সবকটি মেট্রো শহরেই হামলার ছক, হাওয়ালার মাধ্যমে আসছিল টাকা! জেরায় আরও স্পষ্ট হচ্ছে পাক-যোগ
Pakistan Based Terror Module Update: ধৃত জিশান কমর স্বীকার করে নিলেন, কেবল মুম্বই, দিল্লি নয়, দেশের সমস্ত মেট্রো শহরেই হামলার ছক ছিল তাদের। করাচিতে সে যখন জঙ্গি কার্যকলাপের প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিল, সেই সময়ই আড়াল থেকে প্রশিক্ষকদের এই পরিকল্পনা শুনে ফেলেছিল সে।
নয়া দিল্লি: আগেই জানা গিয়েছিল উৎসবের মরশুমে দেশজুড়ে যে হামলা চালানোর পরিকল্পনা কষছিল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা (Pakistan Supported Terrorist), তাদের পিছনে রয়েছে দাউদের ভাইয়ের হাত। এ বার জানা গেল, দেশের অর্থনীতির ভিতকেই নাড়িয়ে দিতে দোকান-পাট, ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল তাদের। তিন রাজ্য় থেকে ধৃত পাক জঙ্গি মডিউলের (Pak Terror Module) সদস্যদের জেরায় উঠে আসছে এমনই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবারই দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের (Delhi Police Special Cell) তৎপরতায় দিল্লি, রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশ থেকে মোট ছয়জনকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য দুজনের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ না থাকায়, তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি জঙ্গিদের লাগাতার জেরা করছে দিল্লি পুলিশ, আর তাতেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
প্রথমদিনের জেরাতেই অভিযুক্তরা স্বীকার করে নিয়েছিল, সামনের উৎসবের মরশুমেই দেশজুড়ে বড়সড় নাশকতার ছক কষা হয়েছিল। মূলত নবরাত্রি, রামলীলা, দিওয়ালিতেই মহারাষ্ট্র, দিল্লি, রাজস্থানের মতো রাজ্যে বিস্ফোরণের ছক কষা হচ্ছিল। এ বার ধৃত জিশান কমর স্বীকার করে নিলেন, কেবল মুম্বই, দিল্লি নয়, দেশের সমস্ত মেট্রো শহরেই হামলার ছক ছিল তাদের। করাচিতে সে যখন জঙ্গি কার্যকলাপের প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিল, সেই সময়ই আড়াল থেকে প্রশিক্ষকদের এই পরিকল্পনা শুনে ফেলেছিল সে।
পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই(ISI)-ও যে এই জঙ্গি হামলায় মদত দিচ্ছিল, তা ধৃতদের বয়ান থেকেই উঠে এসেছে। তারা জানিয়েছে, দেশে অর্থনৈতিক সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করছিল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। সূত্রের খবর, ধারাবাহিক বিস্ফোরণ করে ভারতের অর্থনীতিকে নড়িয়ে দেওয়ার ছক ছিল পাক গোয়েন্দা সংস্থার। জেরায় তেমনটাই জানিয়েছে ধৃত জঙ্গিরা।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ভারতের সুতির ব্যবসায় বড়সড় ধাক্কা দিতেই কাঁচামাল বহনকারী ট্রেন, গুদাম ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের। কোভিডের ধাক্কা সামলিয়ে উঠছে যখন ভারত, সেই সময়ে এই হামলা বড় ধাক্কা দিতে পারত দেশের অর্থনীতিতে।
স্পেশাল সেলের আধিকারিক নীরজ ঠাকুর আগেই জানিয়েছিলেন, সীমান্তের ওপার থেকেই এই হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল এবং গোটা বিষয়ের উপর কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছিল। মোট দুটি দল দেশে নাশকতার ছক কষছিল, এদের মধ্যে একটি দলের পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন দাউদ ইব্রাহিম(Dawood Ibrahim)-র ভাই আনিস ইব্রাহিম। ধৃত জঙ্গি জান মহম্মদের সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের ভাই আনিস ইব্রাহিম ও আইএসআই সংগঠনের সরাসরি যোগ রয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দা সূত্রে।
হামলা চালানোর জন্য যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা হাওয়ালার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছিল বলেও জানা গিয়েছে। ধৃতদের মধ্যে ইব্রাহিম নামক এক ব্যক্তি রয়েছে, যার প্রধান কাজই ছিল জঙ্গি হামলার জন্য তহবিল জোগান দেওয়া। হাওয়ালার মাধ্যমে সেই টাকা জোগাড় করা হচ্ছিল। লালা নামক অপর ধৃত আদতে একজন আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী হিসাবে কাজ করত। লালাই উত্তর প্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে বোমা বিস্ফোরণ করতে চেয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।