Sukesh Chandrashekhar: থাকতেন এসি কেবিনে, দেখা করতে আসতেন বলিউডের নায়িকারা! জেলেও রাজকীয় জীবনযাপন ছিল সুকেশের

Sukesh Chandrashekhar: জেলেই সুকেশের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন বলিউডের নায়িকা, মডেলরা। জেলের কেবিনকেই অফিস বানিয়ে অতিথিদের ডেকে পাঠাতেন সুকেশ।

Sukesh Chandrashekhar: থাকতেন এসি কেবিনে, দেখা করতে আসতেন বলিউডের নায়িকারা! জেলেও রাজকীয় জীবনযাপন ছিল সুকেশের
সুকেশের সঙ্গে জ্যাকলিনের।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 21, 2022 | 7:59 AM

নয়া দিল্লি: আভিজাত্যে কোনও খামতি ছিল না কখনওই। যখন জেলের বাইরে ছিলেন, তখনও যেমন ঠাট-বাট ছিল, জেলের ভিতরেও একইভাবে রাজার হালেই থাকতেন তিনি। নিজস্ব এসি কেবিন ছিল তাঁর। টিভি, ফোন, আই-প্যাড, কী ছিল না তাঁর কাছে। শুধু এইটুকুই নয়, অর্ডার দিলেই এসে যেত পছন্দমতো খাবার। পরতেন পছন্দমতো পোশাক এমনকি নিজস্ব স্টাইলিস্টও ছিল , এককথায় বলতে গেলে পাঁচতারা হোটেলের পরিষেবা। তবে এটা কোনও হোটেল নয়, দেশের অন্যতম বড় ও কঠোর নিরাপত্তার জেল। তিহার জেলে এভাবেই রাজকীয় হালে দিন কাটাতেন সুকেশ চন্দ্রশেখর। ২০০ কোটির আর্থিক প্রতারণা মামলায় বর্তমানে চর্চায় থাকা কনম্যান সুকেশ চন্দ্রশেখরের জেলের জীবনযাত্রা সামনে আসতেই হতবাক সকলে।

২০০ কোটি টাকার তোলাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখর। এই সুকেশের সঙ্গেই নাম জড়িয়েছে বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের। আর্থিক প্রতারণা মামলায় ইডির চার্জশিটেও সুকেশের সঙ্গে জ্যাকলিনের নামও অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আরেক অভিনেত্রী নোরা ফতেহির নামও জড়িয়েছে। সূত্রের দাবি, জ্যাকলিনের মতোই নোরার সঙ্গেও সম্পর্ক গড়তে চেয়েছিলেন সুকেশ। মন জিততে বলিউডের এই দুই অভিনেত্রীকেই নামীদামি উপহারে ভরিয়ে দিয়েছেন সুকেশ চন্দ্রশেখর। কয়েক লক্ষ টাকার দামি বিদেশি ব্যাগ থেকে শুরু করে কোটি টাকার বিদেশি গাড়ি- উপহারের তালিকায় একাধিক দামি জিনিসের উল্লেখ রয়েছে। তবে এই সবের বাইরেও শুধু সুকেশের জেলবাসের ঘটনা নিয়েই তৈরি হতে পারে আস্ত সিনেমা।

কীভাবে জেলে বসেই চলত আর্থিক প্রতারণা চক্র?

দিল্লি পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইংয়ের কাছে খবর এসেছিল,  সুকেশ চন্দ্রশেখর নামের এক প্রতারক জেলে বসেই নাকি নিজের প্রতারণা চক্র চালিয়ে যাচ্ছেন। খবর পেয়েই তিহার জেলে হানা দেয় দিল্লি পুলিশ। সেখানে গিয়ে তারা দেখেন, জেলকেই পাঁচতারা হোটেলের কামরা বানিয়ে ফেলেছেন সুকেশ। দিল্লি পুলিশের সিপি বীরেন্দ্র সেজওয়ানের জমা দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে, তিহার জেলে নিজস্ব কেবিনে থাকতেন সুকেশ চন্দ্রশেখর। সেই কেবিনে ছিল এসি, টিভি, নিজস্ব টয়লেট, মোবাইল ফোন। প্রয়োজনে আইপ্যাড ও ল্যাপটপও পৌঁছে যেত সুকেশের কেবিনে। দিনে চারবেলাই বাইরে থেকে আসত সুকেশের পছন্দমতো খাবার।

এখানেই শেষ নয়, জেলেই সুকেশের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন বলিউডের নায়িকা, মডেলরা। জেলের কেবিনকেই অফিস বানিয়ে অতিথিদের ডেকে পাঠাতেন সুকেশ। তাঁর “ভিআইপি গেস্ট”রা গাড়ি নিয়ে জেলের ভিতরে ঢুকতেন। কোনও সিকিউরিটি চেকিং বা পরিচয়পত্র দেখানোর বালাইও ছিল না  বলেই জানা গিয়েছে।

কীভাবে জেলকেই নিজের অফিস বানিয়ে ফেলেছিলেন সুকেশ?

দেশের অন্যতম বড় জেল তিহার। একাধিক কুখ্যাত অপরাধীরা বন্দি রয়েছেন এখানে। সেখানে এমন হাতযশ কীভাবে করলেন সুকেশ? প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই। দিল্লি পুলিশ ও এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের এফআইআরেই  রহস্যমোচন হয়েছে তার। জেলের ভিতরে পাঁচতারা হোটেলের মতো পরিষেবা পেতে মাসে দেড় কোটি টাকা ঘুষ দিতেন সুকেশ। ৮২ জন জেলকর্মী ও আধিকারিকের কাছে সেই ঘুষের টাকা পৌঁছত। জানা গিয়েছে, জেলকর্মীদের রোস্টার তৈরিতেও সুকেশের নিয়ন্ত্রণ ছিল।

প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হওয়ার পর, প্রমাণ মিলতেই গত জুলাই মাসে তিহার জেলের ৮ জন আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে ইডি যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে,  সুকেশের এজেন্ট হিসাবে কাজ করতেন তিহার জেলের বেশ কিছু কর্মী। আর্থিক লেনদেন থেকে শুরু করে প্রতারণা চক্র চালাতে সুকেশকে সাহায্য করতেন এই জেলকর্মীরাই। এর জন্য প্রতি মাসেই মোটা টাকা কমিশন দিতেন সুকেশ।