Derek O’brien-Jagdeep Dhankhar: ‘এখানে থিয়েটার করতে এসেছেন?’, ডেরেকের ‘চালাকি’তে ক্ষুব্ধ ধনখড়, তুমুল বচসা রাজ্যসভার সাংসদ-চেয়ারম্যানের মধ্যে
Delhi Ordinance Bill: চেয়ারম্য়ান জগদীপ ধনখড় তৃণমূল সাংসদকে নির্দেশ দেন তিনি যেন দিল্লি অধ্যাদেশ বিল নিয়েই বক্তব্য রাখেন। এর জবাবে ডেরেক বলেন, "এটা রাজনৈতিক কক্ষ, আমরা রাজনৈতিক বিষয় তুলে ধরবই"। এরপরই চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় ডেরেক ও'ব্রায়েনকে ধমক দিয়ে বলেন, "এটা আপনার অভ্যাসে তৈরি হয়েছে।"
নয়া দিল্লি: বর্তমানে তিনি উপরাষ্ট্রপতি। এর আগেই তিনি ছিলেন বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্বে। সেই সময়ই তুঙ্গে উঠেছিল রাজ্য বনাম রাজ্যপালের লড়াই। শিক্ষা থেকে শুরু করে নিয়োগে দুর্নীতি, সরকারি কাজে বেনিয়ম, রাজ্যের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারকে নিয়মিতই টুইটে ও প্রকাশ্যে আক্রমণ করতেন তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে বর্তমানে তাঁর কাধে রয়েছে রাজ্যসভা সামলানোর গুরুদায়িত্ব। সেখানেও তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের (Derek O’Brien) সঙ্গেই বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা গেল রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে। সোমবারই তিনি ডেরেককে ধমক দিয়ে বলেন, “নাটক করে জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেষ্টা করছেন!”
সোমবার দিল্লি অধ্যাদেশ বিল নিয়ে আলোচনা চলছিল রাজ্যসভায়। ওই বিলের বিরোধিতা করেই বলতে উঠেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। প্রথমেই তাঁকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখতে বলেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। কিন্তু তা কানেও তোলেননি ডেরেক। দিল্লি অধ্য়াদেশ বিলের বিরোধিতার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে সমালোচনায় সরব হন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে ডেরেক বলেন, “আমি এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করছি। নরেন্দ্র মোদী ফেডেরালিজমের সন্তান। দিল্লিতে আসার আগে উনিও তো মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। নিজেকে গণতন্ত্রের সন্তান বলে দাবি করেন, তাহলে গণতন্ত্র খর্ব করতে চাইছেন কেন? গণতন্ত্রের সন্তান কেন সংসদে এসে নিশ্চিত করান যে দুই-তৃতীয়াংশ বিলই যাতে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি পাশ করানো যায়? উচ্চশিক্ষার জন্য বিশেষ বাজেটে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়, এদিকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে মাত্র ৭০০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে কেন?”
রাজ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনায় বিজেপির প্রতিনিধি দল পাঠানোর সমালোচনা করেও তিনি বলেন, “৩০ মাসে ১৬০ জন প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন। বিজেপি শাসিত রাজ্য়ে আপনারা কী করেন…উত্তর প্রদেশে কতজন প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন, দেশের সবথেকে বেশি খুন ওই রাজ্যেই হয়। অসমে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা সবথেকে বেশি, মধ্য প্রদেশে শিশুদের উপরে অপরাধের সংখ্যা সবথেকে বেশি। সেখনে আপনারা প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছেন?”
চেয়ারম্য়ান জগদীপ ধনখড় তৃণমূল সাংসদকে নির্দেশ দেন তিনি যেন দিল্লি অধ্যাদেশ বিল নিয়েই বক্তব্য রাখেন। এর জবাবে ডেরেক বলেন, “এটা রাজনৈতিক কক্ষ, আমরা রাজনৈতিক বিষয় তুলে ধরবই”। এরপরই চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় ডেরেক ও’ব্রায়েনকে ধমক দিয়ে বলেন, “এটা আপনার অভ্যাসে তৈরি হয়েছে। পরিকল্পনামাফিকই আপনি এই কাজ করছেন। আপনি ভাবছেন, এভাবে বাইরে জনপ্রিয়তা পাবেন, সেই কারণে আপনি সংসদে তাণ্ডব করছেন, কাজকর্ম বিঘ্নিত করছেন। বসুন আপনি।”
জগদীপ ধনখড় আরও বলেন, “আপনি কি এখানে নাটক করতে এসেছেন, থিয়েটার করতে এসেছেন? এটাই কি আপনি শপথ নিয়েছিলেন…এই ধরনের চালাকি কাজে লাগে না…ব্য়ক্তিগত প্রচারের জন্য় আপনি সদস্য হয়ে এসেছেন… এই বিষয়টি কঠোরভাবে দেখছি।”
জানা গিয়েছে, রাজ্যসভায় ডেরেক ওব্রায়েন যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তার বেশ কিছু অংশ এক্সপাঞ্জ বা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরই ট্রেজারি বেঞ্চের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তৃণমূল সাংসদ আর বক্তব্য রাখতে পারবেন না।