Odisha: ‘কোনও অনুতাপ নেই’, ছেলেকে প্রখর রোদে বেঁধে রেখে মেরে ফেললেন প্রৌঢ় বাবা

Odisha: মদ্যপ-বেকার মাকে পেটানো ছেলেকে শাস্তি দিতে, হাত-পা বেঁধে প্রখর রোগের মধ্যে ফেলে রেখে দিলেন প্রৌঢ় বাবা। কয়েক ঘন্টা পর মৃত্যু হল ছেলের। ওড়িশার কেওনঝড় জেলার ঘটনা।

Odisha: 'কোনও অনুতাপ নেই', ছেলেকে প্রখর রোদে বেঁধে রেখে মেরে ফেললেন প্রৌঢ় বাবা
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 14, 2022 | 3:34 PM

ভুবনেশ্বর: তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ মাত্র ৫৬ শতাংশ। তারমধ্যেই, দুপুর দুটোর তীব্র রোদে হাত-পা বেঁধে বছর ছেলেকে ফেলে রেখেছিলেন প্রৌঢ় বাবা। উদ্দেশ্য ছিল মদ্যপ-বেকার ছেলেকে শাস্তি দেওয়া। কয়েক ঘন্টা পর মৃত্যু হয় ছেলের। সন্দেহ করা হচ্ছে সানস্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার। এরপরও বাবা বলছেন, ‘কোনও অনুতাপ নেই’। এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হল ওড়িশার কেওনঝড় জেলা। সোমবার (১৩ জুন), এই ঘটনার জেরে ৬৫ বছরের প্রৌঢ় পনুয়া নায়েককে আটক করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার (১১ জুন)। পানুয়া নায়েকের বাড়ি কেওনঝড় জেলার ঘাটাগাঁও ব্লকের সনমাসিনাবিলা গ্রামে। বাড়ির কাছেই জাতীয় সড়কের উপর তিনি একটি খাবারের দোকান চালান। ছেলে সুমন্ত নয়েকের বয়স ৪০ পেরোলেও, সে কোনও কাজ করত না বলে জানিয়েছএ পুলিশ। তার উপর নিয়মিত মদ্যপানের বদ অভ্যাস ছিল। মদ্যপ অবস্থায় মাকে মারধরও করতে। গত বৃহস্পতিবারও, মেরে মায়ের কোমর ভেঙে দিয়েছিলেন সুমন্ত, এমনটাই জানা গিয়েছে।

এই নিয়েই শনিবার দুপুরে বাবার সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয়েছিল সুমন্তর। এরপরই ছেলেকে কঠিন শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পানুয়া নায়েক। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে একটি প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে সুমন্তর হাত-পা বেঁধে ফেলেছিলেন পানুয়া। তারপর খোলা মাঠে প্রখর রোদের মধ্যে ওই অবস্থাতেই ছেলেকে ফেলে চলে যান তিনি। অভিযোগ, সুমন্ত বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও, তাঁকে এক ফোঁটা জলও দেননি পানুয়া। কয়েক ঘন্টা পর ওই মাঠেই সুমন্তর নিথর দেহ পাওয়া যায়।

আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন কেওনঝড় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও, বাতাসের আর্দ্রতার কম থাকার কারণে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বলে অনুভূত হয়েছে। কটকের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাক্তার জয়ন্ত পান্ডা বলেছেন: ‘বৃদ্ধ বা কম বয়সীদের কিংবা যাদের ডায়াবেটিস বা রক্তচাপের মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। খুব গরমে যাদের ঘরে এয়ার কুলার বা ফ্যান নেই বা যাদের বাড়ির বাইরে কাজ করতে হয়, তাদের ক্ষেত্রেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কোনও ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাঁর অবিলম্বে চিকিত্সা করা প্রয়োজন।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ওড়িশায় সানস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। সুমন্তর মত্যুও হিটস্ট্রোকেই হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ঘাটাগাঁও থানার এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, পানুয়া নায়ককে আটক করা হয়েছে। পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে। অতিরিক্ত গরমেই যে সুমন্তর মৃত্যু হয়েছে, তা একবার নিশ্চিত হলেই পানুয়া নায়ককে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হবে। তবে, ছেলেকে হত্যা করার জন্য তাঁর কোনও অনুতাপ নেই বলেই দাবি করেছে পুলিশ।