Lok Sabha Election 2024: গত তিন লোকসভা ভোটে তিনি ছিলেন ‘স্যার’, এবার সবাই তাঁকে ডাকছে ‘ম্যাডাম’

Lok Sabha Election 2024: ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এক বড় পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে তাঁর জীবনে। ২০১৯ পর্যন্ত তিনি ছিলেন নীলেশ মেহতা। কিন্তু ২০২০ সালে, অস্ত্রোপচার করে লিঙ্গ পরিবর্তন করেছেন তিনি। এখন তিনি বিজল মেহতা। একজন মহিলা অফিসার হিসেবে, এই প্রথম নির্বাচন পরিচালনা করছেন তিনি।

Lok Sabha Election 2024: গত তিন লোকসভা ভোটে তিনি ছিলেন 'স্যার', এবার সবাই তাঁকে ডাকছে 'ম্যাডাম'
ছিলেন নীলেশ, হয়েছেন বিজলImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: May 07, 2024 | 2:25 PM

আহমেদাবাদ: ২০০৯ সাল থেকে লোকসভা নির্বাচন পরিচালনা করছেন তিনি। এর আগের তিনটি লোকসভা নির্বাচনে, যখনই তিনি যে কেন্দ্রে গিয়েছেন ভোটের কাজ করতে, সবাই তাঁকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করত। কিন্তু, এবারের নির্বাচনে বদলে যাচ্ছে সেই সম্বোধন। এবার তাঁকে ‘ম্যাডাম’ বলে ডাকতে হবে। কারণ, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এক বড় পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে তাঁর জীবনে। ২০১৯ পর্যন্ত তিনি ছিলেন নীলেশ মেহতা। কিন্তু ২০২০ সালে, অস্ত্রোপচার করে লিঙ্গ পরিবর্তন করেছেন তিনি। এখন তিনি বিজল মেহতা। একজন মহিলা অফিসার হিসেবে, এই প্রথম নির্বাচন পরিচালনা করছেন তিনি।

বর্তমানে বিজল মেহতা ভদোদরায় রাজস্ব বিভাগের এক আধিকারিক পদে নিযুক্ত আছেন। নির্বাচনে তাঁকে মনোনয়ন পর্ব থেকে শুরু করে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত করা, ওয়েবকাস্টিং-সহ বিভিন্ন দায়িত্ব নিতে হয়েছে। এর আগে তিনি পোরবন্দরে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসার জন্য, তাঁকে প্রায়ই ভদোদরা এবং আহমেদাবাদে আসতে হত। তাই তিনি ভদোদরায় স্থানান্তরিত হন। এখন এই শহরেই থাকেন। বিজল মেহতা ছাড়া, ভদোদরা কালেক্টরেটের নির্বাচনী শাখায় মোট ছয়জন অফিসার আছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বিজল মেহতা জানিয়েছেন, তাঁর নির্বাচনী দলের প্রত্যেকে তাঁকে খোলা মনে সমর্থন করে। তাঁকে বিভইন্ন কাজে সহায়তা করে।

বিজল মেহতা জানিয়েছেন, ‘এর আগে পুরুষ হিসেবে আমি তিন-তিনটি নির্বাচন পরিচালনা করেছি। কিন্তু, এবার একজন মহিলা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত উত্তেজিত। আমার দলের সকলে আমার কাছে পরিবারের সদস্যর মতো। তারা সবসময় আমার পাশে আছে। আমার কীসে সুবিধা হয়, সেই দিকে নজর রাখে তারা।” তিনি জানিয়েছেন, ২০২০ সালে তিনি লিঙ্গ পরিবর্তনর অস্ত্রোপচার করলেও, তার আগে চার বছর ধরে তাঁকে কাউন্সেলিং এবং বিভিন্ন থেরাপির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।

নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই নিজের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে তাঁর মনে প্রশ্ন জেগেছিল। বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি শারীরিকভাবে পুরুষ হলেও, তাঁর মনের ভিতর বাস করে এক মহিলা। তিনি জানিয়েছেন, “নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়, এই বিষয়ে আমার কাউকে কিছু বলার উপায় ছিল না। এই বিষয়ে মুখ খোলাটা আমার পক্ষে অত্যন্ত কঠিন ছিল। ২০১২ সালের শেষে, আমি মনস্থির করে ফেলেছিলাম। ঠিক করেছিলাম, আমি একজন মহিলাই হতে চাই।” তবে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে, তাঁর মনে অন্য আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়েছিল। নীলেশ বা বিজল ভয় পেয়েছিলেন, লিঙ্গ পরিবর্তন করলে তাঁর চাকরি চলে যেতে পারে। অন্যান্য রাজ্যে যারা লিঙ্গ পরিবর্তন করেছেন, তারা অনেকে জানিয়েছিলেন, লিঙ্গ পরিবর্তনের পর সরকারি জায়গায় তাদের কাজ করতে বিভিন্ন অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছে। নিজেদের কাজের অধিকার ফিরে পেতে, তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।

বিজলকে অবশ্য বাঁচিয়েছিল ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি (অধিকার সুরক্ষা) আইন ২০২০। এই আইন আসার পরই, তিনি অস্ত্রোপচারের দিকে এগিয়েছিলেন। মহিলা হিসেবে ভোট করানোর স্বপ্ন পূরণের পর, এবার বিয়ে করতে চান বিজল। এর আগেও অবশ্য দু-দুবার বিয়ে হয়েছিল তাঁর। সেই সময় তিনি ছিলেন নীলেশ। পরিবারের চাপে বিয়ে দুটি করলেও, স্বাভাবিকভাবেই বিজলের সেই দুই বিয়ে সফল হয়নি। বিজল হয়ে ওঠার পর, তিনি আবারও বিয়ে করতে চান। কিন্তু, আগের দুই বিয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা তাঁকে পিছন থেকে টেনেও ধরছে।