‘নিজের উপর বিশ্বাস রেখ’, মা-বাবার শেষ কথা মনে গেঁথেই দশমে ৩ বিষয়ে ১০০-এ ১০০ পেল ভনিশা
মা-বাবা যখন একসঙ্গে হাসপাতালের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিল, শেষ দেখা তখনই হয়েছিল বলে জানায় ভনিশা।
ভোপাল: দু’মাস আগেই করোনা কেড়ে নিয়েছে বছর ১৬-র ভনিশা পাঠকের মা-বাবাকে। শেষ স্মৃতি বলতে ভনিশার মনে রয়েছে শুধু একটাই কথা, “হিম্মত রাখনা”। দুই মাস বাদে সিবিএসই-র দশম শ্রেণির পরীক্ষায় মা-বাবার কথাই রাখল ভনিশা। নিজের উপর বিশ্বাস রেখেই ইংরেজি, সংস্কৃত, বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞানে ১০০-এ ১০০ পেল সে। অঙ্কতেও খারাপ নয়, ৯৭ পেয়েছে সে। পারিবারিক বিপর্যয়ের পরও ১৬ বছরের কিশোরীর দারুণ ফল নজর কেড়েছে সকলের।
মে মাসে যখন জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ভনিশা, সেই সময়ই জীবনে আধার ঘনিয়ে আসে। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় তাঁর মা-বাবা। কয়েক দিনের ব্যবধানেই দুজনেরই মৃত্যুও হয়। ১০ বছরের ছোট ভাইকে নিয়ে অনাথ হয়ে পড়ে ভনিশা।
তবে ভাইয়ের মুখ চেয়েই নিজেকে শক্ত রেখেছিল ভনিশা। মনের জোরেই পরীক্ষা দিয়েছিল সে। মঙ্গলবার রেজাল্ট প্রকাশিত হতেই দেখা গেল, চরম মানসিক চাপের মধ্যেও দারুণ ফল করেছে বছর ১৬-র কিশোরী। এই সাফল্যের নেপথ্য কাহিনী জানতে চাইলে ভনিশা বলে, “আমার মা-বাবার স্মৃতিই আমায় বরাবর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। এখন আমার ভাইই আমার এগিয়ে চলার শক্তি। কারণ আমি ছাড়া ওঁর আর কেউ নেই, তাই ওঁর জন্য আমায় কিছু করতেই হবে।”
ভনিশা বলে, “আমার মায়ের শেষ কথা ছিল, নিজের উপর বিশ্বাস রেখ। আমরা তাড়াতাড়িই ফিরে আসব। বাবা বলেছিল, নিজেকে শক্ত রেখ।” মা-বাবা যখন একসঙ্গে হাসপাতালের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিল, শেষ দেখা তখনই হয়েছিল বলে জানায় ভনিশা।
মা-বাবাকে হারানোর পর কাকা ডঃ অশোক কুমারের কাছেই ভাইকে নিয়ে থাকে ভনিশা। আইআইটিতে সুযোগ বা ইউপিএসসি পরীক্ষায় ভাল ফল করে দেশের সেবা করেই বাবার স্বপ্নকে পূরণ করতে চায় ১৬ বছরের কিশোরী। আরও পড়ুন: লাল তালিকা থেকে মুক্ত ভারত, ব্রিটেনে গেলে বিশেষ শর্ত মানলেই থাকতে হবে না কোয়ারেন্টাইনে!