India’s Development: অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন সংস্কার, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা…

Electoral Reforms: প্রথমত গণতন্ত্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ বিচার ব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র, আইনসভায় কমবয়সী তরুণ তরুণীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উন্নতির গতি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে ফারাক রাখা চলবে না।

India's Development: অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন সংস্কার, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা...
গ্রাফিক্স: টিভি৯ বাংলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 21, 2022 | 1:09 PM

নয়া দিল্লি: কামাল আতাতুর্ক যদি স্ট্যাটাস-কোয়াইস্টদের কথা শুনতেন তবে হয়তো আজ তুরস্ক আজ তৃতীয় বিশ্বের দেশে পরিণত হত। যদি লি কুয়া ইউ প্রথাগত চিন্তাধারার বাইরে না বেরিয়ে আসতে পারতে তবে হয়তো সিঙ্গাপুর আজ বিশ্বে প্রথমসারিতে থাকত না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। আজ থেকে ২০-২৫ বছর পর ভারতের শহরগুলি কেমন হবে তা বর্তমানে সিঙ্গাপুর বা দক্ষিণ কোরিয়ার শহর গুলিকে দেখে বোঝা সম্ভব। গ্রামীণ ভারতে উন্নতিতে আরও ২০ থেকে ২৫ বছর সময় লাগবে। দ্রুত আমাদের সেখানে পৌঁছতে লাগবে। ২০৪৫ সালে সমাজে প্রযুক্তির সবথেকে বেশি ভূমিকা থাকবে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডিজিটাল ইনফরমেশন শেয়ারিং অথবা থ্রি-ডি সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে। আমরা সায়েন্স ফিকশন ছবিতে যেমন দেখি, হয়তো সেইরকমই বাস্তবে হবে। উন্নয়নের নিরিখে ১৯৫০ সালে পৃথিবীর গতি ছিল ১০০ কিলোমিটার/প্রতি ঘণ্টা, ২০০০ সালে তা হয়তো ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০৫০ সালে তা হয়তো আরও বৃদ্ধি পাবে। এমনকি যুদ্ধও হয়তো যুদ্ধবিমান বা ট্যাঙ্ক দিয়ে নয় বুদ্ধি দিয়েই লড়া হবে। এর জন্য রাজনীতি, আমলাতন্ত্র, বিচারব্যবস্থা অথবা ব্যবসাকে অনেক সুসজ্জিত হতে হবে। এখনই শুরুর সময়।

প্রথমত গণতন্ত্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ বিচার ব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র, আইনসভায় কমবয়সী তরুণ তরুণীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উন্নতির গতি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে ফারাক রাখা চলবে না। কারণ আইনসভা নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিচার ব্যবস্থা সেই আইন বাস্তবায়িত হতে সাহায্য করে এবং আমলারা এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তরুণ তরুণীদের মধ্যে উদ্যম ও প্রাণশক্তি অনেক বেশি তাই তা দেশের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বর্তমানে যুবসমাজের হাতে দেশের গুরু দায়িত্ব তুলে দেওয়া উচিৎ। সেই কারণে লালকৃষ্ণ আডবাণীকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে তাঁকে নীতি নির্ধারণে ভাবনা চিন্তা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অগ্রগতির জন্য আরও বেশি যেটা প্রয়োজন তা হল নির্বাচনী সংস্কার। আমরা অশিক্ষিত বা অর্ধ-শিক্ষিত, অপরাধীদের দীর্ঘদিন সংসদীয় প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করতে পারিনা। কারণ এরাই পরবর্তীকালে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে নীতি নির্ধারণের গুরুদায়িত্ব পালন করেন। যে ব্যক্তির শিক্ষাই অসম্পূর্ণ তিনি কখনই মানুষের জন্য উন্নয়নের সঠিক কাজ করতে পারেন না। এই ধরনের মন্ত্রীরাই উচ্চশিক্ষিত আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করে। আর এখানেই দেশ অনেকটা পিছিয়ে যায়।

বিচার ব্যবস্থাতেও সংস্কার প্রয়োজন। বর্তমানে বিচার ব্যবস্থা অত্যন্ত ধীরগতিতে চলে। কোনও একটি মামলার বিচার কোর্টে চলাকালীন বিচার পেতে বছরের পর বছর সময় চলে যায়। বিচার ব্যবস্থার এই ধীরগতির কারণে আইনজ্ঞরা ফায়দা নিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করেন। দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে বাড়িয়ে তোলে। দুর্বল আইনি ব্যবস্থার কারণে জমি জট আরও বেশি। সেই কারণে দেশের শিল্পপতিরা বিদেশে বিনিয়োগ করছেন। দেশে দুর্নীতির কারণে অনেকক্ষেত্রেই শিল্পবান্ধব পরিস্থিতি নেই। সেই কারণেও বিনিয়োগ কমছে, ফলে বৃদ্ধিও থমকে আছে। এই দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। এর পাশাপাশি আমলাতন্ত্রের ওপরও বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন। আমলাদের উন্নতিও এবং তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির দিকেও নজর দিতে হবে।

(লেখক অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার প্রবীর কুমার বসু)