West Bengal Assembly Election 2021 Phase 2: নজরে নন্দীগ্রাম: কী কী ঘটল সারাদিন জুড়ে? রইল বহু প্রতীক্ষিত ভোটের দশকাহন
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পরতে পরতে নতুন মোড় দেখা গেল নন্দীগ্রামের রাজনীতিতে। কখনও ঘণ্টাখানেক বুথে বসে রইলেন মমতা। কখনও বা আগ্রাসী শুভেন্দু জানিয়ে দিলেন, নন্দীগ্রাম তাঁর দখলেই থাকবে।
রইল নন্দীগ্রামের আজকের ১০ টুকরো ছবি…
১. ভোট শুরুর আগেই নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়ায় বিজেপি কর্মীর উদয় দুবের রহস্যমৃত্যু হয়। ঘরের ভিতর থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তৃণমূলের হুমকির জেরেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। যদিও পরবর্তী সময় কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে আত্মহত্যাই করেছেন ওই ব্যক্তি।
বিস্তারিত পড়ুন: ভোটের সকালে নন্দীগ্রামে ভয়ঙ্কর কাণ্ড! ঘরের মধ্যেই উদ্ধার গলায় ফাঁস লাগানো বিজেপি কর্মীর দেহ
২. নন্দীগ্রামে ভোটগ্রহণ শুরু হতেই প্রচারের আলো কেড়ে নেন এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। বাইকে চেপে ভোট দিতে যান তিনি। যাওয়ার সময় দাবি করেন, ‘একশো শতাংশ বুথে এজেন্টই নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।’ শুভেন্দু অধিকারী আদতে হলদিয়ার ভোটার হলেও এবারের নির্বাচনে নন্দীগ্রামের ভোটার হয়েছেন। ভোট দিতে যাওয়ার পথে চওড়া হাসি মুখে নতুন ভোটার কার্ডও সাংবাদিকদের দেখান শুভেন্দু অধিকারী।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘১০০ শতাংশ বুথে এজেন্টই নেই মমতার’, বাইকে চেপে ভোট দিতে গেলেন শুভেন্দু
৩. বেলা বাড়তেই সক্রিয়তা শুরু হয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানেরও। সাত সক্কালে আচমকাই নন্দীগ্রাম থানায় ছুটে যান তিনি। প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কয়েকটি বিষয় পুলিশ কর্তাদের জানাতে এসেছিলাম। তাঁদের সহযোগিতা পেয়েছি।” তবে ভোটের সকালেই কী অভিযোগ তিনি জানাতে এসেছেন, তা আর খোলসা করেননি।
বিস্তারিত পড়ুন: বাড়িতে বসে কয়েকটা ফোন-কল! তারপরই সটান নন্দীগ্রাম থানায় মমতা-সেনাপতি শেখ সুফিয়ান
৪. যদিও এরপরই হিংসার আঁচ এসে পড়ে শুভেন্দু অধিকারীর উপর। নন্দীগ্রামের টাকাপুরায় শুভেন্দুর গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু, ইট শুভেন্দু অধিকারীর গাড়িতে না গেলে সংবাদমাধ্যমের গাড়িতে লাগে। গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। বাঁশ, লাঠি, লোহার রড নিয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুভেন্দু বলেন, “জঙ্গলরাজ চলছে। সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা ঠিক নয়।”
বিস্তারিত পড়ুন: গাড়ি থেকে নেমে সবে বুথের দিকে পা বাড়িয়েছেন, আচমকাই ধেয়ে এসেছিল ‘ওরা’! নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সঙ্গে ঘটল বড় ঘটনা!
