নাক খুঁটলে কি করোনা হয়? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা

ভাইরোলজিস্ট সুমন পোদ্দারের কথায় এমনটা হতে পারে। তবে বাতাসের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা এখন অনেক বেশি।

নাক খুঁটলে কি করোনা হয়? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা
নাকে হাত দিলে কি করোনা ছড়াতে পারে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 26, 2021 | 9:24 AM

প্রীতম দে

সুমনের গান মনে পড়ে। ‘ছেড়েছো তো অনেক কিছুই পুরনো অভ্যেস।’

কিছু অভ্যাস বা বদ-অভ্যাস আসলে আমাদের প্রায় সকলেরই আছে। অনেকের কাছে সেইসব অভ্যাস ত্যাগ করা শুধু ‘মুশকিল হি নেহি না মুমকিন ভি হ্যায়’। তবে প্রবাদে বলে মানুষ চাইলে নাকি পারে না এমন কোনও কাজ নেই। কিন্তু তাও এইসব বদভ্যাস যেন অনেকের জীবনেই একদম জড়িয়ে গিয়েছে। তার মধ্যেই একটি হল নাক খোঁটা। শুনেই মুখটা কুঁচকে নিলেন তো? নেওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ এটা শুধু বদভ্যাস নয়, বেশ নোংরা অভ্যাস। আর আজকাল কিন্তু এমন বদভ্যাসের কারণে আপনি করোনার গ্রাসেও পড়তে পারেন।

ছোট থেকে বড়, পুরুষ থেকে মহিলা অনেকেরই কিন্তু নাক খোঁটার বদভ্যাস রয়েছে। অন্য সময় হলে হয়তো এ নিয়ে রসিকতা করা যেত। কিংবা গোদা বাংলায় কাউকে ‘প্যাক’ মারা যেত। তবে এখনকার পরিস্থিতি অনুযায়ী এই ব্যাপারটা মোটেই মজার নয় । বিশেষত যখন করোনা তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্কে প্রহর গুনছে জনজাতি তখন এই বদভ্যাসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা একান্ত জরুরি। কারণ নাক খোঁটার প্রবণতা ছোটদের মধ্যেই বেশি। আর করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের প্রবণতা বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

কিন্তু বাচ্চারা কেন নাকে হাত দেয় বা নাক খোঁটে?

এই প্রসঙ্গে মনোবিদ উদয় চৌধুরি বলছেন, “এটা মনের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত তো বটেই। মনে হলেই আমরা নাক খুঁটি। ছোটদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি। নতুন ভাবে বাঁচতে গেলে সতর্ক থাকতে হবে।”

এই প্রসঙ্গে কান-নাক-গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অভীক জানা (সার্জেন) বলছেন, “আমরা কেউ বোধহয় আলাদা করে ভাবিনি। নাক খোঁটা মানে আঙুলটা নাকের ভেতর প্রবেশ করিয়ে ভাইরাসকে আরও অতিরিক্ত সাহায্য করা। সংক্রমণের আশঙ্কা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় এই বদভ্যাস।”

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর পলাশ ব্যানার্জির কথায়, “শিশুরা এখনও ভ্যাকসিন পায়নি। তাদের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে ৯ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। শিশুরা নাক খুঁটবেই। তাই তাদের হাত পরিষ্কার রাখা একমাত্র উপায়।”

নাক খুঁটলে বা নাকে হাত দিলেই কি করোনা হবে?

ভাইরোলজিস্ট সুমন পোদ্দার বলছেন, “করোনা আসলে রেসপিরেটরি ভাইরাস। এরা নাকের পিছনের অংশে প্রথমে বাসা বাঁধে। একে বলে nasofaring-orofaring। এবার করোনাভাইরাস নাকে পৌঁছবে কীভাবে? মূলত হাওয়ার মাধ্যমে অর্থাৎ airborne পদ্ধতিতে নাকে যেতে পারে এই ভাইরাস। কিন্তু ধরা যাক কারও হাতে এই ভাইরাসের ছোঁয়া লেগেছে, তাহলে তিনি লাকে হাত দিলে ভাইরাস সরাসরি নাকে ঢুকতে পারবে। হাতের মাধ্যমে নাকে করোনাভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। অর্থাৎ নাক খুঁটলে করোনা হতে পারে। কিন্তু বাতাসের মাধ্যমে অর্থাৎ airborne পদ্ধতিতে ভাইরাস শ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকে সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবণতা অনেক বেশি। শুধু নাক কেন, চোখ চুলকালে সেখান থেকেও ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে।

আরও পড়ুন- আসছে করোনার তৃতীয় ঢেউ! ঘরবন্দি শিশুদের মন ও শরীর সুস্থ রাখতে ওয়ার্কআউট করান