Indian Work Culture: নারায়ণ মূর্তি যাই বলুন না কেন, সবচেয়ে বেশি কাজ করেন ভারতীয়রাই!
International Labour Organization: আমেরিকা ও জার্মানিতেও শ্রমিকরা গড়ে সপ্তাহে ৩৬ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজ করেন। সবাই বাধ্যতামূলক একদিন ছুটিও পান। ভারতীয় শ্রমিকদের ভাগ্য সেদিক থেকেও খারাপ। সপ্তাহে একদিনও ছুটি পান না, এমন লক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছেন।
নয়া দিল্লি: ৩০ বছরের কমবয়সীদের সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা উচিত। এই মন্তব্য করেই বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তি। যুব প্রজন্ম গর্জে উঠেছেন উদ্যোগপতির এই কথায়। তাঁদের দাবি, যদি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করতে হয়, তবে ব্যক্তিগত জীবন বলে আর কিছু থাকবে না। চিকিৎসকেরাও বলেছেন, অত্যাধিক পরিশ্রমে হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে অনেকটাই। অন্যদিকে, অনেকে আবার নারায়ণ মূর্তির এই মন্তব্যকে সমর্থনও জানিয়েছেন। কেরিয়ারে উন্নতির জন্য় অল্প বয়সেই পরিশ্রম করা উচিত বলে সওয়াল করেছেন তাঁরা। নানা মুনির নানা মত থাকবেই, কিন্তু বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে, ৭০ ঘণ্টা না হলেও, বিশ্বের কঠোর পরিশ্রমী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ভারত।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন বা ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয়রাই বিশ্বের অন্যতম কঠোর পরিশ্রমী। ২০২৩ সালের পরিসংখ্য়ান অনুযায়ী, ভারতীয়রা সপ্তাহে গড়ে ৪৭.৭ ঘণ্টা কাজ করেন। সবথেকে দীর্ঘ কাজের সময়ের যে দেশগুলি রয়েছে, সেই তালিকাতেও উপরের দিকেই রয়েছে ভারতের নাম।
কর্মক্ষেত্রের নীতিগত দিক থেকে বিশ্বে সপ্তম স্থানে রয়েছে ভারত। প্রথম স্থানে রয়েছে কাতার। তারপর কঙ্গো, লেসোথো, ভুটান, গামিবিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি রয়েছে। ২০২১ সালের সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছিল, বড় অর্থনীতির দেশগুলির মধ্যে ভারতীয়রাই সবচেয়ে বেশি ঘণ্টা কাজ করছেন।
উপার্জনেও বিভাজন-
ফ্রান্সে এক সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টা কাজ করে একজন শ্রমিক যে অর্থ আয় করেন, ভারতে সেই টাকা আয় করতে একজন শ্রমিককে অনন্ত ৭৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। ভারতে কম পারিশ্রমিকের পাশাপাশি কোনওরকম সামাজিক সুরক্ষাও নেই।
আমেরিকা ও জার্মানিতেও শ্রমিকরা গড়ে সপ্তাহে ৩৬ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজ করেন। সবাই বাধ্যতামূলক একদিন ছুটিও পান। ভারতীয় শ্রমিকদের ভাগ্য সেদিক থেকেও খারাপ। সপ্তাহে একদিনও ছুটি পান না, এমন লক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছেন। একদিন ছুটি নিলেই রোজগার বন্ধ।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের তথ্য আরও জানা গিয়েছে, কাজের অযোগ্য, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন ভারতীয়রা। অনেক সময়েই তাঁরা সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টারও বেশি কাজ করতে বাধ্য হন। শুধু তাই -ই নয়, কাজের পরিবেশ ও পারিশ্রমিকের নিরিখে ২০টি দেশের মধ্যে একেবারে শেষে ভারত।
এই চাপের কর্মজীবনের কারণেই ভারতে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতদের ৮৫ শতাংশ পরিবারের জন্য সময় দিতে পারেন না। তাঁদের জীবনে বিনোদনও নেই।
রিপোর্টে আরও একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য ছিল, তা হল- ভারতে সংগঠিত ক্ষেত্রের অনেক শ্রমিক সঠিক সময়ে বেতন পান না। কোন দিনে তাঁরা বেতন পাবেন, তার কোনও ঠিক নেই। পুরোটাই নির্ভর করে মালিকের ইচ্ছার উপর।