Front-running: ‘ফ্রন্ট রানিং’-এর ধাক্কায় টলমল কোটি কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড শিল্প! কাকে বলে ‘ফ্রন্ট রানিং’? কেন আস্থা হারাচ্ছেন লগ্নিকারীরা?

Front-running: অ্যাক্সিস মিউচুয়াল ফান্ডের দুই ফান্ড ম্যানেজারের বিরুদ্ধে 'ফ্রন্ট রানিং'-এর অভিযোগে নড়ে গিয়েছে ভারতের ৪৬,৫০০ কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড শিল্প। কেন ভয় পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা? 'ফ্রন্ট রানিং'-ই বা কী?

Front-running: 'ফ্রন্ট রানিং'-এর ধাক্কায় টলমল কোটি কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড শিল্প! কাকে বলে 'ফ্রন্ট রানিং'? কেন আস্থা হারাচ্ছেন লগ্নিকারীরা?
অ্যাক্সিস অ্য়াসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান ডিলার-সহ দুই ফান্ড ম্যানেজারের বিরুদ্ধে 'ফ্রন্ট রানিং'-এর অভিযোগ উঠেছে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 22, 2022 | 4:56 PM

নয়া দিল্লি:  ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ, সিকিওরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা সেবি (SEBI)সম্প্রতি অ্যাক্সিস মিউচুয়াল ফান্ডের অফিস-সহ ১৬টি সংস্থার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে। অ্যাক্সিস অ্য়াসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান ডিলার-সহ দুই ফান্ড ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ‘ফ্রন্ট রানিং’-এর অভিযোগ উঠেছে। দেশের সপ্তম বৃহত্তম মিউচুয়াল ফান্ড ম্যানেজার সংস্থার এই বড় মাপের দুর্নীতি নাড়িয়ে দিয়েছে ভারতের ৪৬,৫০০ কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড শিল্পকে। টাল খেয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের আস্থা। অর্থ নষ্টের আশঙ্কায় আতঙ্কিত তাঁরা। কিন্তু কেন ভয় পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা? ‘ফ্রন্ট রানিং’-ই বা কী? আসুন জেনে নেওয়া যাক –

ঘটনাটি কী ঘটেছে?

এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছিল ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে। বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারী, অ্যাক্সিস অ্য়াসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির পরিচালন কর্তৃপক্ষের কাছে, সংস্থার প্রধান ডিলার বীরেন জোশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। বীরেন জোশীর এবং দীপক আগরওয়াল নামে আরেক ফান্ড ম্যানেজারের বিরুদ্ধে সন্দেহজনক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থাটি ওই দুই ডিলারের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালায়। গত মে মাসেই অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলাকালীন, প্রধান ডিলার বীরেন যোশি এবং দীপক আগরওয়ালকে বরখাস্ত করা হয়। ওই দুই কর্মীর আর্থিক অবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের পর, সেবির কাছে সংস্থার পক্ষ থেকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। সেবি বর্তমানে বিষয়টি তদন্ত করছে।

ফ্রন্ট রানিং কি?

‘ফ্রন্ট রানিং’কে সেবি ‘ইনসাইডার ট্রেডিং’ হিসেবে বিবেচনা করে। তাহলে আসুন প্রথমে বুঝে নেওয়া যাক ইনসাইডার ট্রেডিং কাকে বলে? কোনও ব্যক্তি, কোনও সংস্থার গোপন তথ্য (যা আর কেউ জানেন না) জেনে, সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয় করলে, তাকে ‘ইনসাইডার ট্রেডিং’ বলা হয়। একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। ধর যাক এক্স নামে কোনও সংস্থা একটি বড় অর্ডার পেয়েছে। কোনওভাবে, একজন ব্যবসায়ী সেই অর্ডার পাওয়ার তথ্যটি জানতে পারলেন। জেনেই তড়িঘড়ি তিনি ওই সংস্থার বেশ কিছু শেয়ার কিনে নিলেন। যতক্ষণে অন্যান্য বিনিয়োগকারীরা ওই অর্ডারের সম্পর্কে জানতে পারলেন, তার মধ্যেই শেয়ারের দাম বেড়ে গিয়েছে। এখন ওই ব্যবসায়ী তাঁর শেয়ার চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হবেন। এই অযাচিত সুবিধা নেওয়ার অসদাচরণই হল ইনসাইডার ট্রেডিং।

মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে কীভাবে এটা কাজ করে?

ধরা যাক, কোনও একটি মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থা একটি বড় অর্ডার দিল। সংস্থারই কয়েকজন ফান্ড ম্যানেজার, ফান্ড সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই অর্ডার কার্যকর করার আগেই, তাঁদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে সংস্থার স্টক কিনে নিল। যখন কোনও ফান্ড হাউস কোনও সংস্থার স্টক বড় সংখ্যায় ক্রয় করে, তখন সেই সংস্থার স্টকের দাম বেড়ে যায়। ফলে, ওই অসৎ ফান্ড ম্যানেজাররা যখন ফান্ড সংস্থার হয়ে বড় সংখ্যায় স্টকের অর্ডার দেবে, সেই সময় তাদের ব্যক্তিগত ভাবে কেনা স্টকের দামও বাড়বে এবং সেগুলি বিক্রি করে তারা লাভবান হবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটিকেই বলা হয় ফ্রন্ট-রানিং। দেশের অন্যতম বড় ফান্ড সংস্থায় এই কারচুপি ধরা পড়ার ধাক্কা, ভারতীয় মিউচুয়াল ফান্ড বাজার এখন কীভাবে সামলায়, সেটাই দেখার।