Himachal Elections: সিমলা সদরে মন্ত্রীর বদলে এই ‘চাওয়ালা’কে প্রার্থী করল বিজেপি
BJP give ticket to a Tea-Seller in Shimla urban: হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে সিমলা (সদর) আসন থেকে গত চারবার নির্বাচিত হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সুরেশ ভরদ্বাজ। এবার তাঁকে সেই আসন থেকে সরিয়ে সঞ্জয় সুদ নামে এক চাওয়ালাকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি।
সিমলা: হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন সিমলা (সদর)। গত চারবার এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী সুরেশ ভরদ্বাজ। রাজ্যের মন্ত্রীও তিনি। কিন্তু, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে, এই কেন্দ্র থেকে তাঁর বদলে বিজেপি প্রার্থী করেছে সঞ্জয় সুদকে। কে এই সঞ্জয় সুদ? দীর্ঘদিনের এই বিজেপি কর্মী, সিমলা শহরে একটি চায়ের দোকান চালান। কী কারণে এই প্রার্থী বদল, সেই বিষয়টা স্পষ্ট নয়।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে সঞ্জয় সুদ জানিয়েছেন, অত্যন্ত গরীব পরিবারে জন্মেছিলেন তিনি। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএস-এর সহায়তাতেই তিনি স্কুলে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন। এরপর কলেজের পড়াশোনা চালানোর জন্য তাঁকে সিমলা বাস স্ট্য়ান্ডে খবরের কাগজ বিক্রি কতে হয়। কলেজে পড়ার সময় তিনি আরএসএস-এর ছাত্র শাখা বিদ্যার্থী পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হন। পাঁচ বছর বিদ্যার্থী পরিষদের সদস্য থাকার পর, তাঁকে সংগঠন ছাড়তে হয়েছিল সেই আর্থিক কারণে। আর তারপরই, ১৯৯১ সালে সিমলায় তাঁর নিজের চায়ের দোকান খুলেছিলেন তিনি।
সিমলা (সদর)-এর বিজেপি প্রার্থী আরও জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারে কেউ রাজনীতি করতেন না। তবে একেবারে ছোট থেকেই সমাজসেবার ভূত চেপেছিল তাঁর মাথায়। ১৯৭৭ সালে স্কুলে পড়াকালীনই জনতা পার্টির প্রার্থী বলকরাম কাশ্যপের হয়ে বুথে বসেছিলেন তিনি। ১৯৮০ সালে বিজেপি গঠনের সময় থেকেই তিনি পদ্মশিবিরের একনিষ্ঠ সৈনিক। একেবারে সাধারণ কর্মী থেকে ধাপে ধাপে পার্টির নেতা হন তিনি। প্রথমে সিমলা সদর মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। তারপর সেই কমিটির সহ-সভাপতি হন তিনি। এরপর তিনি সিমলা জেলায় বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ হন।
এই পদে থাকাকালীনই, সঞ্জয় সুদকে সিমলা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের টিকিট দিয়েছিল তাঁর পার্টি। দুবার কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এরপর, সিমলা শাখার সভাপতি করা হয়েছিল তাঁকে। আর এবার, চারবারের জয়ী প্রার্থী তথা মন্ত্রীকে সরিয়ে তাঁকে বিধানসভা নির্বাচনের টিকিট দেওয়া হল। এএনআই-কে সঞ্জয় সুদ বলেছেন, “বিজেপি আমাকে সিমলা সদরের মতো একটি হট সিট থেকে প্রার্থী করায় আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। মনে হচ্ছে সপ্তম স্বর্গে আছি। আমার মতো দলের একজন ছোট কর্মীর জন্য এটা অত্যন্ত বড় সম্মান। আজ মনে হচ্ছে, বিজেপির জন্য কাজ করার সিদ্ধান্তটা ঠিক ছিল। দলের এই ঋণ আমি কোনওদিনও শোধ করতে পারব না।”
তবে, দলের মন্ত্রীকে সরিয়ে তাঁকে প্রার্থী করায় দলের একাংশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সুরেশ ভরদ্বাজকে সিমলা সদর থেকে সরিয়ে কাসুম্প্তি আসন থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। এই বদল সম্পর্কে বিজেপি মন্ত্রী বলেছেন, “হিমাচল প্রদেশে প্রার্থীদের আসন বদল বাধ্যতামূলক নয়। নিশ্চিতভাবে এই পদক্ষেপ খুবই অদ্ভুত। আমি ১৯৮০ সাল থেকে বিজেপি করি। তার আগে জনতা পার্টিতেও ছিলাম। কাসুম্প্তি, সিমলা থেকে বেশি দূরে নয়। আমার চেনা এলাকাও বটে। তবে, এই আসন বদলের কথা আগে থেকে জানালে সুবিধা হত। হাতে সময় খুব কম। জেতা আসন ছাড়তে গেলে কিছুটা আফসোস তো হবেই, তবে দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিচ্ছি।”
মন্ত্রী মহাশয় ও তাঁর অনুগামীদের অসন্তোষকে অবশ্য বিশেষ পাত্তা দিচ্ছেন না সঞ্জয় সুদ। তিনি বলেন, “আমার সোজা কথা, পদ্ম ফুল যার হাতে রয়েছে, সে কখনও রাগ করতে পারে না। কয়েক মুহূর্তের জন্য কষ্ট পায়। এটা স্বাভাবিক। কাঙ্খিত জিনিস না পেলে হতাশা আসবেই। আমি তাঁদের সবার সঙ্গে দেখা করব। আমার বিশ্বাস, শেষে আমরা সকলে পদ্মের হয়ে কাজ করব এবং সিমলা আসনে জয়ী হব।”