সর্ষের মধ্যেই ভূত! অম্বানী ভবনের সামনে বিস্ফোরক উদ্ধার ঘটনায় গ্রেফতার মুম্বই পুলিশের অফিসার

এনআইএ(NIA)-র সমনের জবাবে গতকাল সচিন ভাজ়ে হাজিরা দিলে টানা ১২ ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয় এবং তারপরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তদন্তকারী সংস্থার সন্দেহ, মুকেশ অম্বানী(Mukesh Ambani)-র বাড়ির সামনে বিস্ফোরক রাখার ঘটনায় তাঁর ভূমিকা রয়েছে।

সর্ষের মধ্যেই ভূত! অম্বানী ভবনের সামনে বিস্ফোরক উদ্ধার ঘটনায় গ্রেফতার মুম্বই পুলিশের অফিসার
সচিন ভাজ়ে। ছবি:PTI
Follow Us:
| Updated on: Mar 14, 2021 | 11:43 AM

মুম্বই: গ্রেফতারির ভয় ছিল আগেই। তড়িঘড়ি আগাম জামিনের আবেদনও জানিয়েছিলেন শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী(Mukesh Ambani)-র বাড়ির সামনে বিস্ফোরক রাখার কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ অফিসার সচিন ভাজ়ে (Sachin Vaze)। তবে আদালত সেই জামিনের আবেদন গ্রহণ করেনি। এদিকে, শনিবারই তাঁকে জেরার জন্য ডেকে ছিল এনআইএ (NIA)। টানা ১২ ঘণ্টা ধরে জেরার পর অবশেষে তাঁকে গ্রেফতার করল তদন্তকারী সংস্থা।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে থেকে একটি স্করপিও গাড়ি উদ্ধার করা হয়। গাড়ির ভিতর থেকে জিলেটিন স্টিক (Gelatin Stick) ও ডিটোনেটর (Detonator) উদ্ধার হয়। সম্প্রতি গাড়ির মালিক মনসুখ হিরেনের মৃতদেহও মুম্বইয়ের একটি ডোবা থেকে উদ্ধার হয়। এরপরই মৃতের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, তদন্তকারী অফিসার সচিন ভাজে় (Sachin Vaze) নভেম্বর মাস থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অবধি ওই গাড়িটি ব্যবহার করছিলেন।

ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে মুম্বইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে তাঁকে স্পেশাল ব্রাঞ্চে বদলি করে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়ের হওয়ার পরই শুক্রবার সচিন থানে সেশন আদালত থেকে আগাম জামিনের (Anticipatory Bail) আর্জি জানান। যদিও আদালতের তরফে এই আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়। আগামী ১৯ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

আরও পড়ুন: ‘অন্তিম হুঁশিয়ারি’, নিয়ম অমান্য হলেই কড়া লকডাউন, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে বিস্ফোরক রাখা ও গাড়ি মালিক মনসুখ হিরেনের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে মহারাষ্ট্রের অপরাধ দমন শাখাও তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। গত সপ্তাহেই মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশও অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের গ্রেফতারির দাবি করেন।

এদিকে, মামলার তদন্তভার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার পরই তাঁকে জেরার জন্য সমন জারি করে এনআইএ। গতকাল তিনি হাজিরা দিলে টানা ১২ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়। হাজির ছিল এটিএসের অফিসাররাও। দীর্ঘ সময় ধরে জেরা চলার পর মধ্যরাতে তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়। আজ সকালে ফের তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনআইএ(NIA)-র দফতরে আনা হয়।

অন্যদিকে, তদন্তের মাঝেই সচিনের হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। শনিবার সকালেই সচিন তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসে লেখেন, “৩ মার্চ, ২০০৪। সিআইডির কয়েকজন অফিসার আমায় একটি ভুয়ো মামলায় গ্রেফতার করে। সেই মামলার আজ অবধি নিষ্পত্তি হয়নি। আমার মনে হচ্ছে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। সহকর্মীরাই আমায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তবে এইবারে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। তখন আমার হাতে ১৭ বছর কর্মজীবন, অনেক আশা, ধৈর্য্য ছিল। এখন আমার সেই ধৈর্য্যও নেই, আর কর্মজীবনের মেয়াদও নেই। আমার মনে হচ্ছে পৃথিবীকে বিদায় জানানোর সময় এসে গিয়েছে।”

আরও পড়ুন: জনসমাগমে রাশ টানল ইয়েদুরাপ্পা সরকার, নিয়মভঙ্গে হতে পারে জরিমানাও