‘লিপস্টিক এবং বব-কাট…’, মহিলা বিল নিয়ে বিতর্ক বাড়ালেন RJD নেতা

Abdul Bari Siddiqui: বিহারের মুজাফফরপুরে এক অনুষ্ঠানে, এই বিল নিয়ে তিনি বলেছেন, মহিলা সংরক্ষণ বিলের নামে অগ্রগতি ঘটবে লিপস্টিক পরা এবং 'বব-কাট' স্টাইলে চুল কাটা মহিলাদের। তাঁর মতে, এই বিলের সুবিধা পাবেন না অনগ্রসর শ্রেণির মহিলারা। বিজেপি নেতারা তো বটেই, ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির নেতারাও এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।

'লিপস্টিক এবং বব-কাট...', মহিলা বিল নিয়ে বিতর্ক বাড়ালেন RJD নেতা
আব্দুল বারি সিদ্দিকিImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 30, 2023 | 5:47 PM

পটনা: সংসদের বিশেষ অধিবেশনে পাশ হয়েছে নারিশক্তি বন্দন অধিনিয়ম। সহজ কথায় মহিলা সংরক্ষণ বিল। কিন্তু, তারপরও এই বিল নিয়ে বিতর্ক থামছে না। এই বিলে তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণকে অন্তর্ভুক্ত না করায়, লোকসভায় এই বিলকে অসম্পূর্ণ বলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এবার, এই বিলের বিষয়ে এমন এক মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের বিশিষ্ট নেতা আব্দুল বারি সিদ্দিকি, যা অনেকের মতেই আপত্তিকর। বিহারের মুজাফফরপুরে এক অনুষ্ঠানে, এই বিল নিয়ে তিনি বলেছেন, মহিলা সংরক্ষণ বিলের নামে অগ্রগতি ঘটবে লিপস্টিক পরা এবং ‘বব-কাট’ স্টাইলে চুল কাটা মহিলাদের। তাঁর মতে, এই বিলের সুবিধা পাবেন না অনগ্রসর শ্রেণির মহিলারা।

আব্দুল বারি সিদ্দিকি বলেন, “মহিলা সংরক্ষণের নামে তারাই লিপস্টিক পরিহিতা এবং বব-কাট হেয়ারস্টাইলের মহিলারাই সংসদে প্রবেশ করবেন। সরকারের উচিত এর পরিবর্তে অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।” পরে অবশ্য আরজেডি নেতা দাবি করেন, গ্রামীণ জনতা যাতে সহজে তাঁর কথা বুঝতে পারেন, তার জন্যই তিনি লিপস্টিক এবং বব-কাটের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। আসলে তিনি অগ্রসর শ্রেণির সুবিধাপ্রাপ্ত মহিলাদের বোঝাতে চেয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, কাউকে আঘাত করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না তাঁর। তাঁর এই সাফাইয়ে বিতর্ক অবশ্য থামছে না। সিদ্দিকি বলেছেন, “ওই সমাবেশে শয়ে শয়ে গ্রামীণ মহিলা ছিলেন। আমি গ্রামীণ মহিলাদের তাদের নিজেদের ভাষায় বোঝানোর জন্যই এই ভাষা ব্যবহার করেছি। এতে কেউ আঘাত পেলে আমি তার জন্য দুঃখিত। এটা অত্যন্ত অনগ্রসর শ্রেণির এক সমাবেশ ছিল। আরজেডি শুরু থেকেই মহিলা সংরক্ষণের পক্ষে আছে।”

তবে, তাতে বিতর্ক থামছে না। বিজেপি নেতারা এক যোগে তাঁর মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, “ভারতের মহিলা, বোন এবং মেয়েদের বিরুদ্ধে তিনি যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন তা অত্যন্ত লজ্জাজনক, অসম্মানজনক এবং নিন্দনীয়। এটা মর্মান্তিক। এই কী ভাষা? এর আসল উদ্দেশ্য কী? আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন কি লোকসভা ও বিধানসভায় ওবিসিদের ক্ষমতায়নের জন্য কোনও চেষ্টা করেছিলেন?” বিজেপির মহিলা সাংসদ রীতা বহুগুনা যোশী বলেছেন, “এটা লজ্জাজনক। এর জন্য তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারও পোশাক বা ব্যক্তিত্ব নিয়ে এমন মন্তব্য করা নিন্দনীয়।” আরেক বিজেপি সাংসদ সুনীতা দুগ্গাল বলেছেন, “এটা তাদের সংকীর্ণ মানসিকতার প্রকাশ। মহিলারা প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছাপ ফেলছেন। এই ধরনের বিবৃতি দেওয়া তাদের অভদ্র মানসিকতার পরিচয়। তারা মনে করে, মহিলারা শুধু গৃহস্থালির কাজ করবে।”

আব্দুল বারি সিদ্দিকির মন্তব্যের নিন্দা করেছেন ইন্ডিয়া জোটের নেতারাও। জেডি(ইউ) বিধায়ক খালিদ আনোয়ার বলেছেন, “আব্দুল বারি সিদ্দিকি আরজেডির একজন বিশিষ্ট নেতা। তিনি এমন বিবৃতি দিয়ে থাকলে, জেডিইউ তা কখনই সমর্থন করবে না। মহিলারা তারা ইচ্ছা পরতে পারেন। এটা তাঁদের অধিকার। তাঁরা কী পরবেন না পরবেন, এই বিষয়ে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।” শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) দলের সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী বলেছেন, “সংসদে আরজেডি মহিলা সংরক্ষণ বিলকে সমর্থন করেছে। শুধু আরজেডি নয়, এমন আরও বেশ কয়েকটি দল যারা ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ চেয়েছে, তারা এই বিলকে সমর্থন করেছে। কাজেই, তিনি এখন যা বলছেন তা প্রাসঙ্গিক নয়। প্রত্যেক মহিলা যাঁরা ভোট দেন, তাঁদের সংসদের অংশ হওয়ার অধিকার আছে। এই অধিকার দীর্ঘ বছর ধরে অস্বীকার করা হয়েছে। মহিলা সংরক্ষণ বিল এই অধিকার প্রদান করেছে। দুর্ভাগ্যবশত, বিলটি কবে বাস্তবায়িত হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।”