২ মে ভোট গণনা বন্ধ করার হুঁশিয়ারি হাইকোর্টের, আদৌ কি সম্ভব?

হুঁশিয়ারি দিয়ে হাইকোর্ট জানিয়েছে, করোনাবিধি পালিত না হলে ২ মে গণনা পর্যন্ত বন্ধ করা হবে। এখন প্রশ্ন হাইকোর্ট চাইলে কি গণনা বন্ধ করতে পারে?

২ মে ভোট গণনা বন্ধ করার হুঁশিয়ারি হাইকোর্টের, আদৌ কি সম্ভব?
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Apr 26, 2021 | 5:36 PM

মাদ্রাজ: রাজ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে দৈনিক করোনা (COVID) সংক্রমণ যা ছিল এখন তার কয়েকগুণ। করোনা যেন নির্বাচনটাকেই হাতিয়ার করে ফুলেফেঁপে উঠল। অন্তত পরিসংখ্যান এমনটাই বলছে। তবে ভোট হচ্ছে না এমন রাজ্যেও লাফিয়ে বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বাংলায় অবশ্য করোনা বাড়ার কারণ নির্বাচনই বলছেন চিকিৎস-বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ। আর কাঠগড়ায় উঠছে নির্বাচন কমিশন। সোমবারই মাদ্রাজ হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য একমাত্র দায়ী করেছে নির্বাচন কমিশনকে। পাশাপাশি আধিকারিকদের ‘খুনি’র সঙ্গে তুলনা করেছেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি দিয়ে হাইকোর্ট জানিয়েছে, করোনাবিধি পালিত না হলে ২ মে গণনা পর্যন্ত বন্ধ করা হবে। এখন প্রশ্ন হাইকোর্ট চাইলে কি গণনা বন্ধ করতে পারে?

এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক স্বয়ংশাসিত সংস্থা। হাইকোর্টের এক্তিয়ার নেই গণনা বন্ধ করার। তিনি বলেন, “গণনা নির্বাচন প্রক্রিয়ার অঙ্গ। নির্বাচন প্রক্রিয়া একবার শুরু হলে সেটা কোনও আদালতই থামাতে পারেনি। সেটা গণতন্ত্রের একটা বিশেষ ফিচার। কোনও আদালত যে নির্বাচন প্রক্রিয়া রদ করতে পারে না তা সংবিধানের ৩২৯(বি) ধারায় বলা আছে।” তাঁর মতে, করোনাকালে অবাধ এই জনসমাগম রোখার জন্য কমিশনের যেরকম পদক্ষেপ করা দরকার, তেমনই সচেতন হওয়া দরকার ছিল জনপ্রতিনিধিদের। তবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় মনে করেন, নির্বাচন কমিশনেরও উচিত ছিল জনসমাগমের অনুমতি দেওয়ার সময় বিধিনিষেধ আরোপ করা। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের ‘খুনি’র সঙ্গে তুলনা করার বিষয়ে তিনি জানান, আদালত খুনের যে ফৌজদারি মামলা রুজু করার কথা বলেছে এটাও ঠিক নয়।

আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের একই মত। তিনি বলেন, “মাদ্রাজ হাইকোর্টের এই মন্তব্য কিয়দংশ সত্য। নির্বাচন কমিশন ভোট পরিচালনায় স্বাধীন অধিকারপ্রাপ্ত। তারা করোনাবিধি নিয়ন্ত্রণে কোনও ব্যবস্থা করেনি। বরং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভায় প্রশ্রয় দিয়েছে নীরবে।” তবে শুধু নির্বাচন কমিশন নয় এই দায় বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের ওপরও চাপিয়েছেন বিকাশ রঞ্জন। তবে নির্বাচনের ভোট গণনা স্থগিত করার সাংবিধানিক অধিকার হাইকোর্টের নেই বলেই জানান তিনি।

আরও পড়ুন: ‘খুনের মামলা হওয়া উচিত’, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী কমিশন, ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের