Captain Anshuman Singh: ‘বউমা থাকে না, সব ওই পায়’, সেনার এই নিয়মে বদল চাইলেন শহিদের বাবা-মা
Captain Anshuman Singh: কর্মরত অবস্থায় ভারতীয় সেনার কোনও সদস্যর মৃত্যু হলে, নিয়ম অনুযায়ী তাঁর 'পরবর্তী আত্মীয়' যাকে ইংরাজিতে নেক্সট টু কিন বলা হয়, তিনিই আর্থিক সহায়তা পান। আর্থিক সহায়তার এই মানদণ্ডে পরিবর্তন চাইছেন শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমানের বাবা-মা, রবিপ্রতাপ সিং এবং মঞ্জু সিং।
লখনউ: পুত্রবধূ স্মৃতি সিং বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। মৃত্যুর পর তাঁদের ছেলের বেশিরভাগ অধিকারই তিনিই পেয়েছেন। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের কাছে ছেলের একটিই জিনিস পড়ে আছে, দেওয়ালে ঝোলা ছেলের একটি ছবি। তাই, সেনা সদস্যদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তার নিয়মে বদল চাইলেন শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংয়ের বাবা-মা। কর্মরত অবস্থায় ভারতীয় সেনার কোনও সদস্যর মৃত্যু হলে, নিয়ম অনুযায়ী তাঁর ‘পরবর্তী আত্মীয়’ যাকে ইংরাজিতে নেক্সট টু কিন বলা হয়, তিনিই আর্থিক সহায়তা পান। আর্থিক সহায়তার এই মানদণ্ডে পরিবর্তন চাইছেন শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমানের বাবা-মা, রবিপ্রতাপ সিং এবং মঞ্জু সিং।
টিভি৯ ভারতবর্ষকে রবিপ্রতাপ সিং বলেছেন, “নেক্সট টু কিনের যে মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে তা ঠিক নয়। আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলেছি। অংশুমানের স্ত্রী এখন আমাদের সঙ্গে থাকেন না। ওদের বিয়ে হয়েছিল মাত্র পাঁচ মাস। কোনও সন্তানও হয়নি। আমাদের কাছে শুধু ওর একটা ছবি আছে। আমাদের ছেলে দেওয়ালে মালা গলায় ঝুলছে। এই জন্যই আমরা চাই, নেক্সট টু কিনের সঠিক সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হোক। শহিদের স্ত্রী যদি শহিদ পরিবারেই থেকে যায়, তাহলে তিনি কতটা নির্ভরশীল, তাও যাচাই করা উচিত।” ক্যাপ্টেন অংশমানের মা বলেছেন, তাঁরা চান, সরকার নেক্সট টু কিনের নিয়মগুলি পুনর্বিবেচনা করুক। যাতে অন্য অভিভাবকদের কষ্ট পেতে না হয়।
সেনাবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী, কর্তব্যরত অবস্থায় সেনা সদস্যদের মৃত্যু হলে, নেক্সট টু কিনকে এক্স-গ্রাশিয়া দেওয়া হয়। ওইসেনা সদস্যর নিকটাত্মীয় (বিবাহিত হলে স্ত্রী, নাহলে বাবা-মা) বা তাঁর কোনও আইনি প্রতিনিধিকে নেক্সট টু কিন বিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিষয়টি অনেকটা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নমিনির মতো। সেনাবাহিনীতে যোগদানের সময়ই কোনও ক্যাডেট বা অফিসারের বাবা-মা কিংবা অন্য কোনও অভিভাবকের নাম নেক্সট টু কিন হিসেবে লেখা হয়। যখন ওই সেনা সদস্য বিয়ে করেন, তখন তাঁর বাবা-মায়ের পরিবর্তে স্ত্রীর ব্যক্তির নিকটাত্মীয় হিসাবে রেকর্ড করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩-এর ১৯ জুলাই, শর্ট সার্কিট থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সিয়াচেন শিবিরের গোলাবারুদ রাখার ঘরে আগুন লেগেছিল। ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং আগুন লাগা ঘর থেকে অন্তত চার-পাঁচজনকে উদ্ধার করেছিলেন। এরপর, আগুন পাশের মেডিকেল ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে দেখে, তিনি ফের সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন। আর ফিরতে পারেননি। সম্প্রতি তাঁকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের পুরস্কার, ভারতের কীর্তি চক্রে ভূষিত করা হয়েছে। ৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন ক্যাপ্টেন সিংয়ের স্ত্রী স্মৃতি এবং তাঁর মা। স্মৃতি ওই দিন তাঁর আর অংশুমানের সম্পর্ক এবং অংশুমানের সাহস নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। যা শুনে চোখে জল এসে গিয়েছিল সকল ভারতবাসীর।