ফুটে আলু বেচছেন কুমারটুলির প্রতিমা শিল্পী
"শিল্পী হিসেবে আমারও মাথা হেঁট হয়ে গেছে যখন দেখেছি কার্তিক পাল ওইভাবে আলু বিক্রি করছে কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে আমাদের সবারই ভবিতব্য হয়তো এটাই।"
প্রীতম দে
হ্যাঁ সত্যি ।
পুজোর আগে যেখানে দম ফেলার ফুরসত থাকতো না। সেখানে পুরনো প্রতিমা শিল্পী কার্তিক পাল ফুটপাথে আলু বেচছেন ।
ফার্স্ট হাফ আলু বেচা। সেকেন্ড হাফ ঠাকুর গড়া। কিন্তু কেন ? ” যা অর্ডার পেয়েছি তা দিয়ে সারাবছর টানা অসম্ভব। পেট তো চালাতে হবে। অসুস্থ কাকা । স্ত্রীর হাই সুগার। ওষুধেই তো সব খরচ হয়ে যায়। খাব কী?”
আগে প্রায় কুড়িটার মতো দুর্গা হত। ১৯ , ২০ তে সাত আটটায় ঠেকল। এই ২১- এ মাত্র ৪ টে। তাও ছোট ছোট। শোভাবাজার রাজবাড়িতে দুপুর থেকে সেক’টা প্রতিমায় হাত দিয়েছেন।
বড় দুর্গা- খ্যাত কুমারটুলির প্রতিমা শিল্পী মিন্টু পাল বললেন, “শিল্পী হিসেবে আমারও মাথা হেঁট হয়ে গেছে যখন দেখেছি কার্তিক পাল ওইভাবে আলু বিক্রি করছে কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে আমাদের সবারই ভবিতব্য হয়তো এটাই।”
বস্তুত এখন কুমোরটুলি গেলে মনেই হবে না পুজোর আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। সেই ব্যস্ততা নেই নেই সেরকম উপচে পড়া প্রতিমা।
লজ্জা লাগে না ? একটা করুণ হাসি। তারপর প্রতিমাশিল্পী বলেন , ” আমার মতো অনেকের অবস্থাই খারাপ। তারা চক্ষুলজ্জার ভয়ে চুপ করে আছে। আমি লজ্জা-শরম বিসর্জন দিয়েছি।” মুখ নিচু।
তারপর উঠে দাঁড়ান। পা ফোলা ফোলা। ” বেশিক্ষণ একটানা বসলে কষ্ট হয় ।”
কার্তিকের চশমার কাঁচ কিছুটা ঝাপসা কি?
মনে পড়ে গেল, প্রতিমা গড়তে তো ঠায় দাড়িয়েই থাকতে হয়।
আরও পডুন: খুঁটিপুজোয় ধামসা-মাদল, দুর্গাপুজোর আগে তাহলে কি এবার দিনবদলের পালা?