Exclusive Nabanita Das: মা তারা চরিত্রের প্রভাব আমার জীবনে ভীষণ, আমি পাল্টে গিয়েছি: নবনীতা
Maa Tara: বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া ভীষণভাবে সক্রিয়। তা-ই মাঝেমধ্যেই সেখানে চোখ রাখলে দেখি নানা রিল বানানো হয়েছে, নানা ছবি শেয়ার করা হচ্ছে আমার কালীরূপে... সেটা বেশ ভাল লাগে।
জয়িতা চন্দ্র
“আমি তো এই চরিত্রটার সঙ্গে সব থেকে বেশি সময় কাটিয়েছি, ২০১৯-র জানুয়ারি থেকে ২০২২-এর মার্চ পর্যন্ত, ফলে তিন বছরের একটা জার্নি। আমার কাছেও সম্পূর্ণ অন্য একটা স্বাদের অভিজ্ঞতা। আগে তো এই ধরনের মাইথোলজিক্যাল চরিত্র করিনি, কাল্পনিক করেছি… তা-ই এই চরিত্রের আমার কাছে মাহাত্মই আলাদা”—এই ধরনের কথা বলছেন যিনি, সেই নবনীতা ‘মা তারা’ দাসের কথা আড্ডা জুড়ল TV9 বাংলা।
ক্যামেরার সামনে মা তারারূপে অনুভূতিগুলো কেমন?
বিশেষ করে এই কালীপুজোর সময় মনে পড়ে যায়, যখন আমার সাজটা তৈরি হতো, মানে মেকআপ, শাড়ি পরা, গয়না পরা, সবটাই ধাপে-ধাপে চলতে থাকে। প্রথম-প্রথম এই বিষয়টা খুব কঠিন মনে হত। সাজটাও খুব ভারি মনে হত। আমার আবার শীতে শুটিং শুরু হয়েছিল, ফলে আরও অস্বস্তি হত। যাঁরা সাজ নিয়ে আসতেন, কিছুদিন পর থেকে তাঁদের ভারি লাগতে শুরু করল… আমার নয়। আমার কাছে এটা খুব সহজ হয়ে যায়, এবং একটা সময়ের পর ওই রূপটায় সেজে ওঠাটাই আমার কাছে বড় একটা পাওয়া হয়ে দাঁড়াত। আরও একটা বিষয় হল, মায়ের তো অনেক রূপ… এই চরিত্র করার জন্য অন্যান্য অনেক চরিত্র করার সুযোগ হত, এক-এক দিন এক একটা রূপ নিতাম, এক-এক রকমের সাজে আমায় তৈরি করা হতো। ভাষারও বদল ঘটত। খুব ভাল লাগত।
মা তারার চরিত্রে কী দেখে নির্বাচন করা হল বলে বলে তোমার মনে হয়?
মূলত (নাচের) মুদ্রা। আমি তো নাচ করি। চর্চায় থাকি। তা-ই আমার মনে হয়, সেটাই প্রধান ছিল। যেমন ধরো আশীর্বাদ করা, রেগে গিয়ে তাকানো, নটরাজ মূর্তী, খড়্গ নিয়ে যুদ্ধ করা… এইসব।
কালীপুজোর স্মৃতিটা কেমন মা তারার?
কালীপুজোয় তো স্পেশাল পর্ব থাকবেই। মায়ের কিছু নাচের অংশও রাখা হতো। কখনও তাণ্ডব, কখনও শান্তরূপে। সকলে মিলে এই প্রস্তুতিটায় গা ভাসাতাম। খুব ভাল-ভাল সব স্মৃতি। মা তারার যে সাঙ্গ-পাঙ্গরা থাকতেন, তেমনই সকলকে নিয়ে আমার নাচ। সেটটাও সেজে উঠত অদ্ভুত সুন্দরভাবে।
এই চরিত্র কি নবনীতাকে কোনওভাবে প্রভাবিত করেছে?
বিশ্বাস করুন, আমি ভীষণ শান্ত হয়ে গিয়েছি। অনেকটা মেডিটেশনের কাজ করেছে এই চরিত্র। আগে আমি ভীষণ ছটফট করতাম। কী করছি, কেন করছি, কী বলছি… অত ভাবতাম না। এখন ভাবি।
পর্দার মা তারা কী মনে-মনে মা তারার ভক্ত?
আমি ছিলাম না ঈশ্বরে বিশ্বাসী। তবে এখন একটু-একটু হয়েছি, জানেন তো। তারাপীঠের জন্য কি না জানি না, তবে বিয়ের পর থেকেই হয়েছি। কিছুটা জিতুকে দেখে। ওর যে শিবের প্রতি এত আস্থা, সেই বিষয়গুলোকে না আমি ফলতেও দেখেছি। নিজের চোখে দেখা, নিজে অনুভব করা। ফলে শিবের প্রতিটা একটা টান তৈরি হয়েছে।
মা তারা নয়, তবে নবনীতা শিব ভক্ত?
(হেসে) শিব কেন বললাম, এমন বহু জায়গায় ঘটেছে যে জিতুর সঙ্গে আমায় দেখে—যেহেতু আমি তারা—ওকে শিব বলা হচ্ছে। যেখানে গিয়েছি হয়তো আমাদের তাঁরা চেনেন, তাঁরা আমাদের এই জুটির নাম দিচ্ছেন। তার জন্যই আমি জিতুভক্ত, শিবভক্ত।
পথচলতি চেনা-অচেনা মানুষের কাছে মা তারা হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা কেমন?
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া ভীষণভাবে সক্রিয়। তা-ই মাঝেমধ্যেই সেখানে চোখ রাখলে দেখি নানা রিল বানানো হয়েছে, নানা ছবি শেয়ার করা হচ্ছে আমার কালীরূপে… সেটা বেশ ভাল লাগে। তবে একটা কথা কি, আমায় তো বেশ কিছু চরিত্রে দর্শকেরা দেখেছেন… ফলে মা তারাই যে একমাত্র পরিচয়, এমনটা নয়। আরও একটা বিষয় এক্ষেত্রে আমি বলব, সোশ্যাল মিডিয়ায়র জন্য না এখন সকলেই স্টারদের নিজের নামেই চেনে। তাঁদের রিলস দেখছে, ছবি দেখছে, পোস্ট দেখছে, ব্যক্তিগত জীবনে তাঁরা কী করছে, সেটা দেখছে। তবে হ্যাঁ , ধারাবাহিক চলাকালীন কেউ-কেউ ওই নামেও ডাকতেন। তবে বর্তমানে সেটা মিলিয়ে-মিশিয়ে। কারও কাছে নবনীতা, কারও কাছে মা তারা। তবে আমি জানেন তো, সেভাবে কোনও শো করিনি এই ধারাবাহিক চলাকালীন। সেটে রিলস বানানো, আলাদা করে সেটাকে তুলে ধরার চেষ্টা করিনি কখনও। আমার কাছে না কাজটা খুব নিষ্ঠার। আমি সেখানে অন্য কিছু করার কথা ভাবি না। তবে এখন চাই একটু অন্য স্বাদের কাজ করতে। নতুন কোনও চ্যালেঞ্জ নিতে। নতুন পরিচিতিতে দর্শকের মনে জায়গা করতে।