১৩ জানুয়ারি বারাণসীতে নদী বক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম বিলাসতরী, 'এমভি গঙ্গা বিলাসে'র যাত্রা শুরু করবেন। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহন ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেছেন, এই বিলাসতরীতে ভ্রমণ তাঁর মতে নদীপথে ভারতের নব যুগের সূচনা করবে। জেনে নেওয়া যাক এই প্রমোদতরী সম্পর্কে বিভিন্ন বৈশিষ্ট।
বিলাসবহুল ক্রুজটি ভারত ও বাংলাদেশের ৫টি রাজ্য জুড়ে ২৭টি নদী প্রণালীতে ৩,২০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দেবে। প্রথম যাত্রায় এমভি গঙ্গা বিলাসে সুইজারল্যান্ডের ৩২ জন পর্যটক বারাণসী থেকে ডিব্রুগড়ে যাত্রা করবেন।
যাত্রা পথের ৫১ দিনে, ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থান, জাতীয় উদ্যান, নদীর ঘাট, এবং বিহারের পটনা, ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, বাংলাদেশের ঢাকা এবং অসমের গুয়াহাটি-সহ মোট ৫০টি পর্যটনস্থল ঘুরিয়ে দেখানো হবে।
এমভি গঙ্গা বিলাস প্রমোদতরীটির দৈর্ঘ্য ৬২ মিটার, প্রস্থ ১২ মিটার। পর্যটকদের জন্য এই প্রমোদতরীতে তিনটি ডেক রয়েছে। সব মিলিয়ে এই প্রমোদতরীতে ৩৬ জন পর্যটকের থাকার জন্য মোট ১৮টি স্যুট থাকছে।
প্রমোদতরীটিতে একটি জমকালো রেস্তোরাঁ, স্পা এবং সানডেক থাকছে। মেইন ডেকে ৪০-আসনের রেস্তোরাঁয় কন্টিনেন্টাল এবং ভারতীয় খাদ্যপদ পরিবেশন করা হচ্ছে। আপার ডেকে খোলা ছাদের নিচে চেয়ার এবং কফি টেবিল সহ একটি বার রয়েছে।
গঙ্গা বিলাসের স্যুটগুলিতে ঐতিহ্যবাহী এবং সমসাময়িক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। স্যুটগুলিতে থাকছে শাওয়ার-সহ বাথরুম, কনভার্টেবল বিছানা, ফ্রেঞ্চ ব্যালকনি, এলইডি টিভি, লকার, স্মোক অ্যালার্ম, লাইফ ভেস্ট এবং স্প্রিংকলারের মতো বিভিন্ন সুবিধা।
ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে ভারতীয় ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হবে প্রমোদতরী যাত্রীদের সামনে। এমভি গঙ্গা বিলাসের ভ্রমণসূচিতে বারাণসীর বিখ্যাত 'গঙ্গা আরতি' দেখাও রয়েছে।
এমভি গঙ্গা বিলাসে প্রতিদিন একেক জনের টিকিটের মূল্য ২৪,৬৯২ টাকা। ভারতীয় এবং বিদেশিদের টিকিটের মূল্যে কোনও ফারাক নেই। যাত্রাপথের মোট ৫১ দিনের সম্মিলিত ভাড়া ১২.৫৯ লক্ষ টাকা।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সারনাথ, প্রমোদতরী এই জায়গাতে দাঁড়াবে। এছাড়া, তন্ত্রসাধকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মায়ং এবং অসমের বৃহত্তম নদী দ্বীপ তথা বৈষ্ণব সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান মাজুলিতেও যেতে পারবেন ক্রুজের যাত্রীরা। পাশাপাশি আধ্যাত্মিকতায় উৎসাহী যাত্রীরা বিহারের যোগ অনুশীলন কেন্দ্র এবং বিক্রমশিলা বিশ্ববিদ্যালয়ও পরিদর্শন করার সুযোগ পাবেন।
প্রমোদতরীটি বঙ্গোপসাগরের ব-দ্বীপ এলাকার সুন্দরবনের মধ্য দিয়েও যাবে। ভাগ্যে থাকলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পাবেন যাত্রীরা। পাশাপাশি সেখানকার জীববৈচিত্র্যের অভিজ্ঞতা পাবেন তিনি। সেইসঙ্গে অসমে একশৃঙ্গ গন্ডারের জন্য বিখ্যাত কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানেও ভ্রমণ করতে পারবেন তাঁরা।