‘নিখোঁজ’ কেন্দ্রীয়ভাবে সুরক্ষিত ৫০টি জাতীয় গুরুত্বের স্মৃতিস্তম্ভ: সরকার
50 ASI protected monuments missing: নিখোঁজ স্মৃতিস্তম্ভগুলির মধ্যে ১১টি উত্তর প্রদেশের। পাশাপাশি দিল্লি এবং হরিয়ানায় দুটি করে এবং অসম, পশ্চিমবঙ্গ, অরুণাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের একটি করে স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।
নয়া দিল্লি: ভারতের মোট ৩,৬৯৩টি স্মৃতিস্তম্ভকে সুরক্ষিত রাখে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, এর মধ্যে ৫০টি স্মৃতিস্তম্ভ ‘নিখোঁজ’ বলে সম্প্রতি সংসদকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। সংস্কৃতি মন্ত্রক জানিয়েছে, এই জাতীয় গুরুত্বের স্মৃতিস্তম্ভগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ বা এএসআই (ASI)। কিন্তু, দ্রুত নগরায়ন, জলাধার এবং বাঁধের জলে ডুবে যাওয়া, দুর্গম অবস্থান, ঘন বনাঞ্চলে তাদের সঠিক অবস্থান না জানার মতো বেশ কিছু কারণে ওই ৫০টি স্মৃতিসৌধ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় বলে জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রক।
‘ভারতে নিখোঁজ স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্মৃতিস্তম্ভের সুরক্ষা সম্পর্কিত সমস্যা’ নামে, গত ৮ ডিসেম্বর, পর্যটন ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রক। সেই প্রতিবেদন অনুসারে নিখোঁজ স্মৃতিস্তম্ভগুলির মধ্যে ১১টি রয়েছে উত্তর প্রদেশের। এর পাশাপাশি দিল্লি এবং হরিয়ানায় দুটি করে স্মৃতিসৌধ রয়েছে৷ তালিকায় অসম, পশ্চিমবঙ্গ, অরুণাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের একটি করে স্মৃতিস্তম্ভও অন্তর্ভুক্ত আছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার মতে এই স্মৃতিসৌধগুলির মধ্যে ১৪টি হারিয়ে গিয়েছে দ্রুত নগরায়নের জন্য। ১২টি ডুবে গিয়েছে বাঁধ বা জলাধারের জলে। বাকি ২৪টির সঠিক অবস্থানগুলি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এএসআই-এর এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রেই এই হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিসৌধগুলি হল কোনও শিলালিপি বা কোনও মাটি বা পাথরের ফলক। এগুলির কোনও নির্দিষ্ট ঠিকানা নেই। তাই সহজেই এগুলি এক জায়গা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এগুলিকে সনাক্ত করাও বেশ কঠিন। তিনি আরও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয়ভাবে সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভগুলির অধিকাংশই গত শতাব্দীর তিন, চার এবং পাঁচের দশকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। স্বাধীনতার পরের দশকগুলিতে, সেই স্মৃতিসৌধগুলি সংরক্ষণ করার বদলে আরও নতুন স্মৃতিস্তম্ভগুলি আবিষ্কারের দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছিল। এছাড়া, একটি সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশে ঐতিহ্যের সংরক্ষণের থেকে সরকারের অগ্রাধিকার ছিল স্বাস্থ্য এবং পরিকাঠামোর উন্নয়নে।
স্বাধীনতার পর ২০১৩ সালে প্রথম এই স্মৃতিসৌধগুলির খোঁজ করা হয়। সেই সময় ৯২টি স্মৃতিস্তম্ভকে ‘নিখোঁজ’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। সংসদীয় স্থায়ী কমিটি জানিয়েছে, সেই ৯২টি নিখোঁজ স্মৃতিস্তম্ভের মধ্যে, ৪২টিকে নতুন করে চিহ্নিত করতকে পেরেছে এএসআই।