BJP-JDU Rift: ‘গোপন কথা ফাঁস’! সম্মুখ সমরে বিজেপি-জেডিইউ, সরকারের পতন কি সময়ের অপেক্ষা?

BJP-JDU Rift: নীতীশ কুমারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নকেও কটাক্ষ করে আরসিপি সিং বলেন, "জেডিইউ একটা ডুবন্ত জাহাজ। সাত জন্মেও নীতীশ কুমার দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না"।

BJP-JDU Rift: 'গোপন কথা ফাঁস'! সম্মুখ সমরে বিজেপি-জেডিইউ, সরকারের পতন কি সময়ের অপেক্ষা?
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 08, 2022 | 7:17 AM

নয়া দিল্লি: জল্পনা আগেই ছিল, এবার প্রকাশ্য়ে স্বীকার বিজেপি-জেডিইউ জোটে ফাটলের কথা। রবিবারই প্রধানমন্ত্রীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছিলেন বিহারের মুখ্য়মন্ত্রী নীতীশ কুমার। এক মাসেই পরপর দুইবার কেন্দ্রীয় বৈঠক এড়ানোকে ঘিরে জল্পনা তখন থেকেই শুরু হয়েছিল। বিকেল হতেই জেডি(ইউ)-র তরফে ঘোষণা করা হল নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে তৈরি মন্ত্রিসভায় তাদের দলের কোনও প্রতিনিধি থাকবে না। মঙ্গলবার জনতা দলের সমস্ত সাংসদ বিধায়কদের নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। এরপরই এনডিএ-জেডিইউ জোটের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, সে সম্পর্কে ঘোষণা করা হবে বলে সূত্রের খবর।

বিজেপিপ নেতৃত্বে এনডিএ জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়েই বিহার নির্বাচনে লড়লেও ক্ষোভের আঁচ সেই সময় থেকেই পাওয়া গিয়েছিল। ২০২০ সালে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, বিজেরির তুলনায় কম ভোট পেয়েছে জেডিইউ। প্রতিশ্রুতি মতোই নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী পদ দেওয়া হলেও, ভোটের ফল নিয়ে কার্যত অসন্তুষ্ট ছিলেন জেডিইউ নেতা। সেই সময় গুঞ্জন শুরু হয়েছিল যে, বিরোধী দল আরজেডির সঙ্গে তলে তলে ভাব করে জেডিইউ-র ভোট কাটাকাটি করেছে বিজেপিই। এই চাপানউতোর নিয়েই দুই বছর কেটে গেলেও সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন জেডিইউ নেতা আরসিপি সিংকে নিয়ে নতুন করে বিরোধ শুরু হয়।

গত বছরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান পান আরসিপি সিং। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা না বলেই মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করায় আগে থেকেই চটে ছিলেন নীতীশ কুমার। সম্প্রতি রাজ্যসভার আসন নিয়ে আরসিপি সিংয়ের সঙ্গে বিরোধ শুরু হতেই তিনি জেডিইউ থেকে ইস্তফা দেন। রাজ্যসভায় নাম মনোনীত না করায় নীতীশ কুমারকে হিংসুটে অ্যাখ্যা দেন প্রাক্তন জেডিইউ নেতা। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে, কারণ আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছি। আমি শুধু এইটুকুই বলতে চাই যে ইর্ষার কোনও চিকিৎসা নেই।”

নীতীশ কুমারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নকেও কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “জেডিইউ একটা ডুবন্ত জাহাজ। সাত জন্মেও নীতীশ কুমার দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না”। আরসিপি সিংয়ের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে জেডিইউয়ের জাতীয় সভাপতি রাজীব রঞ্জন সিং বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার কী দরকার আছে? ২০১৯ সালেই মুখ্যমন্ত্রী স্থির করেছিলেন যে আমরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অংশ হব না। আগামীতেও আমরা মন্ত্রিসভার অংশ হব না।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আরসিপি সিংয়ের হঠাৎ বিস্ফোরক মন্তব্যের পিছনে বিজেপিরই হাত রয়েছে। অন্যদিকে, জেডিইউ যেভাবে বারংবার নিজেদের জোটের ফাটলকে সামনে আনছে, তার মাধ্যমে মোদী সরকারের উপরে চাপ সৃষ্টি করারই চেষ্টা করছে। নীতীশ কুমারের ‘অপছন্দের পাত্র’ বিহারের বিধানসভার স্পিকারকে যাতে সরানো হয়, তার জন্যই নীতীশ কুমার এই কাজ করছেন।

গত মাসেই যেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন যে ২০২৪ সালেও জোটে থাকবে বিজেপি-জেডিইউ, সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের একের পর এক কেন্দ্রীয় স্তরের বৈঠক এড়ানোয় বিজেপির সঙ্গে যে দূরত্ব বাড়ছে, তা বলার প্রয়োজন রাখে না। এবার বিহারের ভাগ্যে কী রয়েছে, তা সঠিক সময় এলেই জানা যাবে।