Pallavi Dey Death: চলে গিয়ে আমায় অনেকটা বড় করে দিলি পল্লবী, বুঝিয়ে দিলি পৃথিবীটা এরকমই: প্রত্যুষা

চলে গিয়েছেন পল্লবী দে। তাঁর মৃত্যুতদন্ত এখন আদালতের আওতায়। প্রেমিক সাগ্নিক রয়েছেন পুলিশ হেফাজতে। বুধবার তাঁর মৃত্যুর ৩০ দিন পার হল। তাঁকে নিয়েই খোলাচিঠি প্রিয় বন্ধু প্রত্যুষার।

Pallavi Dey Death: চলে গিয়ে আমায় অনেকটা বড় করে দিলি পল্লবী, বুঝিয়ে দিলি পৃথিবীটা এরকমই: প্রত্যুষা
গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 15, 2022 | 10:57 PM

দেখতে দেখতে এক মাসও চলে গেল। পল্লবী নেই। মনে হচ্ছে একটা মাস নয়, কালকেরই ঘটনা। কালকেই ঘটেছে সব কিছু। কীভাবে মাঝে ৩০টি দিন বেমালুম উবে গেল তা বুঝতেও পারলাম না। এখনও যখন রাত্রে ঘুমোতে যাই, অবচেতন মন সচল হয়ে যায় আরও, মনে হয় পল্লবী আছে। হয়তো কোনও কাজে ব্যস্ত। এক্ষুণি হয়তো ফোন করবে, করে বলবে সারা দিনে কী কী হয়েছে। আমায় আবারও ডাকবে ঈশা বলে। আমাকে ঈশা বলে তো একমাত্র ওই ডাকত। আমি জানি, এই ডিনায়েল উচিত নয়। কথাতেই তো বলে, ‘সত্যরে মানিয়া লও সহজে’। কিন্তু পারছি কই? যদি মেনে নিতাম হয়তো কিছুটা হলেও মানসিক শান্তি পেতাম। কিন্তু পল্লবী আমায় তা থাকতে দিচ্ছে আর কোথায়?

এমন অনেকবার হয়েছে ঝগড়া হয়েছে, মন খারাপ। মাঝে এক দেড় মাস কথা বন্ধ। আবার আমায় কল করে রাগ ভাঙিয়েছে। সাবলীল ভাবে বলেছে, ‘জানিস এই হয়েছে…’। এখনও তাই বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে কোনও এক সকালে কিংবা কোনও নিদ্রাহীন রাত্রে আমার মোবাইলের স্ক্রিনে ভেসে আসবে খুব চেনা একটি নম্বর। যে নম্বরে আমি উজাড় করে দিতাম মনে যাবতীয় কথা, কষ্ট।

আমি পল্লবী আর ভাবনা– তিনজনেই খুব ভাল বন্ধু ছিলাম। পল্লবী চলে যাওয়ার পর ভাবনার সঙ্গে কিছু দিন আগে দেখা হয়েছে। আগে দেখা হলে কত কথা, কত আড্ডা। কিন্তু এই মিটে আমরা পারিনি। চুপ করে বসেছিলাম। কিছু ভাল লাগছিল না। বুঝেই উঠতে পারছিলাম না আমাদের আর এক টিম মেম্বার আর কোনওদিন আড্ডার অংশ হবে না। একসঙ্গে সেই রাতজাগা আর হবে না। আমাদের তিনজনের ঘোরার একটা প্ল্যান হয়েছিল। তা নিয়ে কত আলোচনা। আমায় ফোন করে বলেছিল, “ঈশা এটা গার্লস ট্রিপ, এখানে না কাউকে নেব না”। সেই ট্রিপটা আর করলি না তুই পল্লবী, এভাবে চলে গেলি! একসঙ্গে কত রাতজাগার প্ল্যান করেছিলাম… সে সব কিছুকে ফেলে, আমাদেরকে ফেলে কেন এভাবে চলে গেলি তুই! জানি না আমি আর ভাবনা দুজনে আর কোথাও কখনও ঘুরতে যেতে পারব কিনা, গেলেই মনে হবে এটা তো দুজনের ট্রিপ নয়, তিনজনের ট্রিপ হওয়ার কথা ছিল।

পল্লবী চলে যাওয়ার পর ওকে নিয়ে কত কথা। ওর চরিত্র নিয়ে, ওর রোজগার নিয়েও কত মন্তব্য। খারাপ লাগছে আমার। ও চলে গিয়ে জীবনে একটা বড় সত্যি হয়তো বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছে। হঠাৎ করেই প্রত্যুষাকে তুই বড় করে দিয়েছিস পল্লবী। প্রত্যুষা বুঝতে শিখে গিয়েছে, পৃথিবীটা এরকমই, মানুষ এরকমই। দুনিয়ার জন্মগত অধিকার মেয়েদেরকে বিচার করা। কারও ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল দেখে বোঝা যায় না সে কেমন আছে। সোশ্যাল মিডিয়া আদপে একটা বড় মিথ। আমরা পাবলিক ফিগাররা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধু ভালগুলোই দেখাই। খারাপ কিছু দেখাই না। আর সবাই ভেবে নেয়, বাহ ওর জীবনটা তো দারুণ সর্টেড। কিন্তু সত্যি কি তাই? ওর ভাইকে কল করেছিলাম ফোনে পাইনি। আপাতত ওর মৃত্যুর আসল কারণ জানার অপেক্ষায় রয়েছি। জানি ও আর ফিরবে না। জানি আর একসঙ্গে আমাদের আড্ডা হবে না। জানি মধ্যরাতে আর মনের কথা শেয়ার হবে না ওর সঙ্গে। পল্লবী তুই ভাল থাকিস। আবার দেখা হবে তোর সঙ্গে। হয়তো কোথাও, অন্য কোনও খানে।