আকাশফাটা আওয়াজ শুনে ভগবতী কালীর মন্দিরে ছুটে গিয়েছিলেন অনীতা, দুর্যোগ থামতে বেরিয়ে দেখলেন শুধু তাঁর বাড়িটাই…

Himachal Pradesh: যে একটি বাড়ি রক্ষা পেয়েছে, তা অনিতা দেবীর। বুধবার রাতের বিপর্যয়ের স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, "আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ একটা গগনভেদী শব্দে ঘুম ভাঙে। ঘরের দরজা খুলে উকি মারতেই দেখি, আশেপাশের সমস্ত বাড়ি জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে।"

আকাশফাটা আওয়াজ শুনে ভগবতী কালীর মন্দিরে ছুটে গিয়েছিলেন অনীতা, দুর্যোগ থামতে বেরিয়ে দেখলেন শুধু তাঁর বাড়িটাই...
হড়পা বানে ধুয়ে মুছে সাফ গোটা গ্রাম।Image Credit source: PTI
Follow Us:
| Updated on: Aug 03, 2024 | 12:10 PM

সিমলা: রাতে গগনভেদী একটা শব্দ। চোখের নিমেষে তারপরই ধুয়েমুছে সাফ সব। গোটা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। রয়ে গিয়েছে শুধু একটাই বাড়ি। অনিতা দেবীর বাড়ি। বিপর্যয়ের পরেরদিন ঘরে ফিরতেই যে অভিজ্ঞতা হয়, তা বলে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। তবুও তিনি সেদিনের ঘটনার টুকরো কিছু চিত্র বর্ণনা করেন, যার মাধ্যমে আন্দাজ করা যায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে।

বুধবার মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গোটা হিমাচল প্রদেশ। ভেসে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। পাহাড় ভেঙে নেমে এসেছে, ধুয়ে মুছে গিয়েছে জনপদ। হিমাচল প্রদেশের সামেজ গ্রামও এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায়নি। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও ধসে গ্রামের একটি বাড়ি বাদ দিয়ে সমস্ত বাড়িই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

যে একটি বাড়ি রক্ষা পেয়েছে, তা অনিতা দেবীর। বুধবার রাতের বিপর্যয়ের স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ একটা গগনভেদী শব্দে ঘুম ভাঙে। ঘরের দরজা খুলে উকি মারতেই দেখি, আশেপাশের সমস্ত বাড়ি জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে। ভয়ে-আতঙ্কে আমরা গ্রামের ভগবতী কালী মাতা মন্দিরে গিয়ে আশ্রয় নিই। রাতভর ওখানেই ছিলাম আমরা।”

কাঁপা কাঁপা স্বরে তিনি আরও বলেন, “ভোরবেলা যখন আমরা ফিরি, তখন দেখি শুধু আমাদের বাড়িটাই টিকে রয়েছে। বাকি সবকিছু ধুয়েমুছে গিয়েছে। আমি জানি না কাদের সঙ্গে থাকব এরপর।”

ওই গ্রামেরই আরেক বাসিন্দা বকশি রাম, যিনি সমেজ গ্রামের সবথেকে বয়স্ক বাসিন্দা, তিনি নিজের দুঃখ ভাগ করে নিয়েছেন। চোখে জল নিয়েই তিনি বলেন, “আমার পরিবারের ১৪-১৫ জন- সবাই জলে ভেসে গিয়েছে। রাত দুটোর সময় বান এসেছিল। আমি তখন রামপুরে ছিলাম, তাই বেঁচে গিয়েছি। ধস-হড়পা বানের খবর পেয়ে ভোর ৪টের সময়ই আমি ছুটে যাই। দেখি, গ্রামে আর কিছু নেই। আমি এখনও পরিবারের সদস্যদের খুঁজছি, ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে যদি কাউকে পাওয়া যায়…”

মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও তার জেরে হড়পা বানে সমেজ গ্রামের ৫৩ জন বাসিন্দা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ৬ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। হড়পা বান, ধস নেমেছে কুলু, মানালি ও সিমলাতেও। রামপুরে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।