Ratan Tata: ‘বুঝবেন না একা থাকার কষ্ট’, প্রবীণদের সাহচর্যের স্টার্টআপে বিনিয়োগ রতন টাটার
Ratan Tata Invests in Goodfellows: প্রবীণ নাগরিকদের সাহচর্য প্রদানের পরিষেবা দানকারী স্টার্টআপ সংস্থা 'গুডফেলোস'এ বিনিয়োগ করলেন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটা।
মুম্বই: বরাবরই স্টার্টআপ সংস্থাগুলির সক্রিয় সমর্থকের ভূমিকায় থেকেছেন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটা। আর এবার তিনি বিনিয়োগ করলেন এক স্টার্টআপ ‘গুডফেলোস’এ। এই স্টার্টআপ সংস্থাই ভারতের প্রথম স্টার্টআপ সংস্থা, যারা প্রবীণ নাগরিকদের সাহচর্য প্রদানের পরিষেবা দেয়। মঙ্গলবার (১৬ অগস্ট) এই অভিনব উদ্যোগে বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন রতন টাটা। তবে, ঠিক কত পরিমাণ অর্থ তিনি বিনিয়োগ করেছেন, তা প্রকাশ করা হয়নি। মঙ্গলবার, ‘গুডফেলোস’ সংস্থার যাত্রা শুরুর মঞ্চে, রতন টাটা বলেছেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ একা না হয়ে পড়েন এবং কারোর সাহচর্য কামনা না করেন, কেউ জানতে পারেন না একাকী থাকাটা কতটা কষ্টকর।”
প্রসঙ্গত ‘গুডফেলোস’ স্টার্টআপটির প্রতিষ্ঠাটা হলেন শান্তনু নাইডু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন ছাত্র ২৫ বছরের শান্তনু নাইডু রতন টাটার অফিসের একজন জেনারেল ম্যানেজার। ২০১৮ সাল থেকেই রতন টাটার সঙ্গী তিনি। বস্তুত, অকৃতদার রতন টাটাকে তিনি সাহচর্য দিয়ে থাকেন। এর আগে শান্তনু নাইডু, পথ-কুকুর ও পথে থাকা অন্যান্য পষ্ঠদের প্রতি রতন টাটার ভালোবাসা শেয়ার করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর আগেও পোষ্য প্রাণীদের যত্নের জন্য তিনি আরও একটি উদ্যোগ শুরু করেছিলেন।
মঙ্গলবার, এই নয়া উদ্যোগের ধারণার জন্য শান্তনু নাইডুর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন রতন টাটা। তিনি জানিয়েছেন, এর জন্য তাঁর অফিসে শান্তনুকে আর দেখাই যায় না। মজা করে জানান, এই শুভ উদ্যোগের জন্য অফিস ফাঁকি দেওয়াটা তিনি ক্ষমা করে দিচ্ছেন। বক্তৃতা দিতে গিয়ে রতন টাটা আরও বলেন, “কেউ নিজেরা বুড়ো না হওয়া পর্যন্ত, কেউই বুড়ো হওয়ার বিষয়ে চিন্তা করে না। কিন্তু যত বয়স বাড়ে ততই একা হয়ে যায় মানুষ। সেই সময়ে ভাল স্বভাবের কোনও ব্যক্তির সাহচর্য পাওয়াটা বড় চ্যালেঞ্জের। সেই অভাব পূরণ করবে গুডফেলোস”, এমনই আশা প্রকাশ করেছেন রতন টাটা।
View this post on Instagram
অন্যদিকে, রতন টাটার প্রতি শ্রদ্ধা ঝরে পড়েছে শান্তনু নাইডুর বক্তৃতায়। স্টার্টআপটির প্রতিষ্ঠাতা রতন টাটাকে তাঁর ‘বস, পরামর্শদাতা এবং একজন বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতে প্রায় ৫ কোটি প্রবীন নাগরিক আছেন, যারা একা একা জীবন কাটাতে বাধ্য হন। জীবন ভাগ করে নেওয়ার মতো তাঁদের কেউ নেই। এই নাগরিকদের পাশেই দাঁড়াতে চায় ‘গুডফেলোস’।
সূত্রের খবর, একেবারে পরীক্ষামূলকভাবে গত ছয় মাস ধরে মুম্বই শহরে ২০ জন প্রবীণ নাগরিককে সাহচর্যের পরিষেবা দিচ্ছে ‘গুডফেলোস’। এর জন্য তারা সহানুভূতিশীল এবং মানসিক বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন তরুণদের নিয়োগ করে থাকে। সঙ্গী হিসেবে প্রবীণ নাগরিকদের সকল কাজে সাহায্য করে থাকেন এই তরুণরা। মুম্বইয়ের পর এই পরিষেবা পুনে, চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরুতে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। শান্তনু নাইডু জানিয়েছেন, তারা এই পরিষেবা সারা দেশেই চালু করতে চান। তবে, এর জন্য তারা ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে এগোতে চায়। কারণ, কোনওভাবেই প্রবীনদের সঙ্গীদের মানের সঙ্গে আপস করা হবে না বলে জানিয়েছেন শান্তনু।
কী কী কাজ করতে হয় তরুণ সঙ্গীদের? ‘গুডফেলোসে’র কর্মীদের অভিজ্ঞতা বলছে, প্রবীন নাগরিকদের সঙ্গে ক্যারাম খেলা, তাঁদের সংবাদপত্র পড়ে শোনানোর মতো কাজের পাশপাশি একসঙ্গে ঘুমোনোর মতো কাজও করতে হয়।