Bengali Serial Hit Jodi: একজন খুব সাধারণ আর একজন ডিগ্ল্যাম, কোন রহস্য শ্রুতি-গৌরবের সাফল্যের পিছনে?

Serial Hit Jodi: শ্রুতি: প্রেম মানে ভরসা-বিশ্বাস, আর কি? মারাত্মক নির্ভর করাটা আমার কাছে প্রেম নয়।

Bengali Serial Hit Jodi: একজন খুব সাধারণ আর একজন ডিগ্ল্যাম, কোন রহস্য শ্রুতি-গৌরবের সাফল্যের পিছনে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 15, 2023 | 12:09 PM

জয়িতা চন্দ্র

‘ত্রিনয়নী’ পর ফের জুটিতে অভিনেত্রী শ্রুতি দাস ও অভিনেতা গৌরব রায়চৌধুরী। খবর সামনে আসা মাত্রই দর্শকদের মনে উত্তেদনার পারদ ছিল তুঙ্গে। একটা খবরই বারবার দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে দেখা যায়, তা হল এই জুটির প্রত্যাবর্তন। ছোটপর্দায় হিট জুটির তালিকায় ‘ত্রিনয়নী’ থেকেই নাম লিখিয়েছেন শ্রুতি-গৌরব। তাঁদের ঘিরে জোর চর্চা সোশ্যাল মিডিয়াতেও। বর্তমানে ‘রাঙা বউ’ ধারাবাহিকে আবারও তাঁদের পেয়ে বেজায় খুশি দর্শকেরা। পর্দায় এই মধুর রসায়নের রহস্য কী? TV9 বাংলার হিট জুটি সিরিজ়ে আজকের কাপল শ্রুতি-গৌরব।

আগে থেকে কি একে অপরকে চিনতেন?

শ্রুতি ও গৌরব: না, এই সিরিয়ালের সেটেই প্রথম চেনা।

প্রথম পর্দায় হিট জুটি হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা কেমন?

শ্রুতি: আমার মনে হয়, আমাদের খুব সুন্দর একটা কনট্রাস্ট আছে। সেটাই কোথাও গিয়ে যেন ক্লিক করে গিয়েছে। কনট্রাস্ট বলতে বোঝাতে চাইছি, লুকের দিক থেকে আমাদের খুব ভাল মানিয়ে গিয়েছে। একজন খুব সাধারণ, একজন ডিগ্ল্যাম—এই ব্যাপারটাই হয়তো চোখে পড়ে।

গৌরব: এক-একটা গল্প এক-এক ধরনের। আমার মনে হয় ‘ত্রিনয়নী’র গল্পটাই এত সুন্দর, চরিত্রগুলো এত ইন্টারেস্টিং ছিল যে, দর্শক প্রথমদিন থেকেই সেটা গ্রহণ করেছিল। অভিনেতা হিসেবে তো অনেক কাজ করেছি। প্রতিটাই যে বিশাল হিট হবে, এমনটা নয়। তবে ‘ত্রিনয়নী’ সত্যিই একটা মাইলেজ। অদ্ভুত দুই চরিত্রের রসায়ন।

একে-অপরের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

শ্রুতি: সহ-অভিনেতা যদি মনের মতো না হয়, অভিনয়টা করতে তেমন একটা ভাল লাগে না। আমাদের সেটাই যেন বড় শক্তি। আমরা একটা দৃশ্য শুট করার আগে বিস্তারিতভাবে সেটাকে নিয়ে চর্চা করি। পুরো স্ক্রিপ্টটা পড়ে ফেলি। সেটা একটু সময়সাপেক্ষ, তবে সেটা করে থাকি আমরা। এটাতে যে সুবিধেটা হয়, সেটা হল: পাল্টা যে প্রতিক্রিয়াগুলো আমরা একে-অপরকে দিয়ে থাকি, অদ্ভুতভাবে সেই টিউনিংটা মিলে যায়। আমি হয়তো রিহার্সালে একরকম করেছি, টেকে গিয়ে হয়তো অন্যকিছু করে ফেললাম… ও সেটা খুব দ্রুত ধরে ফেলে। ওর ক্ষেত্রেও সেটা হলে আমি বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করি। এটা ওর একটা মস্ত প্লাস পয়েন্ট।

গৌরব: ও খুব ভাল অভিনেত্রী। ওর সঙ্গে কাজ করতে আমার ভীষণ সুবিধে হয়। ও আমার অনেক পুরনো বান্ধবী। সেটাই তো মস্ত সুবিধে। কাজটা করতে গিয়ে ফলে ওর আবেগগুলো বুঝি। এই বন্ধুত্বটা থাকলেই তো কাজে ভীষণ সুবিধে হয়।

হিট জুটি হওয়ার পিছনে রহস্য কী?

