Sedition Law: কী হবে ঝুলে থাকা মামলাগুলির, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে জবাব চাইল শীর্ষ আদালত

Sedition Law: মঙ্গলবার রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইন পুনর্বিবেচনার কাজ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত, এই আইনের অধীনে হওয়া মামলাগুলি স্থগিত রাখার বিষয়ে কেন্দ্রের স্পষ্ট নির্দেশ চাইল সুপ্রিম কোর্ট।

Sedition Law: কী হবে ঝুলে থাকা মামলাগুলির, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে জবাব চাইল শীর্ষ আদালত
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 10, 2022 | 6:33 PM

নয়া দিল্লি: সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইন পুনর্বিবেচনা করার কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। আজ মঙ্গলবার, শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে সেই বিষয়ে সময় দেওয়ার ইঙ্গিত দিল। তবে, সেই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, এই আইনের অধীনে হওয়া মামলাগুলি আপাতত স্থগিত রাখার বিষয়ে কেন্দ্রের স্পষ্ট নির্দেশ চাইল আদালত। প্রধান বিচারপতি এনভি রামানার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের বেঞ্চ এর জন্য কেন্দ্রকে বুধবার অবধি সময় দিয়েছে।

এদিন, আদালত কেন্দ্রের কাছে এই আইন পুনর্বিবেচনার জন্য কত সময় লাগবে, তা জানতে চায়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা কোনও নির্দিষ্ট সময় জানাতে পারেননি। তবে এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে, জানিয়েছেন তিনি। সব দিক পুনর্বিবেচনা করতে বেশ কিছুটা যে সময় লাগবে, তা স্পষ্ট করে দেন তিনি।

কেন্দ্রকে এই আইন পুনর্বিবেচনার জন্য চাহিদা মতো সময় দেওয়া হবে কিনা, সেই বিষয়ে আদালত এদিন স্পষ্ট কিছু বলেনি। তবে, প্রধান বিচারপতি রামানার বক্তব্য থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, আদালত হয়তো কেন্দ্রকে সেই সময় দেবে। তবে, প্রধান বিচারপতি জানান, এই আইনের ধারায় যেসব মামলার শুনানির কাজ ঝুলে রয়েছে, সেই মামলাগুলির ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মহারাষ্ট্রে হনুমান চালিশা পাঠ নিয়ে বিতর্কের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এই মামলায় দুই বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদের বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরপরই বিচারপতি সুর্য কান্ত বলেন, কেন্দ্রের উচিত, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুনর্বিবেচনার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যগুলিকে এই আইনের ধারায় হওয়া সব মামলার কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া।

সম্প্রতি একের পর এক রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা নমিয়ে বিতর্ক হয়েছে। এরপরই শীর্ষ আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ১২৪-এর ক ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধীক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তবে, এক সপ্তাহ আগেই মোদী সরকার আদালতে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল এই আইন পুনর্বিবেচনা করার কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের। সোমবার অবশ্য এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পুরোপুরি পরিবর্তন করে মোদী সরকার। জানানো হয়, এই আইন ফের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে আইনটির প্রাসঙ্গিকতা যাচাই করানো হবে।

চলতি বছরে ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সারা বছর ধরেই ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালন করা হচ্ছে। এই সময়কালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আইন ও ধারার হ্যাংওভার থেকে মুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সেই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ধারাটিও ফের খতিয়ে দেখা এবং পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে, সোমবার শীর্ষ আদালতে জানিয়েছিল কেন্দ্র। সেইসঙ্গে, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে করা মামলাটিও আপাতত স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে হলফনামা পেশ করা হয়েছিল।

বস্তুত, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে হওয়া মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হও.য়ার হার খুবই কম। এনসিআরবি-র তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ধারার অধীনে ৩৫৬টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ২০২০ সালে ৭৩টি, ২০১৯-এ ৯৩টি, ২০১৮ সালে ৭০টি, ২০১৭ সালে ৫১টি, ২০১৬ সালে ৩৫টি এবং ২০১৫ সালে ৩০টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই সময়কালে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে আটক করা হয়েছে প্রায় ৫৪৮ জনকে। ২০১৭ সালে এই ধারায় সবথেকে বেশি মামলা দায়ের হয়েছিল, ২২৮টি। এর পাশাপাশি ২০২০ সালে মোট ৪৪টি, ২০১৯ সালে ৯৯টি, ২০১৮ সালে ৫৬টি, ২০১৬ সালে ৪৮টি এবং ২০১৫ সালে ৭৩টি মামলা হয়েছিল। তবে, গত ৬ বছরে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে মাত্র ১২ জন। আসলে, এই আইনের ধারায় হওয়া অধিকাংশ অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। ২০২০ সালে অভিযোগের ৩৩.৩ শতাংশ প্রমাণিত হয়েছিল। ২০১৯-এ সংখ্যাটা ছিল মাত্র ৩.৩ শতাংশ, ২০১৮-তে ১৫.৪ শতাংশ, ২০১৭-তে ১৬.৭ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে ৩৩.৩ শতাংশ।