রোজকার জীবনে এই ৫ বাজে অভ্যেসের কারণেই হতে পারে কর্কটরোগ! সাবধান হোন এখনই…
প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করুন। তাতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও সঠিক ওজন বজায় রাখা সম্ভব হয়।
উন্নত ও ধনী দেশগুলিতে বসবাসকারী মধ্য বয়স্ক ও প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে হৃদরোগের থেকে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হচ্চেন কর্কটরোগে। গবেষণা বলছে, ১০জনের মধ্যে ৪ জনের মধ্যে ক্যানসার রোগের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। প্রতিবছর ৬ লক্ষ মানুষ কর্কটরোগের শিকার হয়ে মারা যান। তবে চিকিত্সকবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্যানসার রোগ সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধ্য। তাই সাবধানতা ও কিছু নিয়ম মেনে চললে এই মারণরোগকে অনায়াসেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
অতিরিক্ত ধূমপান করা উচিত নয়
ধূমপান শুধু নয়, যে কোনও ধরনের তামাক ব্যবহার ক্যানসারকে আরও সঙ্গী করার প্রবণতা দেখা যায়। ধূমপান ফুসফুস, মুখ, গলা, স্বরযন্ত্র, অগ্ন্যাশয়, মূত্রাশয়, জরায়ু ও কিডনি-সহ আরও বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তামার চিবানো মুখগহ্বর ও অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের সঙ্গে যুক্ত। অন্যদিকে, আপনি যদি তামাক ব্যবহার নাও করেন, পার্শ্ববর্তী ধূমপানের ধোঁয়া থেকেও আপনার ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
স্বাস্থ্য খাবার না খাওয়া
-ফল ও সবজি খান প্রচুর পরিমাণে। ফল, শাকসবজি, শস্য জাতীয় খাবার -এগুলি খাওয়ার অভ্যেস রাখুন।, একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে মাংস, ডিম,মাছ-সহ উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাবেন তো বটেই, কিন্তু সেটি বেশি পরিমাণে নয় একেবারেই।
-অ্যালকোহলের প্রতি আসক্তি থাকলে স্তন, কোলন, ফুসফুস, কিডনি ও লিভারের ক্যানসারের মতো মারণরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত অ্যালকোহল পান করলে, দিনে দিনে তার মাত্রা বেড়ে যায়।
-প্রসেসড মাংস এড়িয়ে চলুন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার সংস্থা ইন্টারন্যাশানাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রচুর পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলে নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের প্রবণতা দেখা যায়। তবে বলা হয়েছে, মহিলারা যদি নিয়মিত এক্সট্রা-ভার্জিন অলিভ ওয়েলের সঙ্গে বাদাম মিক্সড করে খান, তাহলে ব্রেস্ট ক্যানসার রোধ করা সম্ভব হবে।
শারীরিক সক্রিয়তা ও স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন
সঠিক ওজন বজায় না রাখলে স্তন, প্রোস্টেট, ফুসফুস, কোলন ও কিডনির ক্যানসার-সহ বিভিন্ন দরনের ক্যানসারের প্রবণতা দেখা যায়।শারীরিক সক্রিয়তা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ করলে স্তন ক্যানসার ও কোলন ক্যানসারের প্রবণতা হ্রাস হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যাঁরা নিয়মিচ শরীরচর্চা করেন, তাঁদের মধ্যে ক্যানসারের পাশাপাশি অন্যান্য রোগের প্রবণতা কম দেখা যায়। সপ্তাহে কমংপক্ষে ১৫০ মিনিট মডারেট অ্যারোবিক অ্যাক্টিভিটি বা সপ্তাহে ৭৫ মিনিট ভিগোরাস অ্যারোবিক অ্যাক্টিভিটি করার চেষ্টা করতে পারেন। প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করুন। তাতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও সঠিক ওজন বজায় রাখা সম্ভব হয়।
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে নিজেকে রক্ষা করুন
ত্বকের ক্যানসার সাধারন ক্যানসার হলেও এটি সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধ্য।দুপুরের রোদ থেকে এড়িয়ে চলুন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে রোদ বা সূর্যের তাপ থেকে দূরে থাকুন। এই সময় সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব সবচেয়ে শক্তিশালী হয়। চেষ্টা করুন বেশিরভাগ সময় ঘরের ভিতর থাকার, নাহলে যতটা সম্ভব ছায়ায় থাকার চেষ্টা করুন। সানগ্লাস ও ছাতা ব্যবহার করুন। ঘরের বাইরে গেলে সুতির আরামদায়ক পোশাক পরুন। হাতে বা পায়ে যাতে ট্যান না পড়ে তার জন্য গা-ঢাকা সুতির পোশাক করতে পারেন। বাড়ির বাইরে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন। বর্ষায় মেঘলা দিনেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। দিনে দুবার বা প্রতি ২ ঘন্টা অন্তর সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে সুফল পেতে পারেন।
টিকা গ্রহণ করুন
ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য নির্দিষ্ট কিছু ভাইরাল সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা গ্রহণ করতে পারেন। তবে এই টিকা গ্রহণ করলে অবশ্য ডাক্তারের পরামর্শ মেনে নেবেন। শরীরের হেপাটাইটিস বি-এর প্রভাব বাড়লে লিভারের ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ায়। তাই প্রাপ্তবয়স্কদের হেপাটাইটিস বি-র টিকা গ্রহণ করার সুপারিশ করেন চিকিত্সকরা।
আরও পড়ুন: Chikungunya fever:অতিমারির মধ্যেই বাড়ছে চিকুনগুনিয়া রোগ! ঘরে ও বাইরে মশার উপদ্রব কমাবেন কীভাবে?