Parliament Winter Session: চলতি মাসের শেষেই শীতকালীন অধিবেশন, কী কী ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণের ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিরোধীরা?
Opposition's Plan on Winter Session: সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের দিনক্ষণ জানার পরই কংগ্রেসের তরফে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সোমবারই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) জানান, এবারের অধিবেশনেও পেগাসাস ইস্যু নিয়ে সরব হবেন তারা।
নয়া দিল্লি: করোনার থাবায় বাতিল করতে হয়েছিল গতবারের শীতকালীন অধিবেশন (Winter Session of Parliament)। তবে এবার সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবং দেশের একটি বড় অংশের মানুষই করোনা টিকা পাওয়ায়, এ বার সংসদে শীতকালীন অধিবেশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবারই সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রকের ক্যাবিনেট কমিটির (Cabinet Committee on Parliament Affairs) তরফে জানানো হয় আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে শীতকালীন অধিবেশন। আগামী ২৩ ডিসেম্বর অবধি এই অধিবেশন চলবে বলে জানা গিয়েছে।
দেশ এখনও করোনামুক্ত না হওয়ায় সংসদের সকল কর্মী ও সাংসদদের যাবতীয় করোনাবিধি অনুসরণ করেই অধিবেশনে যোগ দিতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)-র নেতৃত্বেই অধিবেশন নিয়ে বৈঠকে বসে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রকের ক্যাবিনেট মন্ত্রক। সেই বৈঠকেই স্থির করা হয় ২৯ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর অবধি শীতকালীন অধিবেশনের আয়োজন করা হবে।
আগামী বছরই উত্তর প্রদেশ, পঞ্জাব সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election 2022) রয়েছে। ঠিক তার আগেই এই অধিবেশন শাসক ও বিরোধী-দুই দলের কাছেই অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। ইতিমধ্যেই বিরোধী দলগুলি কী কী বিষয়ে আলোচনার দাবি জানাবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে। সূত্রের খবর, বিরোধীদের আলোচনার মুখ্য বিষয়গুলির মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, ভোজ্য তেলের দাম, কাশ্মীরে সাধারণ নাগরিকদের উপরে জঙ্গি হামলা, লখিমপুরে কৃষক মৃত্যু রয়েছে।
চলতি বছরের বাদল অধিবেশনেও বিরোধীরা পেগাসাস ইস্যু (Pegasus Spyware Issue)-তে সরব হয়েছিল। গোটা অধিবেশন জুড়েই তারা সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের উপর বেআইনিভাবে নজরদারি করার অভিযোগ আনে। এছাড়াও কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতেও হই-হট্টগোল করেন বিরোধীরা। বিরোধীদের বিক্ষোভ ও চরম বিশৃঙ্খলার কারণে নির্ধারিত দিনের দুদিন আগেই অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়া হয়। গুরুত্বপূর্ণ একাধিক বিষয় নিয়ে কেন্দ্রের তরফে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, বিরোধীদের হই-হট্টগোলের কারণে তা করা সম্ভব হয়নি।
সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের দিনক্ষণ জানার পরই কংগ্রেসের তরফে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সোমবারই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) জানান, এবারের অধিবেশনেও পেগাসাস ইস্যু নিয়ে সরব হবেন তারা। সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় তিনি খুশিও প্রকাশ করেন। এছাড়াও তারা কৃষি আইন প্রত্যাহার, পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, লখিমপুরে আন্দোলনকারী কৃষকদের গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সাধারণ মানুষের স্বার্থে আলোচনার জন্য তুলে ধরবেন বলে জানান।
অন্যদিকে, অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM), যা সংক্ষেপে মিম বলে পরিচিত, তার প্রধান আসাউদ্দিন ওয়াইসিও জানান, তারা ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রকে আলোচনার প্রস্তাব দেবেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “দেশের সীমান্ত সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সীমান্তে চিনের অবস্থান, দখলদারী নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কিছুই জানানো হচ্ছে না। আমরা চাই শীতকালীন অধিবেশনে এই বিষয়ে আলোচনা ও বিতর্কের সুযোগ দেওয়া হোক।”
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বিপুল ভোটে পরাজিত করার পর জাতীয় রাজনীতিতেও নিজেদের জায়গা পাকা করে নিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই রাজ্যের গণ্ডি পার করে তারা ত্রিপুরা ও গোয়াতেও পৌঁছে গিয়েছে। সূত্রের খবর, এবারের শীতকালীন অধিবেশনে তৃণমূলের তরফেও পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব ও অসমে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ক্ষমতা বাড়ানোর বিরোধিতা করা হবে। এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই পঞ্জাব কংগ্রেসও সরব হয়েছে। তবে বাদল অধিবেশনের পরই সাম্প্রতিক সময়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের সম্পর্ক যে দিকে মোড় নিয়েছে, তাতে দুই বিরোধী শিবির আবার একজোট হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।