Risk of Early Death: আয়ু আর কত বছর? জানাবে এই ১০ সেকেন্ডের এক পায়ে দাঁড়ানোর পরীক্ষা!

Inability To Balance: যে সমস্ত মানুষ অন্তত ১০ সেকেন্ড একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না তাঁদের যে কোনও কারণে অকালে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে! গবেষকদের পরামর্শ, নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে নিয়মিত এই ‘ভারসাম্যের পরীক্ষা’ করুন।

Risk of Early Death: আয়ু আর কত বছর? জানাবে এই ১০ সেকেন্ডের এক পায়ে দাঁড়ানোর পরীক্ষা!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 24, 2022 | 4:27 PM

‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে/ সব গাছ ছাড়িয়ে/ উঁকি মারে আকাশে।’— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তালগাছ শীর্ষক এই ছড়া আমরা সবাই পড়েছি। জানলে অবাক হবেন দেশীয় তালগাছ মোটামুটি গড়ে ৭০ থেকে ৮০ বছর বাঁচে। কিছু মেক্সিকান তালগাছের আবার গড় আয়ু ১০০ বছর! তবে কি এক পায়ে দাঁড়ানোর দক্ষতাই তালগাছকে করেছে দীর্ঘায়ু (longevity)? ভাবছেন এ আবার কেমন প্রশ্ন! আসলে এমন আজগুবি জিজ্ঞাসার পিছনে রয়েছে একটি সমীক্ষা (Study)। ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এক পায়ে দাঁড়ানোর দক্ষতার উপর নির্ভর করতে পারে একজন ব্যক্তির আয়ু! ওই স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, যে সকল ব্যক্তি একাটানা ১০ সেকেন্ডে এক পায়ে খাড়া হতে ( One Leg for 10 Seconds) অসমর্থ হন তাঁদের আগামী দশ বছরের মধ্যে ইহলোকের লীলা সাঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা থাকে দ্বিগুণ!

ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনে প্রকাশিত ওই গবেষণা অনুসারে, যে সমস্ত মানুষ অন্তত ১০ সেকেন্ড একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না তাঁদের যে কোনও কারণে অকালে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে! গবেষকদের পরামর্শ, নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে নিয়মিত এই ‘ভারসাম্যের পরীক্ষা’ করুন। এই অভূতপূর্ব সমীক্ষাটি গত ১২ বছর ধরে ৫১ থেকে ৭৫ বছর বয়সি ১৭০২ জন ব্যক্তির উপর করা হয়েছে। অর্থাৎ সেই ২০০৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ওই ব্যক্তিরা ছিলেন ব্যালেন্স টেস্ট স্টাডির আওতাধীন! সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের বাঁ পায়ে দাঁড়িয়ে ডান পায়ের গোড়ালির উপর বাঁ পায়ের চেটো স্পর্শ করতে বলা হয়েছিল। দুই পা অদলবদল করে এভাবে তিনবার একপায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। গবেষকরা জানাচ্ছেন, বয়স, লিঙ্গ এবং অন্যান্য শারীরিক অবস্থার বিষয়গুলি মাথায় রেখে করা এই সমীক্ষা থেকে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাঁরা জানাচ্ছেন, একপায়ে কোনও সহায়তা ছাড়া ১০ সেকেন্ড দাঁড়াতে অকৃতকার্য হওয়ার অর্থ প্রাণহানির অকালে আশঙ্কা বাড়ছে!

দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে, ২১ শতাংশ ব্যক্তি ওই পরীক্ষায় অসফল হয়েছিলেন। এই পরীক্ষার কয়েক বছরের মধ্যে ১২৩ জন্য ব্যক্তির নানা কারণে মৃত্যু হয়। ‘শারীরিক ভারসাম্য এবং প্রাণহানির আশঙ্কার মধ্যে সম্পর্ক’-এর উপর করা ওই স্টাডি সত্যিসত্যিই সুস্থাস্থ্য পরিমাপের জন্য শারীরিক ভারসাম্য পরীক্ষার প্রতি আরও বেশি গুরুত্ব আরোপ করল বলেই মনে করছেন।

বিশেষজ্ঞরা এও জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্য ভাল রাখতে শারীরিক ভারসাম্য রক্ষার বিবিধ ব্যায়াম করা উচিত। কারণ যতবারই কোনও ব্যক্তি একপায়ে দাঁড়িয়ে কোনও শারীরিক ভঙ্গিমা করবেন, ততবারই তা ব্রেনের কাছে কাছে শারীরিক ভারসাম্য রক্ষার অঙ্ক কষার নতুন সুযোগ এনে দেবে। ফলে ব্রেনের নিউরোনের মধ্যে নতুন যোগাযোগ তৈরি হবে। সেইসঙ্গে কান, চোখ, অস্থিসন্ধি ও পেশির মধ্যে যোগাযোগ আরও দৃঢ় হতে থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা এও বলছেন, নব্বইয়ের দশকে কিছু গবেষক ৫০ বছর বয়সি ২৭৬০ জনের উপর একটি পরীক্ষা করেছিলেন। এই পরীক্ষার মধ্যে ছিল— ‘তাদের কোনও কিছু পাকড়ে রাখার ক্ষমতা’, ‘এক মিনিটের মধ্যে তারা বসা অবস্থা থেকে কতবার দাঁড়াতে পারছেন’, ‘চোখ বন্ধ করে কোনও অবলম্বন ছাড়া একপায়ে দাঁড়াতে পারছেন কি না’ ইত্যাদি বিষয়ে। ওই স্টাডিতে সুস্বাস্থ্য পরিমাপ করার পক্ষে ‘ব্যালেন্স টেস্ট’ সবচাইতে উপরের সারিতে উঠে আসে। ওই পরীক্ষার ১৩ বছর পরে দেখা যায় যে সকল ব্যক্তি ২ সেকেন্ডর বেশি দাঁড়াতে পারেননি তাঁদের তিনগুণ বেশি আগে মৃত্যু হয়েছে!

অতএব গবেষণার সারমর্ম হল, যার যত ভালো শারীরিক ভারসাম্য বজায় থাকবে, তিনি তত বেশিদিন সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারবেন। আয়ুও বাড়বে!