Delhi IAS Officer: সরকারি বাবুর কুকুর হাঁটবে, স্টেডিয়ামে বন্ধ খেলাধুলো! বিতর্কের মুখে কী ব্যবস্থা নিল সরকার
Delhi IAS officer: দিল্লির ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে এক আইএএস অফিসারের কুকুর হাঁটানোর জন্য বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে খেলাধুলো। এই নিয়ে বিতর্কের জেরে দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার সমস্ত স্পোর্টস ফেসিলিটিগুলিকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশ দিল।
নয়া দিল্লি: উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক তাঁর পোষ্যকে নিয়ে ঘুরতে আসবেন। তাই, সময়ের আগেই দিল্লির ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে খেলাধুলো। বৃহস্পতিবার, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্রের এক প্রতিবেদনে এই কথা প্রকাশ হতেই হইচই পড়ে যায় রাজধানীতে। নেট দুনিয়াতেও ওই আইএএস অফিসারকে নিয়ে নিন্দার ঝড় হয়ে যায়। বিতর্কের জেরে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করল দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। রাজ্য সরকার পরিচালিত সমস্ত স্পোর্টস ফেসিলিটিগুলিকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে যে অ্যথলেটরা অনুশীলন করেন, তাঁরা এবং তাঁদের কোচরা এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, আগে তারা রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অনুশীলন করতেন। কিন্তু, গত কয়েক মাস ধরে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। সন্ধ্যা ৭টাতেই তাঁদেরকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, ওই সময়ের মিনিট ত্রিশেক পরই, স্টেডিয়ামে কুকুর ঘোরাতে আসেন দিল্লির রাজস্ব বিভাগের দায়িত্বে থাকা মুখ্য সচিব সঞ্জীব খিরওয়ার। এর ফলে তাঁদের ট্রেনিং প্রোগ্রাম ব্যহত হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেন সঞ্জীব খিরওয়ার। তাঁর দাবি, মাঝে মাঝে তিনি ওই স্টেডিয়ামে কুকুরকে ঘোরাতে নিয়ে যান। তবে, কোনও ক্রীড়াবিদের অনুশীলনে বাধা দেওয়ার কথা মানেননি তিনি। তবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ধ্যা সাড়ে ছটা থেকেই নিরাপত্তা কর্মীরা অনুশীলনরত অ্য়াথলেটদের সময় সম্পর্কে সতর্ক করা শুরু করেন। সাতটার মধ্য তাদের সকলকে বের করে দেওয়া হয়।
স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা সরকারি আধিকারিক অজিত চৌধুরিও এই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেছেন, অ্যাথলেটদের বিকালে অনুশীলন করার সরকারি সময় চারটে থেকে সাতটা। তবে, গরমের জন্য অ্যাথলেট এবং কোচদের সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত থাকতে দেওয়া হয় স্টেডিয়ামে। তবে, এই সময়সীমা সম্পর্কে তিনি কোনও সরকারি নথি দেখাতে পারেননি। অজিত চৌধুরির তাঁর আরও দাবি, সব সরকারি অফিসের মতোই ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামের কার্যালয়ও ৭টাতেই বন্ধ হয়ে যায়, তিনিও বেরিয়ে যান। তারপর আর কেউ স্টেডিয়ামে আসেন কিনা, তা তাঁর জানা নেই।
এই নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে দিল্লির আপ সরকার। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনটির ছবি টুইট করে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া বলেন, ‘এই সংবাদ প্রতিবেদন আমাদের নজরে এনেছে যে কিছু স্পোর্টস ফেসিলিটি তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে গভীর রাত পর্যন্ত অনুশীলনে ইচ্ছুক ক্রীড়াবিদদের অসুবিধা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল নির্দেশ দিয়েছেন, দিল্লি সরকারের অধীনে থাকা সমস্ত ক্রীড়া সুবিধা কেন্দ্রগুলি ক্রীড়াবিদদের জন্য রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।’
অন্যদিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সঞ্জীব খিরওয়ারের ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কৌশল কিশোর। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেছেন, ‘একজন আইএএস অফিসার তার কুকুরকে হাঁটাতে চান বলে ক্রীড়াবিদদের স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণ খালি করতে হচ্ছে, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। ওই অফিসারের ক্ষমা চাওয়া উচিত। এটা কর্তৃত্বের অপব্যবহার।’