‘বাক-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়নি’, নয়া তথ্য প্রযুক্তি আইনের প্রয়োজনীয়তা বোঝাল কেন্দ্র

কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, নয়া তথ্য প্রয়ুক্তি আইনে গ্রিভিয়েন্স বিভাগটিও আলাদাভাবে যোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের অভিযোগ শোনার জন্যই।

'বাক-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়নি', নয়া তথ্য প্রযুক্তি আইনের প্রয়োজনীয়তা বোঝাল কেন্দ্র
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 12:50 PM

চেন্নাই: নয়া ডিজিটাল আইন লাগু হতেই সরব হয়েছে একাধিক ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি, এই আইনের মাধ্যমে বাক স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আইনের বিরোধিতা করে সম্প্রতি মাদ্রাজ হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করা হয়। এ বার পাল্টা হলফনামা জমা দিল কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এবং ইলেকট্রনিক ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক। হলফনামায় বলা হয়েছে, “নয়া আইটি আইন কেবল বেআইনি বিষয়বস্তুকেই ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া থেকে বাধা দেয়। বাক স্বাধীনতার অধিকারে কোনওভাবেণই হস্তক্ষেপ করা হয়নি।”

সম্প্রতিই সাংবাদিক মুকুন্দ পদ্মনাভ, রমন মাগসেসেই পুরস্কারপ্রাপ্ত টিটি কৃষ্ণা ও ১৩টি সংবাদমাধ্যম আদালতে দুটি পিটিশন দাখিল করে। এর জবাবেই কেন্দ্রের তরফে মাদ্রাজ হাইকোর্টে হলফনামা জমা দেওয়া হয়। গত মাসেই হলফনামা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও গত ২৫ অগস্ট  ইলেকট্রনিক ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে অতিরিক্ত সময় চেয়ে নেওয়া হয়।

এখনও অবধি দেশে মোট ১৯টি রিট পিটিশন জমা পড়েছে। আইটি আইন ২০২০ ও ২০২১ সালের আইনের মধ্যে পার্থক্য থাকায় নির্দিষ্টভাবে কোনও একটি আইন অনুসরণ করতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পিটিশনে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের তরফে একটি নির্দিষ্ট আইন স্থির করা উচিত, যা সমস্ত ক্ষেত্রেই এক হবে। গত ২৬ অগস্ট কেন্দ্রের তরফে ১১৫ পাতার হলফনামা জমা দিয়ে পিটিশনগুলি বাতিল করে দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছে।

তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, নতুন আইনে বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকারের উপর কোনওভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়নি। নতুন আইটি আইনের বিরোধী কোনও পোস্টের ক্ষেত্রেও ব্য়বহারকারীর উপর কোনও জরিমানা বা শাস্তির নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কেবলমাত্র বিতর্কিত পোস্টটি সরিয়ে ফেলা বা সোশ্যাল মাধ্যম ব্যবহার করার উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। এক্ষেত্রেও ব্যবহারকারী চাইলেই সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন।

নয়া তথ্য প্রয়ুক্তি আইনে গ্রিভিয়েন্স বিভাগটিও আলাদাভাবে যোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের অভিযোগ শোনার জন্যই। অনলাইনে ব্য়বহারকারীদের হেনস্থার হাত থেকে সুরক্ষার প্রসঙ্গেও হলফনামায় বলা হয়, যদি পোস্ট করা বিষয়বস্তুটি আইনবিরুদ্ধ হয় এবং কোনও স্বীকৃত সংস্থা বা আদালতে তরফে অভিযোগ জানানো হলে তবেই তা সরিয়ে ফেলা হবে।

হলফনামায় বলা হয়, নয়া তথ্য প্রযুক্তি আইনে অতি সাধারণ ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারকারীদের ক্ষমতায়নের জন্যই তৈরি করা হয়েছে। একইসঙ্গে ভুয়ো খবর প্রচার ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার রোখার চেষ্টাও করা হয়েছে এই আইনের মাধ্যমে। ভাইরাল মেসেজ বা পোস্ট ঘিরে অতীতে হিংসা, গণপিটুনি বা যৌন হেনস্থার মতো নানা অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনাগুলি থেকে শিক্ষা নিয়েই নতুন আইনে এই দিকগুলি সুরক্ষিত করা হয়েছে।  নতুন আইনে অনলাইন মাধ্যমে শিশু ও মহিলাদের সুরক্ষার উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। জনসাধারণের মতামত নিয়েই এই আইন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্য়োপাধ্যায় ও বিচারপতি পিডি আদিকেসাভালু জানিয়েছেন আগামী ১৪ সেপ্টম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। আরও পড়ুন: তৃতীয় ঢেউ রুখতে রাজ্যবাসীকেই ‘যোদ্ধা’ বানাচ্ছে পিনারাই সরকার, একদিনেই জরিমানা বাবদ আয় ১৫ লক্ষ টাকা!