৫. দুপুর ১২ টা পেরতেই মাঠে নামেন মমতা। নন্দীগ্রামের বয়ালের ৭ নম্বর বুথে বিজেপির বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ তোলে তৃণমূল। হুইল চেয়ারে করে সেখানে ছোটেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী। তিনি বুথে পৌঁছতেই ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল কর্মীরা। ক্রমশ উত্তপ্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বিরাট সংখ্যক আধাসেনা। বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।
বিস্তারিত পড়ুন: নন্দীগ্রামের বয়ালে ভয়ঙ্কর উত্তেজনা, মমতাকে ঘিরে রাখা হল মানববন্ধন করে
৬. প্রায় ঘণ্টাদেড়েক বয়ালের ৭ নম্বর বুথে বসে থাকেন মমতা। সেখান থেকেই তিনি ফোন করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে নালিশ করেন যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে না। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন রাজ্যপালও। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নন্দীগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী। বয়ালের বুথে বসেই মমতা দাবি করেন, ৮০ শতাংশ ছাপ্পা ভোট পড়েছে ওই বুথে। কমিশনে ৬০ টির বেশি অভিযোগ জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তাই আদালত যাওয়া এবং আইনি পথে হাঁটা হবে বলেও জানান নেত্রী।
বিস্তারিত পড়ুন: ৮০ শতাংশ ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলে আদালত মুখো হচ্ছেন মমতা
৭. মমতা বেরিয়ে আসার ঘণ্টাখানেক পর বয়ালের ওই বুথে হাজির হন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে পৌঁছে মমতার বিরুদ্ধে বুথ জ্যাম করে রাখার অভিযোগ তোলেন তিনি। পাশাপাশি বলেন, “সকাল ৭ টা থেকেই তো মার্কেটে শুভেন্দু। মমতা নেই। তাই সংবাদ মাধ্যমের প্রচার পেতে উনি নাটক করছেন।”
বিস্তারিত পড়ুন: ‘সকাল ৭ টা থেকে মার্কেটে শুধুই শুভেন্দু, মমতা প্রচার পেতে নাটক করছেন’
৮. বয়াল থেকে বেরিয়ে এসে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন মমতা। সেখানে সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অধীনস্থ আধাসেনা এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন। হাত জোড় করে তিনি বলেন, “আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু কমিশন শুধু বিজেপির কথা শুনছে।” তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, “আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব, উনি নিজে আধাসেনাকে নির্দেশ দিয়েছেন শুধুমাত্র বিজেপির গুণ্ডাদের সাহায্য করার জন্য। সকাল থেকে বন্দুক নিয়ে বসে রয়েছে কাউকে ভোট দিতে দেয়নি। প্রত্যেকটা মানুষ আমায় নালিশ করছে।” সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ দিন একবার মেজাজ হারাতেও দেখা যায় মমতাকে। ‘এ দেব’ বলে হুইল চেয়ারে বসেই কিছুটা তেড়ে যাওয়ার ভঙ্গিতে উদ্যত হন তিনি।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘নিশ্চুপ কমিশন’, করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে কটাক্ষ মমতার
৯. সন্ধ্যা নামার পরও ব্যস্ততা কমেনি তৃণমূল সুপ্রিমোর। ওসমানচকের তিন যুবককে আটক করার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। সেখানেও ছুটে যান তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোট দিতে গিয়েছিলেন ওই তিন যুবক। এরপরই তাঁদের তুলে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সেই খোঁজ পেয়ে ওসমানচকে যান মমতা। মীমাংসা করে তারপর ফিরে আসেন নিজের নন্দীগ্রামের ভাড়া বাড়িতে।
বিস্তারিত পড়ুন: সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওসমানচকের তিন যুবককে ‘আটক’ কেন্দ্রীয় বাহিনীর! মমতার কাছে নালিশ স্থানীয়দের
১০. দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মাঝে প্রচারের আলো থেকে কিছুটা দূরেই থাকতে হয় বাম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। হেভিওয়েটদের মাঝে নিজে ‘লাইটওয়েট’ হয়েও বাকিদের কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। মীনাক্ষীর দাবি, সব ভোটারই যে ভোট দিতে পেরেছেন এমনটা নয়। আবার কিছু ভোটার যে প্রভাবিত হননি, আক্রান্ত হতে হয়নি কাউকে এমনটাও নয়। এই প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম প্রার্থী। তিনি দাবি করেন, ১৪৪ ধারা লাগু থাকলেও তাকে কার্যত পরোয়াই করেনি তৃণমূল ও বিজেপি।
বিস্তারিত পড়ুন: হেভিওয়েটরা আজ লাইটওয়েট: মীনাক্ষী মুখার্জি