তৃতীয় ঢেউ রুখতে রাজ্যবাসীকেই ‘যোদ্ধা’ বানাচ্ছে পিনারাই সরকার, একদিনেই জরিমানা বাবদ আয় ১৫ লক্ষ টাকা!
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাজ্য প্রতি রবিবার সম্পূর্ণ লকডাউন ও নৈশ কার্ফু জারি থাকবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও মঙ্গলবার একটি প্রশাসনিক বৈঠক হবে, সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে পরবর্তী কর্মসূচিগুলি স্থির করা হবে, এমনটাই জানান মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন।
তিরুবনন্তপুরম: দেশে ফের একবার উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ। উৎসবের মরশুম যত এগিয়ে আসছে, আক্রান্তের সংখ্যাও ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরইমধ্য়ে সবথেকে বেশি উদ্বেগ কেরল(Kerala)-কে নিয়ে, কারণ সেখান থেকেই দেশের দৈনিক সংক্রমণের ৮৫ শতাংশের খোঁজ মিলছে। প্রতিদিনই ৩০ হাজারের গণ্ডি পার করছে কেরলের দৈনিক সংক্রমণ। তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হতে পারে, এই আশঙ্কায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর চালু করল “বি দ্য ওয়ারিয়র” (Be the Warrior) নামে এক নতুন কর্মসূচি।
শনিবারই করোনা মোকাবিলায় এই নয়া উদ্যোগের উদ্বোধন করেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য হল করোনার তৃতীয় ঢেউ যাতে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা। একইসঙ্গে রাজ্যের টিকাকরণের গতিও বৃদ্ধি করা হবে এই কর্মসূচির মাধ্যমে।
রাজ্য়ে ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ ও সচেতনতা নিয়ে মুখ্য়মন্ত্রী বিজয়ন বলেন, “করোনার হাত থেকে রক্ষা পেতে সকলকেই নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের এই কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য় হল সাধারণ মানুূুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। বাইরে বের হলেই মাস্ক পরা, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা, সর্বদা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও করোনা টিকার দুটি ডোজ়ই যাতে সবাই নেন, এই বিষয়গুলি নিশ্চিত করতেই এই কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছে।”
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাজ্য প্রতি রবিবার সম্পূর্ণ লকডাউন ও নৈশ কার্ফু জারি থাকবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও মঙ্গলবার একটি প্রশাসনিক বৈঠক হবে, সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে পরবর্তী কর্মসূচিগুলি স্থির করা হবে, এমনটাই জানান মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন।
রাজ্যে হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হিসাবে ওনাম উৎসব চলাকালীন বিধিনিষেধ শিথিল করাকেই দোষারোপ করা হলেও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “ওনাম উৎসবের পর যে হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করেছিলাম, তা হয়নি। করোনা সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যাও কম।”
রাজ্য়ের অধিকাংশ রোগীই হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “যারা কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম ভঙ্গ করবে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে আক্রান্তরা যেন বাড়িতেই থাকেন, এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে। যদি কারোর বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার ব্যবস্থা না থাকে, তবে কোভিড ফার্স্ট লাইন চিকিৎসাকেন্দ্রে তাদের স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
বিধিনিষেধ ভঙ্গ করার ক্ষেত্রেও কড়া শাস্তির ব্য়বস্থা করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টাতেই স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার অভিযোগে ১৫ লক্ষ ১৪ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা বাবদ আদায় করা হয়েছে। মাস্ক না পরায় ৯ হাজার ৬১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আরও পড়ুন: মোদী-যোগী সরকারকে ‘কৃষকদের ক্ষমতা’র পাঠ দেবে মহাপঞ্চায়েত! চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা