Effects of Bangladesh Crisis: বাংলাদেশে অস্থিরতা, ফুলে ফেঁপে উঠতে পারে ভারতের অর্থনীতি!

Indian Market: বাংলাদেশের টালমাটাল পরিস্থিতি। আর এর মধ্যে আশার আলো দেখাচ্ছে ভারতের বয়ন শিল্প। বাংলাদেশের বদলে বস্ত্রবয়নে ভারতের উপর নির্ভর করতে চাইছে বিদেশি কোম্পানিগুলো। আর এমন যদি হয় তবে ভারতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়তে পারে বিদেশি বিনিয়োগ।

Effects of Bangladesh Crisis: বাংলাদেশে অস্থিরতা, ফুলে ফেঁপে উঠতে পারে ভারতের অর্থনীতি!
Follow Us:
| Updated on: Dec 14, 2024 | 2:54 PM

বাংলাদেশের ঘটনা রাতারাতি ঘটেনি। অগস্টের আগে থেকেই ধীরে ধীরে পরিস্থিতির পট পরিবর্তন ঘটছে সে দেশে। কিন্তু সে দেশের পরিস্থিতির পরিবর্তনেও ভারতের শেয়ার বাজারে তেমন উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েনি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও ভারতের বাজার মার খেতে পারত। কারণ, ভারত তেল আমদানি করে। আর যুদ্ধের সময় বিভিন্ন কারণে তেলের দাম বাড়তেই থাকে। কিন্তু সেই পরিস্থিতির সুবিধা নিয়ে ভারত রাশিয়া থেকে অনেক কম খরচে তেল আমদানি শুরু করেছে। আবার মধ্যপ্রাচ্যের ইস্যুও ভারতকে টলাতে পারেনি। আবার ভারত কিন্তু বাংলাদেশের উপর নির্ভরশীল নয়। ফলে বাংলাদেশের এই আভ্যন্তরীণ গন্ডগোলের তেমন কোনও প্রভাব ভারতের বাজারে পড়বে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। আর ভারতের বাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ তুলে নিয়ে চিন বা অন্যান্য দেশের বাজারে বিনিয়োগ করলেও, শেয়ার বাজারে তার তেমন প্রভাব পড়েনি। এর সবচেয়ে বড় কারণ, ডোমেস্টিক ইনভেস্টররা ভারতের বাজার দখল করে রয়েছে। আর এই সমস্ত কারণেই ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পরিস্থিতির সার্বিকভাবে তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না, মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

তবে কিছু কিছু সেক্টর রয়েছে যেখানে সামান্য হলেও প্রভাব পড়তে পারে। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ ছেড়েছিলেন সেদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর দেশ ত্যাগের পর থেকেই বাংলাদেশে কট্টরপন্থা ও ভারতও বিরোধিতা ধীরে ধীরে দানা বাঁধতে শুরু করে। যা এখন অনেকটা প্রবল আকার ধারণ করেছে। আর এর প্রভাব শুধুমাত্র ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেই যে পড়বে এমনটা নয়।

সাফোলা তেল তৈরি করে যে কোম্পানি, তাদের লভ্যাংশের ১১ থেকে ১২ শতাংশ আসে বাংলাদেশ থেকে। আর অগস্ট মাসের সেই আন্দোলনের সময় সেই সাফোলা তেল তৈরির কোম্পানি মারিকোর শেয়ারের দাম পড়ে গিয়েছিল প্রায় ৪ শতাংশ। মারিকো ছাড়াও পার্ল ইন্ডাস্ট্রিজ, ইমামি, ব্রিটানিয়া, ডাবর, এশিয়ান পেন্টস, পেডিলাইট বা বাজাজ অটোর মতো বড়বড় ভারতীয় কোম্পানি রয়েছে যারা ভারতের শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত এবং এই সব কোম্পানির পণ্য বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ পোশাক শিল্পের জন্য বিখ্যাত। বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির পণ্য যেমন বাংলাদেশে তৈরি হয় তেমনই আমাদের দেশের ট্রেন্ট, পিডিএস ও ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজের বিভিন্ন পণ্যও বাংলাদেশে তৈরি হয়। আবার বাংলাদেশে এই অস্থিরতার কারণে সমস্যায় পড়তে পারে ভারতের তুলো ও বয়ন শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহকারী বিভিন্ন ভারতীয় সংস্থা।

ইতিমধ্যেই সেদেশে ভারতের জুয়েলারি, ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী ও তৈলজাত বিভিন্ন পণ্যের রফতানির পরিমাণ কমেছে। এছাড়াও তুলো, ও বয়ন শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোকে তাদের প্রাপ্য টাকা পেতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

বাংলাদেশের এই টালমাটাল পরিস্থিতি। সেখানে এখন কোনও নির্বাচিত সরকার নেই। ফলে সে দেশে অর্থনৈতিক ও বাজারের স্থিরতা নেই। ফলে অনেক কোম্পানিই চাইছে তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং ফেসিলিটি বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে। আর এর মধ্যে আশার আলো দেখাচ্ছে ভারতের বয়ন শিল্প। সুরাটের বয়ন শিল্পের মধ্যে থাকা অনেকেই জানাচ্ছেন, অনেক কোম্পানিই বাংলাদেশের বদলে সুরাটে তাদের রেডিমেড জামাকাপড়ের অর্ডার দেওয়ার জন্য খোঁজখবর করেছে। ফলে শিল্প মহল মনে করছে এই পরিস্থিতিতে সেই সব কোম্পানির অর্ডার যদি এদেশে আসে তাহলে সুরাটের বয়ন শিল্পের বাজার ২০ থেকে অন্তত ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। সুরাট ছাড়াও ছাড়াও তামিল্পনাড়ু, পঞ্জাব ও নয়ডার মতো বয়ন শিল্পের অন্যান্য কেন্দ্রগুলিও লাভবান হবে। আর এতে সর্বোপরি ফুলে ফেঁপে উঠবে ভারতের অর্থনীতিই।