Assam Flood: টানা বৃষ্টিতে মৃত্যুপুরী অসম, বন্যার কবলে প্রায় ২ লাখ মানুষ, ঘরছাড়া ৩৩ হাজার

Assam Rain: লাগাতার বৃষ্টির জেরে অসমের ২০ টি জেলার প্রায় ২ লাখ মানুষ বন্যার কবলে। প্রায় ৩৩ হাজার মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। ১৬ হাজার হেক্টরেরও বেশি চাষের জমি বন্যার জলে তলিয়ে গিয়েছে।

Assam Flood: টানা বৃষ্টিতে মৃত্যুপুরী অসম, বন্যার কবলে প্রায় ২ লাখ মানুষ, ঘরছাড়া ৩৩ হাজার
ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গোটা রেলস্টেশন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 17, 2022 | 12:10 AM

গুয়াহাটি : প্রবল বৃষ্টিতে তছনছ হয়ে গিয়েছে অসম ও অরুণাচল প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। অরুণাচল প্রদেশে পাঁচজন এবং অসমে দুই জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের থেকে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, কাছাড় জেলায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই নিয়ে শুক্রবার থেকে এখনও পর্যন্ত অসমে মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টির জেরে অসমের ২০ টি জেলার প্রায় ২ লাখ মানুষ বন্যার কবলে। প্রায় ৩৩ হাজার মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। ১৬ হাজার হেক্টরেরও বেশি চাষের জমি বন্যার জলে তলিয়ে গিয়েছে।

অরুণাচল প্রদেশের অবস্থাও ভয়ঙ্কর। সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, রবিবার থেকে এখনও পর্যন্ত অরুণাচল প্রদেশে দুটি পৃথক ভূমিধসে মোট পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ছয় জন। সোমবার ৪১৫ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ইটানগর এবং নাহারলাগুনের মধ্যে মোদিরিজো গ্রামে বেশ কয়েকটি বাড়ি জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। এদিকে শনিবার থেকে অসমের বারাক ভ্যালিও কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়েছে। ডিমা হাসাও জেলার রাস্তা এবং রেলপথে যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়ে গিয়েছে টানা বৃষ্টির কারণে। সোমবারও এই এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে, ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়েই পড়ে রয়েছে। এই রুটের মাধ্যমে মূলত ট্রেন এবং ট্রাকগুলি করে মিজোরাম এবং ত্রিপুরায় খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে এমন অবস্থা আরও কিছুদিন চললে, উত্তর পূর্বের এই দুই রাজ্যে খাবারের ঘাটতি দেখা দেওয়ার একটি উদ্বেগ রয়েছে।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মূখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে জানিয়েছেন, “আমরা ডিমা হাসাও জেলার ডিটোকচেরা এবং নিউ হালফ্লং-এ আটকে পড়া দুটি ট্রেনের সমস্ত যাত্রীদের বের করে আনতে সক্ষম হয়েছি। ওই এলাকায় এখনও প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে এবং এর কারণে রবিবার পর্যন্ত যে ২৬ টি জায়গায় রেলপথে সমস্যা তৈরি হয়েছিল, তার সঙ্গে আরও ২৭ টি নতুন করে সমস্যার খবর পাওয়া গিয়েছে। এখনও অবধি, আমরা ২৪ মে পর্যন্ত ২৮ টি ট্রেন সম্পূর্ণ বাতিল করেছি এবং ২৬টি ট্রেন আংশিকভাবে বাতিল করেছি।” তিনি আরও বলেন, “দক্ষিণ অসম, মণিপুর, ত্রিপুরা এবং মিজোরামে ক্ষতিগ্রস্ত রেল লাইন মেরামত এবং ট্রেন পরিষেবা পুনরায় চালু করার চেষ্টা চলছে। নিউ হালফ্লং স্টেশন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনগুলি পুনরায় ঠিক করার কাজ শুরু হয়েছে এবং সোমবার আমরা ৫৩ টি জায়গার মধ্যে ১১ টি জায়গায় মেরামত করতে পেরেছি।”

ডিমা হাসাও-এর বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিক রিক্কি বি ফুকন জানিয়েছেন, জেলার ৬১টি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ সোমবার, হাফ্লং-জাটিঙ্গা রাজ্য সড়কের একটি অংশ নতুন করে ভূমিধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গুয়াহাটির স্থানীয় আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর পূর্বের চারটি রাজ্যে ১ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। মেঘালয়ে ১১৫ শতাংশ বেশি, অসমে ৪৯ শতাংশ বেশি, মণিপুরে ২৭ শতাংশ বেশি, নাগাল্যান্ডে ১৮ শতাংশ বেশি এবং অরুণাচল প্রদেশে ১১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ওই একই সময়ের মধ্যে ত্রিপুরায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৪ শতাংশ কম এবং মিজোরামে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪১ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার কেন্দ্রীয় জল কমিশনের (CWC) একটি বুলেটিন অসমের কপিলি নদীতে এক “চরম বন্যা পরিস্থিতির” সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং নগাঁও জেলার কামপুরে কপিলি নদীর জলস্তর বিপদসীমার প্রায় 2 মিটার উপর দিয়ে বইছে। কাছাড় জেলার অন্নপূর্ণাঘাট ও বদরপুরঘাটে বারাক নদী, করিমগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জে কুশিয়ারা নদী এবং জোড়হাট জেলার নেমাতিঘাটে ব্রহ্মপুত্র নদের জন্য মারাত্মক বন্যা পরিস্থিতির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।