Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘সামিল হোন টেকনিশিয়ানরাও, নিয়মের হাঁসফাঁসে শুটিং বন্ধ রাখলে ইন্ডাস্ট্রিটা যে মরে যাবে…’

প্রসঙ্গত, এর আগেই বাড়ি থেকে শুট চালানোর কারণে কয়েকজন প্রযোজককে চিঠি পাঠিয়েছিল ফেডারেশন। সেই চিঠির ভাষা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তী।

'সামিল হোন টেকনিশিয়ানরাও, নিয়মের হাঁসফাঁসে শুটিং বন্ধ রাখলে ইন্ডাস্ট্রিটা যে মরে যাবে...'
বাড়ি থেকেই শুট।
Follow Us:
| Updated on: May 30, 2021 | 8:33 PM

সরগরম ইন্ডাস্ট্রি। একদিকে বাড়ি থেকে শুট নিয়ে আপত্তি ফেডারেশনের। অন্যদিকে ফেডারেশনের এই আপত্তিতে আবার আপত্তি প্রোডিউসারস গিল্ডের। ফেডারেশনের বক্তব্য, বাড়ি থেকে শিল্পীরা শুট চালালে ক্ষতি হবে টেকনিশিয়ানদের। অন্যদিকে প্রযোজকদের একটা বড় অংশের বক্তব্য যদি বাড়ি থেকেও শুটিং বন্ধ রাখা হয় তবে গোটা টলিউড ইন্ডাস্ট্রিরই শোচনীয় দশা হতে চলেছে।

তর্ক বিতর্কের মাঝেই এ দিন এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনের ডাক দিয়েছিল প্রোডিউসারস গিল্ড (ওয়েলফেয়ার অ্যাসোশিয়েশন অফ টেলিভিশন প্রোডিউসার (WATP)। ওই সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন প্রযোজক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সুশান্ত দাস, সানি ঘোষ সহ নামজাদা প্রযোজক।

লকডাউনের মেয়াদ বাড়ায় বেশিরভাগ ধারাবাহিকের শুট হচ্ছে বাড়ি থেকেই। যে সব ধারাবাহিক এখনও ব্যাঙ্কিংয়ের উপর ভরসা করে কাজ চালিয়েছেন , সূত্রের খবর, তাঁদেরও ব্যাঙ্কিং শেষ হয়ে আসছে ক্রমশ। তাই ইন্ডাস্ট্রি সচল রাখতে প্রযোজকদের একড়া বড় অংশ তাই তাকিয়ে রয়েছেন ‘শুট ফ্রম হোম’-এর দিকেই। আর ফেডারেশনের আপত্তি এখানেই। তাঁদের মতে এ ভাবে বাড়ি থেকে শুট করায় আখেরে ক্ষতি হচ্ছে টেকনিশিয়ানদের। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে প্রযোজক শৈবাল বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই বলা হচ্ছে প্রযোজকরা নাকি নিজেদের লাভের জন্য শুটিং চালাচ্ছেন। ফেডারেশনকে বলতে চাই, গত বছর লকডাউনের সময় অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে, তাই এ বারেও যদি শুট না করে বসে থাকা হয় তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বাইরে শুটিং করতে বলবেন। বলছেনও। সেক্ষেত্রে ক্ষতি কিন্তু টেকনিশিয়ানদেরও হবে।” তাই প্রযোজকরা টেকনিশিয়ানদের বাদ দিয়ে শুটিং করার কথা ভাবছেন এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে টলিপাড়ার তাবড় পরিচালকরা জানান, টেকনিশিয়ানরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই শুট ফ্রম হোমের কনসেপ্টে সামিল হোন, তা মন থেকে চাইছেন তাঁরা।

