সঙ্কটজনক করোনা রোগীদের জন্য টসিলিজুমাবের জরুরিভিত্তিক অনুমোদন ডিসিজিআই-এর
Tocilizumab : যে করোনা রোগীদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক, তাঁদের চিকিৎসার জন্য টসিলিজ়ুমাব ব্যবহার করা যাবে।
হায়দরাবাদ : মনে পড়ছে কলকাতা মেডিক্যালে সেই কাতর আর্জি? করোনা আক্রান্ত স্ত্রী হাসপাতালের বেডে শুয়ে। ওষুধে কাজ দিচ্ছে না। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আর স্বামী? কী করবেন বুঝতে পারছেন না। টসিলিজ়ুমাবের একটা ভায়ালের জন্য কাতর আর্জি চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনা মোকাবিলায় এবার সেই টসিলিজ়ুমাবের আপদকালীন ব্যবহারের অনুমোদন দিল ডিসিজিআই।
হাসপাতালে ভর্তি প্রাপ্তবয়স্ক করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য টসিলিজুমাব ব্যবহার করা যাবে। হায়দরাবাদের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা হেটারোকে এই ইঞ্জেকশন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। চলতি বছরের জুন মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, যে করোনা রোগীদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক, তাঁদের চিকিৎসার জন্য টসিলিজ়ুমাব ব্যবহার করা যাবে।
হেটারোর চেয়ারম্যান চিকিৎসক পি সারথি রেড্ডি জানিয়েছেন, এই অনুমোদন পাওয়াটা অত্যন্ত জরুরি ছিল। গোটা বিশ্ব টসিলিজু়মাবের চাহিদা তুঙ্গে। ভারতে এই ওষুধের সরবরাহ চালু রাখার জন্য অনুমোদন পাওয়াটা ভীষণভাবে দরকার ছিল। তিনি আরও জানিয়েছেন, “হেটারোকে টসিলিজ়ুমাবের অনুমোদন দেওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি। করোনা পরিস্থিতিতে দেশে প্রয়োজনীয় সবরকম চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য বদ্ধপরিকর হেটারো। আমরা সরকারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করব এবং টসিলিজ়ুমাবের যাতে সমান বণ্টন হয়, তা নিশ্চিত করব।”
হেটারোর তৈরি টসিলিজ়ুমাবের নাম টসিরা। যে করোনা রোগীদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক, তাঁদের চিকিৎসার জন্য যাতে এই ইঞ্জেকশন সঠিক সময়ে ব্যবহার করা যায়, তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর হেটারো। বিশেষ করে যে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি, শরীরে অতিরিক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন বা যাঁরা ভেন্টিলেশনে রয়েছেন, তাঁদের জন্য টসিলিজ়ুমাব ভীষণভাবে কার্যকর হতে পারে।
টসিরাকে বাজারজাত করবে হেটারোর অধীনস্থ সংস্থা হেটারো হেল্থকেয়ার। আর এই ওষুধ উৎপাদনের দায়িত্ব থাকবে হেটারোর অন্য এক সংস্থা হেটারো বায়োফার্মার। হায়দরাবাদের জাদচেরলায় হেটারো বায়োফার্মার উৎপাদনকেন্দ্র টসিরা তৈরি হবে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই টসিরা বাজারে এসে যাবে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।
কিছুদিন আগেই কলকাতা মেডিকেলে স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য এক ভায়াল টসিলিজ়ুমাবের জন্য কাতর আর্জি করতে দেখা গিয়েছিল মধুসূদন মল্লিককে। টসিলিজ়ুমাব তখনও করোনা রোগীদের জন্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি কেন্দ্র। টেলিভিশনে, লোকমুখে মধুসূদন শুনেছিলেন, সঙ্কটজনক করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে টসিলিজুমাব কাজে দিতে পারে।
এবার সেই টসিলিজুমাব ভারতীয় বাজারে নিয়ে আসছে হেটারো। হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক এবং ডাঃ রেড্ডির ল্যাবরেটরির মতো হেটারোও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টানা কাজ করে যাচ্ছে। এর আগে হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক কোভ্যাকসিন টিকা তৈরি করেছে, ডাঃ রেড্ডির ল্যাবরেটরি স্পুটনিক ভি দেবে ভারতীয় বাজারে। আর চলতি মাস থেকেই টসিলিজুমাব বাজারে আনছে হেটারো। আরও পড়ুন : COVID Third Wave: অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘আর ভ্যালু’ পৌঁছালো ১.১৭-তে! কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তৃতীয় ঢেউ?