দু’মাস বাদে ফের ৫০ হাজারের গণ্ডির কাছে দেশের দৈনিক সংক্রমণ, সামনেই কি তবে তৃতীয় ঢেউ?
একলাফে সংক্রমণ বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে সেই কেরলই। দেশের মোট দৈনিক সংক্রমণের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সংক্রমণই কেরল থেকে হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টাতেই কেরলে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৮০৩ জন।
নয়া দিল্লি: উৎসবের মরশুম শুরু হওয়ার আগেই হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা সত্যি করেই কি তবে অক্টোবরেই আছড়ে পড়বে করোনার তৃতীয় ঢেউ (Third Wave of COVID-19)? গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছনোয় বেড়েছে উদ্বেগ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ হাজার ৯২ জন। বিগত দুই মাসে এটিি সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। বেড়েছে মৃত্যু হারও, একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৫০৯ জনের। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৮৩। একদিনেই দেশে সংক্রমণের হার ১২ শতাংশ সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
একলাফে সংক্রমণ বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে সেই কেরলই। দেশের মোট দৈনিক সংক্রমণের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সংক্রমণই কেরল থেকে হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টাতেই কেরলে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৮০৩ জন। বর্তমানে রাজ্য়ে সংক্রমণের হার ১৮.৭৬ শতাংশ। ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৩ জনের মৃত্যু হওয়ায় রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ৯৬১-এ বেড়ে দাঁড়াল।
গতকালই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, রাজ্যের ৮৫ শতাংশ করোনা রোগীই বর্তমানে বাড়িতেই আইসোলেশনে রয়েছেন। তবে সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও কড়া পদক্ষেপ করা উচিত। কেরলে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে প্রতিবেশী রাজ্যগুলিও প্রভাবিত হচ্ছে বলে জানানো হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেরলের স্মার্ট ও পরিকল্পিত লকডাউন করা উচিত বলে জানানো হয়।
মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জ়োনের উপর জোর দিয়ে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, কেরলের উচিত প্রতিটি বিধিনিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা। কেবল জেলা স্তরে বিধিনিষেধ আরোপ করলেই হবে না, প্রতিটি অঞ্চলভিত্তিক কন্টেনমেন্ট জ়োন জারি করা উচিত। কেরলে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিবেশী রাজ্য কর্নাটক, তামিলনাড়ুতেও সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের মোট সংক্রমণেও তার প্রভাব পড়ছে। করোনা রোগীদের কেবল হোম আইসোলেশনে রেখেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
সম্প্রতি কেরল থেকে আগত ৩২ জন পড়ুয়া করোনা আক্রান্ত হওয়ায় প্রতিবেশী রাজ্য় কর্নাটকেও বিধিনিষেধ কঠোর করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, কেরল থেকে কেউ রাজ্যে এলেই তাদের বাধ্যতামূলকভাবে সাতদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। বর্তমানে কর্নাটকে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৮৬।
কেরলের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রেও বাড়ছে সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৪৫৬ জন। একদিনেই সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১৮৩ জনের। সামনেই গণেশ চতুর্থী থাকায় কঠোরভাবে বিধিনিষেধ পালন না করলে কেরলে ওনাম উৎসবের পরে যেমন সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছিল, একইভাবে মহারাষ্ট্রেও একলাফে অনেকটাই সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে।
এদিকে, একাধিক রাজ্যে স্কুল খুলে যাওয়ায় শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। যদি দৈনিক সংক্রমণের হার এভাবেই বাড়তে থাকে, তবে ফের বন্ধ হয়ে যেতে পারে স্কুলগুলি। আরও পড়ুন: ফাঁস ৬৫ পাতার গোপন নথি, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তে নিজেদের অফিসারকেই গ্রেফতার করল সিবিআই!