সিস্টার অভয়া হত্যাকাণ্ডে ২৮ বছর পর দোষী সাব্যস্ত ফাদার টমাস ও সিস্টার সেফি
১৯৯২ সালে চার্চের ফাদার ও সিস্টারকে ঘনিষ্ট অবস্থায় দেখে ফেলার অপরাধে খুন হতে হয় ২১ বছর বয়সী সিস্টার অভয়াকে।
তিরুবনন্তপুরম: ২৮ বছর পর মিলল বিচার। সিস্টার অভয়া হত্যাকাণ্ড (Sister Abhaya Murder Case) মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করল কেরলের তিরুবনন্তপুরমের বিশেষ সিবিআই আদালত (Special CBI Court)। আগামীকাল দোষী সাব্যস্ত ফাদার টমাস ও সিস্টার সেফির সাজা ঘোষণা করবে আদালত।
কী হয়েছিল ২৮ বছর আগে? ১৯৯২ সালে চার্চের ফাদার ও সিস্টারকে ঘনিষ্ট অবস্থায় দেখে ফেলার অপরাধে খুন হতে হয় ২১ বছর বয়সী সিস্টার অভয়াকে। অভিযুক্ত ফাদার টমাস কোট্টায়ামের (Kottayam) বিসিএম কলেজে (BCM College) সাইকোলজি পড়াতেন, তাঁর ছাত্রী ছিলেন সিস্টার অভয়াও। সেই সময় তিনি বিশপের সচিবও ছিলেন, পরে কোট্টায়ামের ক্যাথলিক ডিওসেসের আচার্য (Chancellor of the Catholic Diocese ) পদে বসেন। খুনের ঘটনায় জড়িত সিস্টার সেফির সঙ্গেই একই হস্টেলে থাকতেন সিস্টার অভয়া। সেফি হস্টেলের কার্যনির্বাহী ইন-চার্জও ছিলেন।
১৯৯২ সালের ২৭ মার্চ ভোর ৪টে ১৫ নাগাদ হস্টেল থেকে রান্নাঘরে যাওয়ার সময় সিস্টার সেফির সঙ্গে ফাদার টমাস ও অন্য এক ফাদার জোসে পুত্রিক্যাইলকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পরই সিস্টার সেফি ভারী কোনও বস্তু দিয়ে অভয়ার মাথায় আঘাত করে। তারপর তাঁর মৃতদেহ কুয়োয় ফেলে দেওয়া হয়।
মামলার শুরুতে পুলিস ও ক্রাইম ব্রাঞ্চ (Crime Branch) আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করলেও প্রতিবাদের মুখে পরে সিবিআই (CBI)-র হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়। দুবছর আগে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত ফাদার পুত্রিক্যাইলকে রেহাই দেয় সিবিআই আদালত। তবে ফাদার টমাস ও সেফির রেহাইয়ের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়।
বিগত বছরগুলিতে সিবিআই তিনবার তদন্তের চুড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিলেও আদালত তা বাতিল করে দেয় এবং আরও গভীরে তদন্তের নির্দেশ দেয়। আজ মামলার শুনানিতে আদালত ফাদার টমাস ও সিস্টার সেফিকে হত্যা ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। একইসঙ্গে ফাদার টমাসের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশের অভিযোগও রয়েছে।
সিস্টার অভয়া হত্যা মামলার সুবিচারের জন্য তৈরি প্যানেলের একমাত্র জীবিত সদস্য জোমেন পুটেনপুরাকল আদালতের রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,”সিস্টার অভয়া অবশেষে সুবিচার পেলেন। এবার তিনি শান্তি পাবেন। অর্থ ও ক্ষমতা থাকলেই যে বিচার ব্যবস্থাকে ভুল পথে চালিত করা যায় না, এটি তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।”
আরও পড়ুন: ব্রিটেন থেকে ফিরলেই করোনা পরীক্ষা! নয়া ‘স্ট্রেনের’ জন্য পৃথক আইসোলেশন