Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

TV9 বাঙালিয়ানা: বিশ্বায়নের যুগে বাঙালির বাঙালিয়ানা কি বিস্মৃতির পথে?

এই প্রথম বাংলায় টেলিথন - TV9 বাঙালিয়ানা। সঞ্চালনায় থাকছেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অভিনেত্রী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, রুমেলা চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ এবং TV9 নিউজ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাস।

TV9 বাঙালিয়ানা: বিশ্বায়নের যুগে বাঙালির বাঙালিয়ানা কি বিস্মৃতির পথে?
TV9 বাঙালিয়ানা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 13, 2022 | 8:24 PM

বাঙালিয়ানা বাঙালির জাত্যাভিমান। তাঁর সংস্কৃতি, চিন্তা ভাবনা, আচার আচরণ সব কিছুর মধ্যেই মিশে আছে এই বাঙালিয়ানা। বাঙালির ভাষা, পোশাক, জীবনযাত্রা এ সবই সেই বাঙালিয়ানারই সুচিন্তিত প্রতিফলন। বাঙালিয়ানার সূত্রপাত কিন্তু আজকের নয়। ইতিহাসের দিকে চোখ দিলেই দেখা যাবে তিলে তিলে গড়ে উঠেছে এই বাঙালিয়ানা।

গর্বের বাঙালিয়ানা
খৃষ্টপূর্ব ৩০০ বছর আগে মৌর্য যুগে গড়ে ওঠা তাম্রলিপ্ত বন্দরের দিকে তাকালেও চোখে পড়বে বাঙালিয়ানার চেনা ছবি। এখান থেকেই শত শত জাহাজ পাড়ি দিত দক্ষিণপূর্ব এশিয়া। আরও কয়েক শো বছর আগে এগিয়ে গেলে দেখা যাবে সম্ভবত আজকের বাংলাদেশের মুনশিগঞ্জ জেলার মানুষ মহাপন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর সূদূর তিব্বতে ঘুরে এসেছিলেন বৌদ্ধ পুঁথির খোঁজে। আবার রাজা শশাঙ্কের পত্তন করা গৌড়ের স্থাপত্য আজও শিহরিত করে গোটা শরীর। সিকন্দর শাহর প্রতিষ্ঠা করা সে সময় দক্ষিণ এশিয়ার সব থেকে বড় মসজিদ বানিয়েছিলেন এখানকার বাঙালি রাজমিস্ত্রিরাই। কিন্তু ইতিহাস তাঁদের মনে রাখেনি। আবার মঙ্গলকাব্যের আখ্যানে জ্বলন্ত হয়ে উঠেছিল বাঙলার জনজীবনের চলমান ইতিহাস।

বঙ্গীয় নবজাগরণ
ইংরেজ শাসন এ দেশে কায়েম হওয়ার পর থেকে নতুন ভারতের সব দিকেই আধুনিকতার ছাপ দেখা গিয়েছে কোনও না কোনও বাঙালির হাত ধরে। উনিশ শতকের মাঝামাঝি বাঙালির গরিমার অধ্যায়ের স্বর্ণযুগ। বিজ্ঞান, সাহিত্য, সঙ্গীত, শিল্পকলা, সিনেমা, নাটক– সব ক্ষেত্রেই এসেছে আমূল পরিবর্তন। কান্ডারি বাঙালিরা। ইতিহাস একে আখ্যা দিয়েছে বঙ্গীয় নবজাগরণ হিসেবে। রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো সমাজ সংস্কারক থেকে শুরু করে শিল্প বাণিজ্যে দ্বারকানাথ ঠাকুর, বেঙ্গল কেমিক্যালসের কাণ্ডারী প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ডাকব্যাকের প্রতিষ্ঠাতা সুরেন্দ্রমোহন বসুর নাম ইতিহাসে বিস্মৃত হয়নি। রাজনীতি তথা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বাঙালির অবদান তো লেখা রয়েছে প্রতিটি বইয়ের পাতায়, শহীদ বেদির মঞ্চে অথবা আন্দামানের সেলুলার জেলের দেওয়ালে দেওয়ালে। বিজ্ঞানেও বাঙালির জয়জয়কার। জগদীশচন্দ্র বসু থেকে মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বসু– বাঙালির গরিমা অমলিন। বাঙালি নাকি কুঁড়ে? ১৯১১ সালের ২৯ জুলাই আইএফএ শিল্ড জিতে ইতিহাস রচনাকারী মোহনবাগানের সবুজ-মেরুন সূর্যোদয়ের ইতিহাস কি ভোলা যায়?

বাংলাতেই আটকে বাংলার সাহিত্য?
তবে এ সবের মধ্যেই বাঙালির সাহিত্যচর্চার প্রতি অমোঘ প্রেম সর্বজন আলোচিত। তবে প্রশ্ন উঠছে বাংলাতেই কি আটকে বাংলা সাহিত্য? বিদেশি ভাষায় অনেক ক্ষেত্রেই অনুবাদ না হওয়ার কারণে প্রতিভাবান বাঙালি কবি-সাহিত্যিক কি কালের নিয়মে চলে গিয়েছেন বিস্মৃতির গহ্বরে? বঞ্চিত হয়েছে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রেও? আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছিলেন কবিগুরু। কারণ, বেশির ভাগের ক্ষেত্রেই তাঁর সৃষ্টির অনুবাদ পৌঁছে গিয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। সাহিত্যে পেয়েছিলেন নোবেল। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে কী সমস্যা থেকে গেল যে বিভূতিভূষণ থেকে শুরু শরৎচন্দ্র পেলেন না আন্তর্জাতিক খ্যাতি?

সমস্যা রয়েছে, তবে বাঙালির গরিমা সবই যে পুরনো দিনের কথা তা তো নয়, অমর্ত্য সেন থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রেয়া ঘোষাল থেকে দীপা কর্মকার আবার অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সত্যরূপ সিদ্ধান্ত… বাঙালিকে নিয়ে গর্ব করা আজও সাজে।

তা সত্ত্বেও বাঙালিয়ানা নিয়ে চর্চা কেন? তার কারণ, আরও একবার ঝালিয়ে নেওয়া নিজেদের, খতিয়ে দেখা এই বিশ্বায়নের যুগে কেমন আছে বাঙালি? গৌরবের দিন কি চিরকালের মতো শেষ হয়ে গিয়েছে? দেশের মধ্যে বাঙালি কি আজ পিছিয়ে? ‘ভেতো বাঙালি’, ‘অলস বাঙালি’– এই সব কয়নেজ কি সত্যি হয়ে উঠেছে? তাই খতিয়ে দেখব আমরা, দেখবে টিভিনাইন-এর বাঙালিয়ানা। ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টা থেকে সম্প্রচারিত হবে শুধুমাত্র TV9 বাংলায়।