50th Vijay Diwas: ৫০ বছর পর ভারত, বাংলাদেশ আর পাকিস্তান আর্থিক উন্নতি কে কার চেয়ে এগিয়ে? অবাক করে দেবে রিপোর্ট
50th Vijay Diwas: ২০২০ সালের পরিসংখ্য়ান অনুযায়ী, ভারতের জিডিপি ২৬২০ বিলিয়ন ডলার, যা ১৯৭১ এর পরিসংখ্যানের তুলনায় ৩৮ গুন বেশি। এই হিসেবে ভারতের জিডিপি গত ৪৯ বছরে ৭.৭ শতাংশ সামান্য গড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের বর্তমান জিডিপি ৩২৪ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের জিডিপি ৭.৭১ শতাংশ হারে ১৯৭১ এর তুলনায় ৩৮.১ গুন বেড়েছে।
ভারতের সাহায্যে পাকিস্তা থেকে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ আজ নিজেদের ৫০তম বিজয় দিবস পালন করছে। স্বাধীন হওয়ার পর থেকে প্রতিবেশী বাংলাদেশে অনেক কিছুই বদলে গিয়েছে। স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ দারুণভাবে আর্থিক উন্নতি করেছে। যে বাংলাদেশকে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত সবচেয়ে দরিদ্র দেশের তালিকায় গুনতি করা হত, এখন সেই বাংলাদেশ এশিয়ার ১৩টি সবচেয়ে গরীব দেশের তালিকা থেকেও বেরিয়ে এসেছে।
বিশ্বব্যাঙ্ক দ্বারা জারি করা ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এশিয়ার ১৩টি সবচেয়ে গরীব দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১৩তম। অন্যদিকে পাকিস্তান অষ্টম স্থানে রয়েছে। তালিকায় ভারত বাংলাদেশের নাম থাকলেও নাম নেই বাংলাদেশের। এই পরিসংখ্যান থেকেই পরিস্কার, যে ভারতের সাহায্যে পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিল বাংলাদেশ, তারাই অর্থনীতিতে ভারতের থেকে এগিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের পরিস্থিতি যেমন ছিল তেমনই রয়েছে।
ভারত আর বাংলাদেশের আর্থিক উন্নতি
২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তানে ব্যক্তি পিছু বাৎসরিক আয় ১১৯৩.৭৩ ডলার, ভারতে এই সংখ্যাটা ব্যক্তি পিছু ১৯০০.৭১ ডলার। অন্যদিকে বাংলাদেশে ব্যক্তি পিছু বাৎসরিক আয় ১৯৬৮ ডলার। অর্থাৎ, প্রতি ব্যক্তির আয়ের হিসেবেও বাংলাদেশ ভারতকে পেছনে ফেলে দিয়েছে।
এবার দেখা যাক ভারত, বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের জিডিপি। বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান ধরলে, ১৯৭১ এ ভারতের জিডিপি ছিল ৬৭.৩৫ বিলিয়ন ডলার, এটা সেই সময়, যখন ভারত বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করেছিল। সেই সময় বাংলাদেশের জিডিপি ছিল মাত্র ৮.৭৫ কোটি ডলার। অন্যদিকে সেই সময় পাকিস্তানের জিডিপি ছিল ১০.৬ বিলিয়ন ডলার।
২০২০ সালের পরিসংখ্য়ান অনুযায়ী, ভারতের জিডিপি ২৬২০ বিলিয়ন ডলার, যা ১৯৭১ এর পরিসংখ্যানের তুলনায় ৩৮ গুন বেশি। এই হিসেবে ভারতের জিডিপি গত ৪৯ বছরে ৭.৭ শতাংশ সামান্য গড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের বর্তমান জিডিপি ৩২৪ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের জিডিপি ৭.৭১ শতাংশ হারে ১৯৭১ এর তুলনায় ৩৮.১ গুন বেড়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের জিডিপি ৬.৬৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। ১৯৭১ এর তুলনায় পাকিস্তানের জিডিপি ২৩ গুন বেশি হয়ে বর্তমানে রয়েছে ৩১৪ বিলিয়ন ডলার। এখানেও বাংলাদেশ বাজি মেরেছে আর ভারতের তুলনায় এগিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে এই দুই দেশের তুলনায় পাকিস্তান অনেকটাই পেছিয়ে।
বিশেষজ্ঞরা অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশের পরিসংখ্যান
বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের এই পরিসংখ্যান মানতে অস্বীকার করেছেন। একটি বিদেশী ফিনান্স কোম্পানিতে কাজ করা এক অর্থনীতিবিদ বলেছেন এটা অস্থায়ী ফেনোমেনা। বাংলাদেশের লেবার ইন্টেসিভ এক্সপোর্ট ইকোনমি। এই কারণে ভারতকে পেছনে ফেলার বিষয়টি অর্থহীন।
ভারতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকেই অর্থনীতিতে গতি দেখা গিয়েছে। যখন গত বছর আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক ডেটা এসেছিল, তাতে বাংলাদেশের ব্যক্তি প্রতি জিডিপি ভারতের চেয়ে বেশি থাকার অনুমান করা হয়েছিল। সেই সময় প্রাক্তন অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা অরবিন্দ সুব্রহ্মনিয়ম বলেছিলেন, ভারত আর বাংলাদেশের পরিসংখ্যানের তুলনা করা যাবে না।
সরকারের তরফে সংসদে জানানো হয়েছিল আইএমএফ নিজেদের ওয়ার্ল্ড ইকোনমি আউটলুক রিপোর্টে বলা হয়েছিল ২০২০ সালে পিপিপি-তে ভারতের ব্যক্তি প্রতি জিডিপি বাংলাদেশের ৫১৩৮.৫৮ মার্কিন ডলারের তুলনায় ৬২৮৩.৫৭ মার্কিন ডলার। এই রিপোর্ট মানতে অস্বীকার করেছিল সরকার।
সবচেয়ে দুর্বল দেশের তালিকায় কে কোথায়
বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল দেশের তালিকায় ভারত ৬৩, বাংলাদেশ ৩৭ এবং পাকিস্তান ৩৭তম স্থানে রয়েছে। এই তালিকায় ভারত নিজের দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের তুলনায় যথেষ্ট এগিয়ে। এছাড়াও ২০২১ সালের সাস্টেনেবল ডেভলপমেন্ট রিপোর্টে ভারত ১২০, বাংলাদেশ ১০৯ এবং পাকিস্তান ১২৯তম স্থানে রয়েছে। এখানেও বাংলাদেশ ভারত আর পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ভারতের বিশাল অর্থনীতি আর বড় জনসংখ্যাই ব়্যাঙ্কিয়ে পেছনে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ। উইকিপিডিয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতের বর্তমান জিডিপি ৩ ট্রিলিয়ান ডলারেরও বেশি, যা বিশ্বের ষষ্ঠ সবচেয়ে বড় জিডিপি। অন্যদিকে ভারতের জনসংখ্যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ভারতের জনসংখ্যা ১৩০ কোটিরও বেশি। বাংলাদেশের জিডিপি সাইজ ৪০৯ বিলিয়ন ডলার। এছাড়াও বাংলাদেশের জনসংখ্যাও ভারতের তুলনায় অনেক কম ১৬.৫০ কোটির কাছাকাছি।