পষ্ট নয়।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে কিছু সামরিক বিশ্লেষক দাবি করেছেন, বিস্ফোরণটি সম্ভবত আইইডি দিয়ে ঘটানো হয়েছে। অন্যদিকে, প্যালেস্টিনীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, গাজার প্রধান সড়কে ইজরায়েলি বিমান হামলায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। উত্তর গাজা থেকে নিরাপদে দক্ষিণে যাওয়ার জন্য দুটি রাস্তা খোলা রয়েছে – একটি সালাহ আল-দিন রোড, অন্যটি সালাহ আল-দিনের পশ্চিমে উপকূলীয় হাইওয়ে। এর মধ্যে সালাহ আল-দিন স্ট্রিটই দক্ষিণে যাওয়ার নিরাপদ প্রস্থান পথ বলে জানিয়েছিল ইজরায়েল। বিস্ফোরণ আইইডির মাধ্যমে ঘটুক বা আকাশপথে হামলার ফলে ঘটুক, ইজরায়েল বাহিনী বা হামাস বাহিনী, যারাই এই হামলা করুক না কেন, সালাহ আল-দিন স্ট্রিটও যে গাজাবাসীর জন্য নিরাপদ নয়, তা স্পষ্ট। বৃহস্পতিবারও এই রাস্তায় ‘বিমান হামলার’ জেরে একটি বিস্ফোরণটি ঘটেছিল।