shooting

প্রতীকী ছবি।

আরও পড়ুন-বাড়িতেই চলছে শুটিং, চিঠি পাঠাল ফেডারেশন; পাল্টা জবাব প্রযোজকদের

কিন্তু প্রশ্ন হল, কীভাবে? এই মুহূর্তে যে সব ধারাবাহিকে বাড়ি থেকেই শুটিং চলছে সেই সব ধারাবাহিকের মেকআপ থেকে চুলের সাজসজ্জা নিজেরাই করেছেন শিল্পীরা। প্রযোজকদের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে যদি হেয়ার ড্রেসার এবং মেকআপ আর্টিস্টদের মধ্যে যাঁদের বাড়ি অভিনেতা অভিনেত্রীদের বাড়ির কাছে তাঁরা যদি শিল্পীদের সাহায্য করেন তবে টেকনিশিয়ানদেরও কাজের সুরাহা হবে। এখানেও রয়েছে একটি সমস্যা। সরকার বলেছে আপদকালীন পরিস্থিতি ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোনো যাবে না। শুটিং যেহেতু ইমারজেন্সি সার্ভিসের ক্ষেত্রে পড়ে না, সেক্ষেত্রে মেকআপ আর্টিস্ট এবং হেয়ার ড্রেসাররা রাস্তায় বেরলে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

যদিও, প্রোডিউসারস গিল্ডের তরফে জানানো হয়েছে, এমতাবস্থায় প্রয়োজনে তাঁদের জন্য ই-পাসেরও ব্যবস্থা করা হবে। প্রযোজক সুশান্ত দাসের কথায়, “টেকনিশিয়ানদের কী কী সমস্যা হয় সেটা আমরা জানি। আমারা আজ যারা প্রযোজক তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ কোনও না কোনও সময় টেকনিশিয়ান ছিলাম। তাই তাঁদের অসুবিধে হয় এমন কিছু কেন করতে যাব। ভুল প্রচার করা হচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে। ওঁদের ভুল বোঝানো হচ্ছে।” যে সব কলাকুশলী এই মুহূর্তে কাজ করতে পারছেন না তাঁদের আগের বারের মতো প্রাপ্য সাম্মানিকও দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ওই সংস্থার পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন: লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধিতে ধারাবাহিকের শুটিং হবে বাড়ি থেকেই? কী জানাচ্ছেন পরিচালক-প্রযোজকরা

প্রসঙ্গত, এর আগেই বাড়ি থেকে শুট চালানোর কারণে কয়েকজন প্রযোজককে চিঠি পাঠিয়েছিল ফেডারেশন। সেই চিঠির ভাষা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। Tv9 বাংলাকে তিনি বলেছিলেন, “আমি আমার চিঠিতে সাফ লিখেছি, ফেডারেশনের চিঠির ভাষা আমার পছন্দ হয়নি। যে ভাষায় আমাকে চিঠিতে লিখেছে, সেটার প্রতিবাদ করেছি। ব্যাপারটা এমনভাবে দাঁড় করানো হচ্ছে, যেন প্রাইভেটে শুটিং করে সকলকে বঞ্চিত করি আমরা।” স্নেহাশিসের কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে এ দিন সাংবাদিক বৈঠকেও শৈবাল-সুশান্ত-সানিসহ টলিপাড়া নামজাদা প্রযোজকরা একজোটে বলেন, “নিয়েমের হাঁসফাঁসে কাজটাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কেন ওরা বুঝতে পারছেন না ব্যক্তিগত লাভ ক্ষতি নয়, এই মুহূর্তে শুটিং বন্ধ রাখলে গোটা ইন্ডাস্ট্রিটাই মরে যাবে। চ্যানেল বলবে ঝাড়খণ্ড বা ওড়িশায় গিয়ে শুটিং করতে। তাই ‘চোখ রাঙানি’ বা শুটিং বন্ধ রাখার প্রচ্ছন্ন হুমকি নয় আমরা চাই ফেডারেশনও এগিয়ে আসুক। সবাই মিলে একসঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।”

প্রযোজকদের এই বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান রবিবার বিকেলে ফেডারেশনের সদস্যদের সঙ্গে তাঁর একটি বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকের পরেই এই মুহূর্তে তাঁদের ভাবনা-পরিকল্পনার কথা জানাতে পারবেন তাঁরা।