শ্রুতি: কাজের বাইরে এত ভাল একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক, সেটাই কোথাও গিয়ে ক্যামেরায় ধরা পড়ে যায় বলে আমার মনে হয়। এই বন্ডিংটাই কোথাও না-কোথাও গিয়ে পর্দায় ভীষণ ছাপ ফেলে। এটাকে কেন্দ্র করেই হয়তো আমাদের দু’জনকে আবারও কাস্ট করা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের ‘ত্রিনয়নী’র জুটিটা খুব তাড়াতাড়ি জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিল। যদিও ধারাবাহিকের জার্নিটা খুব একটা দীর্ঘ ছিল না। তবে বড় জিনিস সবসময় যে ভাল হবে, এমনটা নয়। ওই হিট হয়ে যাওয়াটাই ছিল প্রাপ্য, দীর্ঘদিন ধরে টিআরপিতে আমরা ছিলাম বাংলার টপার। সেটা বড় কথা নয়, মানুষের বিপুল ভালবাসা পেয়েছিলাম… এটাই অনেক। সেই কারণেই হয়তো সকলে চেয়েছিলেন, আমরা ফিরে আসি।

গৌরব: দর্শক গল্পটা গ্রহণ করেছিল, আমাদের চরিত্রগুলো ভীষণ ভাল ছিল। প্রথম দিন থেকেই ওর আর আমার কেমিষ্ট্রিটা এমনভাবে ম্যাচ করে গিয়েছে যে, দর্শকের মনেও দাগ কেটেছে। যেটা এখনও হচ্ছে ‘রাঙাবউ’ ধারাবাহিকে। সত্যি বলতে কি আপনি যখন খুব খুশি হয়ে একটি ধারাবাহিকে কাজ করবেন, তখন তা পর্দায় ধরা পড়বে। এখানেও সেটাই হয়েছে।

শুটিং-এর বাইরে সম্পর্ক কেমন?

শ্রুতি: বেশিরভাগ সময়টাই তো একসঙ্গে কাটে সেটে। বাড়িতে গিয়ে সামান্য কিছুটা সময় কাটানো। ফলে শুটিং-এর বাইরে বলে আর কিছুই থাকে না। তবে একটা কথা বলতে পারি, আমাদের সম্পর্কটা বেশ ভাল বন্ধুত্বের।

গৌরব: দেখুন, ভাল বন্ধু হতে গেলেই যে রোজ দেখা করতে হবে, কথা বলতে হবে—এমনটা নয়। তবে সত্যিই ও আমার খুব কাছের বন্ধু। আমরা চুটিয়ে কাজ করতে ভালবাসি। শুটিং স্টুডিওর বাইরে খুব একটা দেখাসাক্ষাৎ হত না আমাদের। এটা আমার ব্যক্তিগত একটা সমস্যা, শুটিং শেষ করে বাড়ি ফিরে যাই আমি। অনেকেই আড্ডা মারে, গল্প করে, আমাকেও বারবার বলা হয়, আমি স্টুডিওতে থাকলে চুটিয়ে মজা করি। কিন্তু স্টুডিওর বাইরে হয়ে ওঠে না সময়ের অভাবে। তার মানে এই নয় যে, বন্ধুত্বে ফাঁক থাকছে।

ব্যক্তিজীবনে প্রেমের সংজ্ঞা কী

শ্রুতি: প্রেম মানে ভরসা-বিশ্বাস, আর কি? মারাত্মক নির্ভর করাটা আমার কাছে প্রেম নয়।

গৌরব: এখনকার যুগে সরাসরি প্রেম বিষয়টার মধ্যে ঢুকে পড়তে আমি বিন্দুমাত্র রাজি নই। এটাকে আমি সাপোর্টও করি না। প্রথম দেখায় প্রেম—এটা সত্যি খুব বিরল এখন। আমার কাছে এখন প্রেম মানেই বন্ধুত্ব। অপরদিকের মানুষটাকে যদি না চিনি, না জানি, যদি কাছাকাছি না আসি, বন্ধুত্বটা না করি… তবে প্রেম সম্পূর্ণ হয় না বলেই আমার মত।

মনের মানুষকে প্রেমদিবসে বিশেষ বার্তা

শ্রুতি: বলার তো অনেক কিছুই থাকে। তবে যদি বলতেই বলেন, বলব: পাশে থেকো। যে কোনও পরিস্থিতিতে, যে কোনও সমস্যায়, সমাধানে, আনন্দে, দুঃখে পাশে থাকাটা খুব জরুরি। কীভাবে আছ সেটা জরুরি নয়, কেবল পাশে থাকাটা জরুরি। অর্থ দিয়ে বা ‘আমি আছি’ মুখে বলে নয়, সময়ে-অসময়ে আমার পাশে মানসিকভাবে থেকো।

গৌরব: দেখুন, আমি তো সিঙ্গল। তবে আমি ভবিষ্যতে আমার কোনও ভাল বন্ধুকেই বিয়ে করব। এখন আমি আর প্রেমিকার খোঁজ করব না। আমি এখনকার দিনে আর প্রেমিকা খুঁজতে চাইও না। যে আমার ভাল বন্ধু হবে, যার সঙ্গে আমার মনে হবে জীবনটা বাঁচার মতো বাঁচতে পারছি, তাঁরই সঙ্গে থাকব। প্রেমটা শুরুতেই হয়ে গেলে খুব সমস্যা। আমার ধারণা তাই বন্ধুত্বই শেষ কথা। তুমি যদি বন্ধু না হতে পারো, তবে বিয়ের পিড়ি পর্যন্ত পৌঁছতেই পারবে না।