Bihar: ক্লাসে আসে না শিক্ষার্থীরা, অধ্যাপক ফিরিয়ে দিলেন বেতনের ২৪ লক্ষ টাকা!

গপোী ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিহারের মুজফ্ফরপুরে নীতীশেশ্বর কলেজে চাকরি পাওয়ার পর থেকে ৩৩ মাস একজনও শিক্ষার্থী ক্লাস করেনি। এরপরই 'বিবেকের ডাকে' ৩৩ মাস ধরে পাওয়া বেতনের সবটাই ফিরিয়ে দিলেন এক প্রফেসর।

Bihar: ক্লাসে আসে না শিক্ষার্থীরা, অধ্যাপক ফিরিয়ে দিলেন বেতনের ২৪ লক্ষ টাকা!
৩৩ মাস ধরে না পড়িয়ে বেতন গ্রহণ, বিবেক দংশনে ভুগছিলেন লালন কুমার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 07, 2022 | 4:58 PM

পটনা: ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চাকরিটা পেয়েছিলেন লালন কুমার। বিহারের মুজফ্ফরপুরে নীতীশেশ্বর কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। বিষয় হিন্দি ভাষা। চাকরি পাওয়ার পর থেকে ৩৩ মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু, একটি ক্লাসও করতে আসেনি একজনও শিক্ষার্থী। আর এরপরই ‘বিবেকের ডাকে’ এই ৩৩ মাস ধরে পাওয়া বেতনের সবটাই কলেজ কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী লালন কুমার। যার পরিমাণ প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা! তবে, তাঁর এই পদক্ষেপ শুধুই বিবেক দংশন থেকে, এমনটা মনে করছেন না কলেজের অধ্যক্ষ। তাঁর মতে এর পিছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে লালন কুমারের।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘না পড়িয়েই বেতন পকেটস্থ করা’ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিবেক দংশনে ভুগছিলেন লালন। নীতীশেশ্বর কলেজ, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘বিআর আম্বেদকর বিহার ইউনিভার্সিটি’র আওতাধীন। গত মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিআরএবিইউ-এর রেজিস্ট্রারের হাতে লালন কুমার ২৩,৮২,২২৮ টাকার একটি চেক তুলে দেন। বিআর আম্বেদকর বিহার ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার আরকে ঠাকুর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।

বুধবার, এই বিষয়ে লালন কুমার বলেছেন, ‘আমার বিবেকই আমাকে শিক্ষা না দিয়ে বেতন নিতে দেয়নি। এমনকি, কোভিড মহামারি চলাকালীন যে অনলাইন ক্লাস চলছিল, সেই সময়ও হিন্দি ভাষার ক্লাস করতে হাতো গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। আমি যদি পাঁচ বছর এইভাবে শিক্ষকতা না করে বেতন নিয়ে যাই, তবে সেটা আমার কাছে আমার অ্যাকাডেমিক মৃত্যুর সামিল হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসেই চিনের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্বে। ২০২০ সালের জানুয়ারির শেষে ভারতে ঢুকে পড়েছিল করোনা। মার্চে জারি করা হয়েছিল লকডাউন। ফলে, গোটা দেশ থমকে গিয়েছিল। লালন চাকরি পাওয়ার কিছুদিন পরই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল স্কুল-কলেজ। শুরু করা হয়েছিল অনলাইন ক্লাস। তারপর ফের অফলাইন ক্লাস চালু হয়েছে। তবে, লালনের ক্লাসে কখনই শিক্ষার্থী আসেনি।

১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নীতিশেশ্বর কলেজ। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী নীতিশেশ্বর প্রসাদ সিং। ১৯৭৬ সালে কলেজটিকে বিআরএবিইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় নথিভুক্ত করা হয়েছিল। এই কলেজে শুধুমাত্র কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক স্তরের কোর্স করা যায়। আশপাশের এলাকার বহু মানুষ লালন কুমারের এই পদক্ষেপে মুগ্ধ হলেও, কলেজের অধ্যক্ষ মনোজ কুমার, বেতন ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে লালন কুমারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘শুধু শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি নয়, লালন কুমার তাঁর বেতন ফেরত দিয়েছেন অন্য কারণে। স্নাতক থেকে স্নাতকোত্তর বিভাগে স্থানান্তরিত হতে চান তিনি। বেতন ফেরত দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর চাপ প্রয়োগ করতে চাইছেন। এটা চাপ দেওয়ারই একটা কৌশল ছাড়া কিছু না।’