Gandhi surname controversy: কীভাবে ‘গান্ধী’ হলেন ইন্দিরা নেহরু এবং ফিরোজ ঘ্যান্ডি?
Gandhi surname controversy: বহু ক্ষেত্রে বিজেপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, গান্ধী পদবিটি আসলে রাজনৈতিক স্বার্থেই 'চুরি' করেছিল নেহরু পরিবার। এই অভিযোগ কতটা সত্যি? গান্ধী পরিবারের আসল পদবি কী?
নয়া দিল্লি: ‘গান্ধী’ পদবি নিয়ে ফের উস্কে উঠেছে বিতর্ক। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে, গান্ধী পদবি ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন অসের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। গান্ধী পদবি গ্রহণই গান্ধী পরিবারের ‘প্রথম দুর্নীতি’ বলে চিহ্নিত করেছেন তিনি। পাল্টা জবাবে কংগ্রেস নেতা পবন খেরা জানিয়েছেন, হিমন্তবিশ্ব শর্মা সম্ভবত বরুণ গান্ধীর কথা বলতে চেয়েছেন। গান্ধী পরিবারের অন্যতম, বরুণ গান্ধী বর্তমানে বিজেপিরই সদস্য। আসলে এর আগেও বহু ক্ষেত্রে বিজেপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, গান্ধী পদবিটি আসলে রাজনৈতিক স্বার্থেই ‘চুরি’ করেছিল নেহরু পরিবার। এই অভিযোগ কতটা সত্যি? গান্ধী পরিবারের আসল পদবি কী? আসুন জেনে নেওয়া যাক –
বস্তুত, এর আগেও বহুবার বিজেপির পক্ষ থেকে গান্ধী পরিবারের পদবি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও গান্ধী পদবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাজেট অধিবেশনের সময় তিনি বলেছিলেন, গান্ধী পরিবারের কেউ কেন নেহরু পদবি ব্যবহার করেন না, তা তাঁর বোধগম্য হয় না। তাঁরা কি লজ্জা পান?
নেহরু পরিবারের সঙ্গে গান্ধী পদবিটি জুড়ে গিয়েছিল, ইন্দিরা গান্ধীর স্বামী, ফিরোজ গান্ধীর থেকে। তাঁর আসল পদবি অবশ্য গান্ধী ছিল না। তাঁর জন্মগত নাম ছিল ফিরোজ জাহাঙ্গির ঘ্যান্ডি। বোম্বের ফোর্টে অবস্থিত তেহমুলজি নরিমান হাসপাতালে এক পার্সি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে, মহাত্মা গান্ধী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দিয়েছিলেন ফিরোজ। আর সেই সময় থেকেই তিনি তাঁর পদবির বানান ঘ্যান্ডি থেকে গান্ধীতে বদলে নিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, ইন্দিরা গান্ধীর জন্ম হয়েছিল উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে, ১৯১৭ সালের ১৯ নভেম্বর। বাবা ছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু। নেহেরুরা ছিলেন কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের মানুষ। বাবা যখন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত, সেই সময় এলাহাবাদে পারিবারিক বাড়ি আনন্দ ভবনে মা কমলা নেহরুর কাছে বড় হয়েছিলেন ইন্দিরা।
এলাহাবাদেই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল ফিরোজ গান্ধীর। ১৯৩৩ সালেই ইন্দিরাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন ফিরোজ। কিন্তু, সেই সময় ইন্দিরার মাত্র ১৬ বছর বয়স। ইন্দিরা নিজে এবং তার কমলা নেহরু, সেই সময় ফিরোজের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পরে, ব্রিটেনে থাকাকালীন ফিরোজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল ইন্দিরার। ১৯৪২ সালের মার্চ মাসে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। গুজরাটের এক জরথুস্ট্রপন্থী পার্সি পরিবারের সদস্য হলেও, হিন্দু রীতি অনুযায়ীই ইন্দিরাকে বিয়ে করেছিলেন ফিরোজ।
শোনা যায়, ইন্দিরা ও ফিরোজের বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন ইন্দিরার বাবা জওহরলাল নেহেরু। এমনকি, তাঁদের বিয়ে আটকাতে মহাত্মা গান্ধীরও শরণাপন্ন হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, মহাত্মা এই দুই যুবক-যুবতীর বিবাহে হস্তক্ষেপ করতে চাননি। এইভাবেই ইন্দিরা নেহেরু এবং ফিরোজ ঘ্যান্ডি হয়েছিলেন ইন্দিরা এবং ফিরোজ গান্ধী। তাঁদের পরিবার পরিচিত হয় নেহেরু-গান্ধী পরিবার হিসেবে। রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধীরা এই উত্তরাধিকারই বহন করছেন।