Muslim Student: ৮২ শতাংশ নম্বর পেয়ে সংস্কৃত বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম মুসলিম ছাত্র
মানুষ কেন ভাষার সঙ্গে ধর্মকে জড়ায়। আমি মনে করি, একজন হিন্দু খুব ভালো উর্দু শিখতে পারেন এবং মুসলিম ভালো সংস্কৃত শিখতে পারেন।
লখনউ: মহম্মদ ইরফান। সাধারণ দিনমজুরের ছেলে। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) সংস্কৃত শিক্ষা পরিষদের (Sanskrit Siksha Prishad Board) মধ্যমা-২ (দ্বাদশ শ্রেণি) ফাইনাল পরীক্ষায় প্রথম হলেন তিনি। ৮২.৭১ শতাংশ নম্বর পেয়ে ১৩ হাজার ৭৭৮ জন পরীক্ষার্থীকে পিছনে ফেলে সংস্কৃত বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন এই মুসলিম ছাত্র (Muslim Student)।
চান্দাউলি জেলার জিন্দাসপুর গ্রামের বাসিন্দা ১৭ বছর বয়সি মহম্মদ ইরফান কেবল সংস্কৃত বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম হননি, দশম ও দ্বাদশ পরীক্ষায় প্রথম ২০-র মধ্যে একমাত্র মুসলিম ছাত্র ইরফান। ভবিষ্যতে সংস্কৃত ভাষার শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন এই মুসলিম ছাত্র।
ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত ইরফানের বাবা সালাউদ্দিনও। যদিও ছেলে যে সংস্কৃত বোর্ডের স্কুলে পড়ে এতটা সফল হবে তা তিনি কল্পনা করেননি। আর্থিক চাপে পড়েই ছেলেকে এই স্কুলে ভর্তি করেছিলেন। পুরোনো স্মৃতিচারণা করে সালাউদ্দিন জানান, দিনমজুর হিসাবে তিনি দৈনিক ৩০০ টাকা পেতেন। তার মধ্য়ে মাসের অনেক দিনই টাকা পেতেন না। ফলে বেসরকারি বা অন্য কোনও স্কুলের ফি দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর ছিল না। একমাত্র সম্পূর্ণানন্দ সংস্কৃত গভর্ণমেন্ট স্কুলের ফি ছিল বছরে ৪০০-৫০০ টাকা। সেজন্যই ওই স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করেন। তবে স্কুলে ভর্তির প্রথম দিন থেকেই ইরফান সংস্কৃত ভাষার প্রতি আগ্রহী ছিল বলেও জানান তিনি।
আর্থিক কারণে মুসলিম হয়েও ছেলেকে সংস্কৃত স্কুলে ভর্তি করালেও পড়াশোনার ব্যাপারে ধর্ম, ভাষা নিয়ে তিনি কখনও মাথা ঘামাননি বলে জানান স্নাতক পাশ সালাউদ্দিন। তাঁর কথায়, “আমি জানি না, মানুষ কেন ভাষার সঙ্গে ধর্মকে জড়ায়। আমি মনে করি, একজন হিন্দু খুব ভালো উর্দু শিখতে পারেন এবং মুসলিম ভালো সংস্কৃত শিখতে পারেন। আমি স্নাতক পাশ এবং আমি শিক্ষার গুরুত্ব বুঝি। তাই আমি কখনও ইরফানকে এই বিষয়ে আটকাইনি। সে খুব ভাল সংস্কৃত বলতে ও লিখতে পারে। এটা সম্পূর্ণ তাঁর মেধা।”
ইরফান যে ভবিষ্যতে উর্দু নয়, সংস্কৃত শিক্ষক হতে চান, সে বিষয়ে কোনও আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, “সে (ইরফান) এখন সংস্কৃতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর করতকে চায় এবং তারপর সংস্কৃত ভাষাতেই চাকরি খুঁজবে।”