Bilkis Bano: ‘ফের বিচার ব্যবস্থার দরজায় কড়া নাড়া সহজ ছিল না…’, কাদের জোগানো সাহসে ‘সুপ্রিম’ দরজায় দ্বারস্থ হলেন বিলকিস বানো?

Bilkis Bano Case: বিলকিস বানো বলেন, "ফের একবার উঠে দাঁড়িয়ে বিচার ব্যবস্থার দরজায় কড়া নাড়া আমার জন্য সহজ ছিল না। ওই ব্যক্তিরা (অভিযুক্ত ধর্ষকরা) আমায় ও আমার পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, তাদের মুক্তির খবর শুনে একটা দীর্ঘ সময় আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম।"

Bilkis Bano: 'ফের বিচার ব্যবস্থার দরজায় কড়া নাড়া সহজ ছিল না...', কাদের জোগানো সাহসে 'সুপ্রিম' দরজায় দ্বারস্থ হলেন বিলকিস বানো?
বিলকিস বানো।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 02, 2022 | 7:31 AM

নয়া দিল্লি: ২০০২ সালে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। পেটে সাত মাসের সন্তান। আচমকাই রাজ্যে শুরু হল দাঙ্গা। পরিবারকে নিয়ে কোনও নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার আগেই বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল ‘ওরা’। পরিবারের সকলের চোখের সামনেই ১১ জন মিলে ছিড়ে খেয়েছিল তাঁর শরীর। তবে গণধর্ষণের পরও নিস্তার পাননি। চোখের সামনেই দেখতে হয়েছিল নিজের তিন বছরের মেয়ে সহ পরিবারের সাত সদস্যকে খুন হতে। কথা হচ্ছে বিলকিস বানোর (Bilkis Bano)। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার ঠিক পরেই গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বিলকিস, চোখের সামনে খুন হতে দেখেছিলেন গোটা পরিবারকে। এরপরই শুরু হয় তাঁর আইনি লড়াই। ২০০৮ সালে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ১১ জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতিই গুজরাট সরকারের (Gujarat Government) সিদ্ধান্তে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন অভিযুক্ত ১১ জন। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্রী নন বিলকিসও। গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই তিনি এবার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছেন।

চলতি সপ্তাহের বুধবারই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান বিলকিস বানো। ২০০২ সালে গণধর্ষণ কাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত ১১ জনের সাজার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে তিনি চ্যালেঞ্জ জানান। বিলকিস বানোর আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে এই মামলাকে তালিকাভুক্ত করার অনুরোধ জানান।

ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বিলকিস বানো বলেন, “কোনটা সঠিক ও কোনটা ভুল, তার জন্য আমি আবার দাঁড়িয়ে থাকব এবং লড়াই করব। অভিযুক্তদের সাজার মেয়াদ পূরণ হওয়ার আগেই গুজরাট সরকারের তাদের মুক্তির সিদ্ধান্ত সমাজব্য়বস্থার বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।”

পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিলকিস বানো বলেন, “ফের একবার উঠে দাঁড়িয়ে বিচার ব্যবস্থার দরজায় কড়া নাড়া আমার জন্য সহজ ছিল না। ওই ব্যক্তিরা (অভিযুক্ত ধর্ষকরা) আমায় ও আমার পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, তাদের মুক্তির খবর শুনে একটা দীর্ঘ সময় আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। আমার সন্তানদের, আমার মেয়ের জন্য ভয়ে এবং সবথেকে বড়, আশা হারানোর ভয়ে আমি চলনশক্তি হারিয়েছিলাম। কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আমার জন্য সরব হওয়ায়, আমি আবার ন্যায়বিচারের জন্য লড়ার সাহস পেলাম। আমার নিঃস্তব্ভতার শূন্যতা অন্যদের কণ্ঠস্বরে পূরণ হয়ে গিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আমায় আশা জুগিয়েছে। এই যন্ত্রণা যে একা আমার নয়, তা অনুভব করিয়েছেন। আমি শব্দে বোঝাতে পারব না এই সমর্থন আমার কাছে কতটা গুরুত্ব রাখে।”

তিনি বলেন, “আমি আবার লড়ব। এই লড়াই আমার জন্য, আমার সন্তানদের জন্য এবং সমস্ত মহিলাদের জন্য।”