‘কূটনীতিতে ১৫ দিন তো অনেক লম্বা সময়!’ সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে কেন বাদ পড়ল তালিবানের নাম?
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের দেওয়া একটি বিবৃতিতে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার উদাহরণ দিতে গিয়ে নেওয়া হয়েছিল তালিবানের নাম। ১৫ দিনেই সরিয়ে ফেলা হল তালিবান শব্দটি।
নিউ ইয়র্ক: সন্ত্রাসবাদী হামলার উদাহরণ দিতে গিয়ে আগে তালিবানের নাম নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) সেই বিবৃতি থেকে এ বার বাদ পড়ল তালিবানের (Taliban) নাম। কাবুল বিমানবন্দরের (Kabul Airport) কাছে জঙ্গি হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কোনও আফগান সংগঠনের উচিৎ নয় নিজেদের দেশের বা অন্য কোনও দেশের সন্ত্রাসে মদত দেওয়া।’ আর সেখান থেকেই উঠে গিয়েছে তালিবান শব্দটি।
অগস্ট মাসের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্বে রয়েছে ভারত। তাই এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর রয়েছে ভারতেরই (India)। এই বিবৃতি প্রকাশ হয়েছে ২৭ অগস্ট। আর এরআগে ১৬ অগস্ট বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল এই নিরাপত্তা পরিষদের তরফে। সেখানে এই বাক্যেই বলা হয়েছিল ‘তালিবান বা অন্য কোনও আফগান সংগঠনের উচিৎ নয় নিজেদের দেশের বা অন্য কোনও দেশের সন্ত্রাসে মদত দেওয়া।’ তাই বলা যায়, দিন ১৫-র মধ্যে বদলে গিয়েছে বিবৃতি। সেই সূক্ষ কূটনৈতিক পরিবর্তন দেখিয়ে দিয়েছেন একসময় রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা কূটনীতিক সৈয়দ আকবরুদ্দিন।
এই টুইটে এই ফারাক বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি ১৬ অগস্ট ও অগস্টের সেই বিবৃতির ছবিতে লাল দাগ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন ঠিক কোথায় তফাৎ। তিনি লিখেছেন, ‘কূটনীতিতে ১৫ দিন অনেক লম্বা সময়।’
In diplomacy…A fortnight is a long time…The ‘T’ word is gone…?
Compare the marked portions of @UN Security Council statements issued on 16 August & on 27 August… pic.twitter.com/BPZTk23oqX
— Syed Akbaruddin (@AkbaruddinIndia) August 28, 2021
এর আগে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে (S Jaishankar) তালিবানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও সরাসরি কোনও উত্তর দেননি তিনি। ভারত তালিবানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে কি না, সে বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি কয়েকদিন আগে। সেখানে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘এটা খুবই প্রাথমিক সময়। এই মুহূর্তে কাবুলের পরিস্থিতির দিকেই আমরা নজর রাখছি।’ আফগানিস্তানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের বিনিয়োগ রয়েছে। ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের বাণিজ্যিক সম্পর্কও ভালো। কিন্তু তালিবান শাসনে ভারত আফগানিস্তানের সঙ্গে সেই সম্পর্কই বজায় রাখবে কি না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আফগানিস্তানের মানুষের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক জারি থাকবে।’ তবে আপাতত যে ভারতীয়দের নিরাপত্তাই কেন্দ্রের একমাত্র লক্ষ্য, তা স্পষ্ট করে দেন বিদেশমন্ত্রী।
এ দিকে, আফগানিস্তান নিয়ে সম্প্রতি কথা হয়েছে ভারত ও আমেরিকার। আফগানিস্তান নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবে দুই দেশ। রাষ্ট্রপুঞ্জের (UN) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পদক্ষেপ করা হবে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও আমেরিকার মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের মধ্যে আলোচনার পর এক বিবৃতিতে এমনটাই জানানো হয়েছে দুই দেশের তরফে। শনিবার ব্লিঙ্কেন ও জয়শঙ্করের মধ্যে কথা হয়। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল আফগানিস্তান। আরও পড়ুন: ঝুলি থেকে বেরল বিড়াল! ভারতকে পর্যুদস্ত করতে পাকিস্তানের ‘আসল রূপ’ ফাঁস করলেন প্রাক্তন আফগান কূটনীতিক