Smriti Irani: ‘রাহুলের ভারত মাতার হত্যার মন্তব্যে তালি বাজাচ্ছিল কংগ্রেস’, পাল্টা স্মৃতির তোপ
Smriti Irani slams Rahul Gandhi: বিজেপির রাজনীতি, মণিপুরে 'ভারত মাতার হত্যা করেছে' বলে, গুরুতর অভিযোগ করেন রাহুল গান্ধী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির পাল্টা অভিযোগ, ভারত মাতাকে নিয়ে কংগ্রেস উদ্বিগ্ন হলে, তার হত্যার কথা বলার সময়, সংসদে কংগ্রেস সাংসদরা টেবিল চাপড়াতেন না।
নয়া দিল্লি: সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার দুই দিন পরই, লোকসভায় বক্তব্য রাখলেন রাহুল গান্ধী। মণিপুরে নজিরবিহীন হিংসার প্রেক্ষিতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে বিরোধী দলগুলির জোট ইন্ডিয়া। মঙ্গলবার থেকে সেই অনাস্থা প্রস্তাবের উপর বিতর্ক শুরু হয়েছে। বুধবার (৯ অগস্ট)-ও চলছে সেই বিতর্ক। আর দিনের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন রাহুল গান্ধী। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মণিপুরকে দুই ভাগে ভাগ করার অভিযোগ করলেন কংগ্রেস সাংসদ। তিনি দাবি করেন, আসলে মণিপুরকে ভারত বলে মনেই করেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে বিজেপির রাজনীতি, মণিপুরে ‘ভারত মাতার হত্যা করেছে’ বলে, গুরুতর অভিযোগ করেন তিনি। তবে, তাঁর পরই বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত মাতাকে নিয়ে কংগ্রেস উদ্বিগ্ন হলে, তাঁর হত্যার কথা বলার সময়, সংসদে কংগ্রেস সাংসদরা টেবিল চাপড়াতেন না।
এদিন তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই রাহুল গান্ধী বলেন, মণিপুরকে ভারত বলে মনেই করেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি সব জায়গায় বিভাজনের রাজনীতি করে। তাদের এই রাজনীতিরই শিকার হয়েছে মণিপুর। তিনি বলেন, “মণিপুরের অস্তিত্বই আর নেই। কারণ, মণিপুরকে আপনারা দুই ভাগে বিভক্ত করে দিয়েছেন।” এর আগে মণিপুরে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সেখানে তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। এদিন সংসদে সেই রকম দুই মহিলার সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন কংগ্রেস সাংসদ। তারপরই সরকারের বিরুদ্ধে মণিপুরে ভারত মাতার হত্যার অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “মণিপুরে ভারতের হত্যা করা হয়েছে। সরকারের রাজনীতি মণিপুরে ভারত মাতার হত্যা করেছে। আর সেই কারণেই মণিপুরে যেতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী।” তিনি আরও দাবি করেন, ভারতীয় সেনাকে দায়িত্ব দিলে, একদিনেই মণিপুরে শান্তি ফিরতে পারে। কিন্তু, সেনার প্রয়োগ ঠিকভাবে করা হচ্ছে না। কারণ সরকার মণিপুরে হিংসা চলতে দিতে চায়। তিনি আরও বলেন, “মণিপুরে যতদিন হিংসা চলবে, ততদিন সেখানে ভারত মায়ের হত্যা চলবে। আমার মায়ের হত্যা চলবে।” এমনকি বিজেপি দেশভক্ত বা দেশপ্রেমী নয়, বরং, দেশদ্রোহী বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্মৃতি ইরানি অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, মণিপুর মোটেই খণ্ডিত হয়নি। উত্তর পূর্বের এই রাজ্য আমাদের দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। উল্টে ভারত মাতার হত্যার কথা বলার সময় কংগ্রেস সাংদরা টেবিল চাপড়াচ্ছিলেন এবং তালি বাজাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, “ইতিহাসে প্রথমবার কেউ ভারত মাতার হত্যার কথা বললেন আর, কংগ্রেসীরা টেবিল চাপড়াল। এতেই বোঝা যায় কাদের মনে বিশ্বাসঘাতকতা রয়েছে। দেশ কংগ্রেসকে ক্ষমা করবে না। মণিপুর বিভক্ত নয়, মণিপুর ভারতের অংশ। মণিপুর ভাগ হয়নি, মণিপুরকে ভাগ করা যাবে না।” তিনি আরও জানান, অতীতে কংগ্রেস নেতা কাশ্মীরে গণভোটের দাবি তুলেছেন। তামিলনাড়ুতে ডিএমকে নেতা ভারত থেকে দক্ষিণ ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার কথা বলেছেন বলে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
মণিপুরের মানুষের কন্ঠস্বর প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। স্মৃতি ইরানি পাল্টা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের প্রসঙ্গ তোলেন। গিরিজা টিক্কু, সরলা ভাটদের মতো অত্যাচারিত কাশ্মীরি হিন্দুদের প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। তিনি বলেন, “একটি সিনেমায় এই ঘটনাগুলি দেখানো হয়েছে। কংগ্রেসের মুখপাত্র সেই সিনেমাকে প্রোপাগান্ডা বলেছেন। আপনারা কি চান না মানুষ কাশ্মীরি হিন্দুদের দুর্দশার কথা শুনুক। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কণ্ঠ কি ভারতের কণ্ঠ নয়? আপনারা তো কখনও তাদের কথা শোনেননি।” ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গার প্রসঙ্গও তোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজস্থানের ভিলওয়ারায় নাবালিকাকে গণধর্ষণ এবং পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা-সহ অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মহিলাদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের বেশ কিছু ঘটনার কথা তোলেন স্মৃতি ইরানি। এই সব ক্ষেত্রে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটের দলগিলির নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেন তিনি। এমনকি মণিপুর নিয়েও সরকার বারবার আলোচনা চাইলেও বিরোধীরাই এড়িয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্মৃতি ইরানি।